ভিসা নীতি ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের কন্স্যুলার কর্মকর্তা ঢাকায়

মানব জমিন

নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকা ব্যক্তিদের ভিসার আবেদন ৬ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির চেষ্টা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেই সঙ্গে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রক্রিয়া সহজতর করার বিষয়ে আন্তরিক ওয়াশিংটন। তবে অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথে প্রতিবন্ধকদের ভিসা না দেয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোনো শৈথিল্য প্রদর্শন হবে না।

বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপে এমনটাই আভাস দিয়েছেন ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলার সেকশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি রেনা বিটার। মে মাসে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার পর স্টেট ডিপার্টমেন্টের কনস্যুলার উইংয়ের উচ্চ পদস্থ কোনো কর্মকর্তার এটাই প্রথম ঢাকা সফর। শনিবার রাতে বাংলাদেশ সফরে আসা স্টেট ডিপার্টমেন্টের ওই কর্মকর্তা ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। রোববার দিনের শুরুতে তিনি দূতাবাসে ভিসা তথা কনস্যুলার সেকশনে কর্মরতদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বিকালে যান সেগুনবাগিচায়।

জাতিসংঘ অধিবেশন এবং অন্য কর্মসূচিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং সিনিয়র সচিব দেশের বাইরে থাকায় ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব (অব.) রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশেদ আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। ওই বৈঠকে ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস্‌ এবং মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব গণমাধ্যমকে ব্রিফ করেন। বলেন, নতুন ভিসানীতি নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি।

তবে ওই ভিসা নীতি ঘোষণার পর সাধারণ আবেদনকারীদের মধ্যে যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজমান তা তাদের অবহিত করা হয়েছে। এটাকে রুটিন সফর আখ্যা দিয়ে সচিব বলেন, কনস্যুলার কাজ সহজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

বিশেষ করে কোভিডের পর ভিসা আবেদন নিষ্পত্তিতে যে দীর্ঘসূত্রতা ছিল তা নিরসন বিষয়ে কথা হয়েছে। সাধারণ আবেদনকারীর ভিসার আবেদন ৬ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। এ সময় এক সাংবাদিক জানতে চান নতুন ভিসা নীতি (ধারা ৩ সি) কার্যকর করার বিষয়ে বাংলাদেশ কোনো উদ্বেগ জানিয়েছে কিনা? জবাবে সচিব বলেন, না, এটা একান্তই যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপার। ৩ সি কীভাবে কার ওপর কার্যকর তা নিয়ে বাংলাদেশ জানতে চেয়েছে কিনা? এমন সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা তারা কীভাবে কার ওপর কার্যকর করবে তা তাদের সিদ্ধান্ত। সেটা জানার জন্য সাংবাদিকদের আগ্রহ থাকতে পারে, তারা কোনো আগ্রহ দেখাননি।

এদিকে ওই বৈঠকের পর মার্কিন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা গণমাধ্যমের মুখোমুখি না হলেও দূতাবাসের তরফে একটি টুইট বার্তা প্রচার করা হয়েছে। সচিত্র ওই বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রের স্টুডেন্ট ভিসার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি, আমেরিকান নাগরিকদের কনস্যুলার সহায়তা নিশ্চিত করা এবং ভিসা ইন্টারভিউ অপেক্ষার সময় কমানোর ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের যে প্রচেষ্টা তা নিয়ে কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্সের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি রেনা বিটার এবং ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব, রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলমের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। উল্লেখ্য, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি বাংলাদেশে থাকা মার্কিন নাগরিকদের সুরক্ষা এবং যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ ভ্রমণ ও অভিবাসনের সুবিধা বিষয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশ সফর করছেন বলে আগেই জানানো হয়েছে। পাকিস্তানের পর বাংলাদেশ সফর করছেন তিনি। ঢাকা থেকে ওয়াশিংটনে ফিরবেন তিনি।