রাশিয়া থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয় করার দায়ে ভারতের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে কি না, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেই সিদ্ধান্ত নেবেন। নিষেধাজ্ঞা আইনের মাধ্যমে আমেরিকান শত্রুদের মোকাবিলা সংক্রান্ত আইন সিএএটিএসএ’র অধীন ভারতকে শাস্তি দেওয়া হতে পারে।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আইনপ্রণেতাদের যুক্তরাষ্ট্রের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এমন তথ্য দিয়েছেন। ইরান, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে উল্লেখযোগ্য কোনো লেনদেন করা হলে নিজস্ব আইন সিএএটিএসএ’র মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। চীনকে মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ভারতও সেই নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে।
২০১৪ সালে ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে একীভূতকরণ ও ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের পর রাশিয়া থেকে বড় ধরনের কোনো প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয় করলে কঠোর এ আইনের মাধ্যমে দেশগুলোকে সাজা দেওয়া হচ্ছে।
ভারতের বিরুদ্ধে এমন কোনো নিষেধাজ্ঞা আসছে কিনা জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বলেন, ভারতকে নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় দেওয়া হবে, নাকি সাজা দেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবেন জো বাইডেন।
সিনেটের ‘নিয়ার ইস্ট, সাউথ এশিয়া, সেন্ট্রাল এশিয়া ও কাউন্টার-টেরোরিজম বিষয়ক উপকমিটির সদস্যদের কাছে তিনি এমন তথ্য দিয়েছেন। ডোনাল্ড লু বলেন, আমি আপনাদের নিশ্চিত করে বলতে পারি, সিএএটিএসএ আইন অনুসরণ করবে বাইডেন প্রশাসন। এই আইনের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া যখন কোনো দেশের ওপর আমরা আইন বাস্তবায়ন করতে যাব, তখন কংগ্রেসের সঙ্গেও এ নিয়ে আলোচনা করা হবে।
তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপ কিংবা ছাড় দেওয়ার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট কিংবা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত নিয়ে, দুর্ভাগ্যবশত, আমি আগাম বিচার করতে পারবো না। কিংবা ওই সিদ্ধান্ত ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন সংশ্লিষ্ট কি না, তাও বলতে পারব না।
আরও পড়ুন: জলপথে ভয়ংকর হামলার পরিকল্পনা রাশিয়ার
কিন্তু সিএএটিএসএ আইনের অধীন ভারতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনো সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত বাইডেন প্রশাসন নিইনি বলে জানান এই মার্কিন কর্মকর্তা।
তার মতে, বর্তমানে আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা অংশীদার দেশের একটি ভারত। এই অংশীদারত্ব এগিয়ে নেওয়াকে আমরা মূল্যায়ন করি। আমি আশা করছি, রাশিয়া যে চরম সমালোচনার মুখোমুখি, সেই অবস্থায় দেশটির সঙ্গে আরও দূরত্ব বজায় রাখার সময়টি এখন খুঁজে পাবে ভারত।
ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর রাশিয়ার ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ডোনাল্ড লু বলেন, এ কারণে রাশিয়ার কাছ থেকে এখন বড় অস্ত্র ব্যবস্থা ক্রয় করা যে কোনো দেশের জন্য কঠ্নি হয়ে পড়বে।
তিনি বলেন, আমরা গত কয়েক সপ্তাহে দেখতে পেয়েছি, ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে হেলিকপ্টার ও ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র ক্রয় বাতিল করে দিয়েছে। রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়ে বুধবার উত্থাপন করা জাতিসংঘের প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত ছিল ভারত। এতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির সমালোচনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট দলীয় আইনপ্রণেতারা।
জাতিসংঘের প্রস্তাবের পক্ষে ১৪১টি দেশ ভোট দিয়েছে। বিরোধিতা করছে পাঁচটি দেশ। ভারতসহ ৩৫টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল।