- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:৪৯, আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:১৭
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আজ সোমবার সকালে নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।
ইউক্রেন সঙ্কট, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এবং চলমান কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে এই সফরকে খুব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কেননা দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশ চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য বর্ধিত সহযোগিতা বাড়াতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইট সকাল ১০টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় ফ্লাইটটি নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। বিমানবন্দরে ভারতের রেল ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী দর্শনা বিক্রম জারদোশ ও ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
আগামীকাল ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যর্থনা জানানো হবে এবং রাষ্ট্রপতি ভবনে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।
একই দিন হায়দরাবাদ হাউসে মোদির সাথে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা এবং ওয়ান টু ওয়ান বৈঠক করার কথা রয়েছে।
হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যকার আলোচনায় নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিনিয়োগ, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সহযোগিতা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, মাদক চোরাচালান ও মানব পাচার রোধ-সংক্রান্ত বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পাবে।
দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পানি ব্যবস্থাপনা, রেলপথ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ও তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ে সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে।
পরে সেখানে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া মধ্যাহ্নভোজে শেখ হাসিনা যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।
একই দিনে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ার সাথে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করবেন শেখ হাসিনা।
এছাড়াও ৫ সেপ্টেম্বর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি পৃথকভাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করবেন। ৭ সেপ্টেম্বর ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়নমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি ও নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী তার সাথে পৃথকভাবে বৈঠক করবেন।
প্রধানমন্ত্রী সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দিল্লির নিজামুদ্দিন আউলিয়া দরগাহ, খাজা গরীব নেওয়াজ দরগাহ শরীফ এবং ৮ সেপ্টেম্বর রাজস্থানের আজমির (আজমির শরীফ দরগা) পরিদর্শন করবেন।
আগামী ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে হাসিনা বাংলাদেশ-ভারত বিজনেস ফোরামে যোগ দেবেন।
একই দিনে প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ ও গুরুতর আহত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ২০০ জন সদস্যের বংশধরদের বাংলাদেশ সরকারের একটি উদ্যোগ ‘মুজিব বৃত্তি’ প্রদান করবেন।
এর আগে কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হওয়ার আগে ২০১৯ সালে ভারত সফর করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
সফরে প্রধানমন্ত্রী একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন, যেখানে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন।
প্রতিনিধি দলের সদস্যদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, রেলমন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহেদ ফারুক রয়েছেন।
সূত্র : ইউএনবি