Site icon The Bangladesh Chronicle

ব্যাংক থেকে ২ লাখ কোটি টাকা নীট ঋণ নিয়েছে সরকার : অর্থমন্ত্রী

ব্যাংক থেকে ২ লাখ কোটি টাকা নীট ঋণ নিয়েছে সরকার : অর্থমন্ত্রী

ব্যাংক থেকে ২ লাখ কোটি টাকা নীট ঋণ নিয়েছে সরকার : অর্থমন্ত্রী – ছবি : নয়া দিগন্ত

বর্তমান সরকারের গত ১০ বছরে (২০০৯-২০১৯) বাংলাদেশ ব্যাংক ও তফসিলী ব্যাংক থেকে মোট ১৩ লাখ ২৭ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করেছে এবং ১১ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করেছে, অর্থাৎ এই সময়কালে মোট ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা নীট ঋণ গ্রহণ করেছে।

বৃহস্পতিবার সংসদকে এ তথ্য জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

সংসদে টেবিলে উপস্থাপিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে লিখিত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য খন্দকার মমতা হেনা লাভলী।

জাতীয় পার্টির মসিউর রহমান রাঙ্গার এক লিখিত জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ৭২টি দেশের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (এফআইইউ) সাথে সমঝোতা স্বাক্ষর করেছে।

তিনি জানান, বিএফআইইউ যেসব দেশের এফআইইউ’র সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে তাদের পাশাপাশি এগমন্ট গ্রুপের সদস্য এফআইইউসমূহের সাথে নিয়মিতভাবে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন সংক্রান্ত তথ্য বিনিময় করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বিএফআইইউ’র চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে প্রাপ্ত বা বিদেশী এফআইইউ কর্তৃক স্বপ্রণোদিতভাবে প্রেরিত তথ্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রমের জন্য নিয়মিতভাবে আইন-প্রয়োগকারী সংস্থায় পাঠানো হয়ে থাকে।

বিএনপির মো: হারুনুর রশীদের এক প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল জানান, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাজেটে বৈদেশিক ঋণ/আর্থিক সহায়তার লক্ষ্যমাত্রা ৮ হাজার ৪৪৭ মিলিয়ন ডলার সমতূল্য ৭১ হাজার ৮শ’ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের গত ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট বৈদেশিক ঋণ/আর্থিক সহায়তার পরিমাণ ২ হাজার ৭১৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমতূল্য ২৩ হাজার ২৩ কোটি টাকা।

গণফোরামের মোকাব্বির খানের এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বর্তমানে শেয়ার বাজারে কিছু তারল্য সঙ্কট থাকলেও ব্যাংকিং খাতে কোনো তারল্য সঙ্কট নেই। বর্তমান বিরাজমান তারল্য সঙ্কট কাটিয়ে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের সাথে গত জানুয়ারি তার কার্যালয়ে একটি সভা করেন। সরকার মনে করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য একটি গতিশীল ও শক্তিশালী পুঁজিবাজারের উপস্থিতি অপরিহার্য। তাই পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য যে ধরণের সাহায্য প্রয়োজন সরকার ধারাবাহিকভাবে তা করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।

মন্ত্রী জানান, ওই সভায় পুঁজিবাজারকে বিকশিত করা এবং বাজারে আস্থা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কতিপয় স্বল্প-মেয়াদী কর্মসূচির বিষয়ে সভার আলোচনা করা হয়। স্বল্প মেয়াদি বেশ কিছু বিষয় অচিরেই কিভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে তার উপর মতামত প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- মার্চেন্ট ব্যাংকার ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ সুবিধার বিষয়টি পর্যালোচনা করা; ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও পর্যায়ক্রমে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যাসমূহ সনাক্ত করে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

সরকারি দলের শহীদুজ্জামান সরকারের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বিগত ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, শুধু ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে সিঙ্গেল ডিজিট সুদহার কার্যকর করা হলে ব্যাংকগুলো উক্ত খাতে ঋণ/বিনিয়োগ ইচ্ছাকৃতভাবে হ্রাস করে অন্যান্য খাতে অধিক সুদহারে ঋণ/বিনিয়োগ প্রদানে আগ্রহী হতে পারে। যা দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করবে। তাই সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে ক্রেডিট কার্ড ব্যতিরেকে অন্যান্য সকল খাতে ঋণ/বিনিয়োগের সুদহার শতকরা ৯ ভাগ নির্ধারণ করে আগামী পহেলা এপ্রিল থেকে কার্যকর করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

Exit mobile version