প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২২, ২২: ৪২
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশবিষয়ক বাণিজ্যদূত রুশনারা আলী বলেছেন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাতে বাংলাদেশের বেশ সফলতা রয়েছে। তবে এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় খুবই জরুরি। ব্যবসা–বাণিজ্যে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিরসন করা গেলে স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ সফররত ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী এখানকার কয়েকজন ব্যবসায়ী নেতার সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) ঢাকার গুলশান সেন্টারে মঙ্গলবার এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে রুশনারা আলী বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনে কতটা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে, সেটি নিরূপণে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য। আমরা আশা করছি, সামনের দিনগুলোতে রপ্তানি আরও বৃদ্ধি পাবে।’ তিনি সেই দেশের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের জাহাজনির্মাণ, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, পাদুকা, হালকা প্রকৌশল, মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
ডিসিসিআই সভাপতি যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার ২০২৯ সালের পরও বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। এ ছাড়া তিনি যুক্তরাজ্যে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে রুল অব অরিজিন তথা পণ্যের উৎসবিধি–সংক্রান্ত সুবিধা আরও সহজ করা ও বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। সেই সঙ্গে কৃষি ও খাদ্যপণ্যের রপ্তানি সম্প্রসারণে বিদ্যমান ‘টেকনিক্যাল ব্যারিয়ার্স টু ট্রেড (টিবিটি)’ কমানোর আহ্বান জানান রিজওয়ান রাহমান।
সভায় ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, বেসরকারি খাত বাংলাদেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সেবা ও আর্থিক খাতে ব্রিটেনের দক্ষতা রয়েছে। তবে শিল্পপণ্যের নতুন নতুন ডিজাইনে বাংলাদেশিদের দক্ষতা উন্নয়নে ব্রিটেন একযোগে কাজ করতে পারে।
রবার্ট চ্যাটারটন বলেন, চট্টগ্রামের মিরসরাইতে স্থাপিত অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। সেখানে বিনিয়োগে ব্রিটিশ উদ্যোক্তারা আগ্রহী হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এপেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, পোশাক, ওষুধসহ অন্যান্য শিল্পে বেশ দক্ষতা থাকলেও বাংলাদেশ ডিজাইনিংয়ে বেশ পিছিয়ে আছে। ওষুধশিল্পে বাংলাদেশ এখন অনেক ভালো করছে জানিয়ে তিনি ব্রিটেনের ব্যবসায়ীদের এই খাতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এসবিকে টেক ভেঞ্চারের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবির বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যাংকিং খাতে ইকোসিস্টেম তৈরিতে ব্রিটিশ বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান মইনউদ্দিন হাসান রশিদ বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে ভালো মানের নার্স তৈরিতে আমরা যথেষ্ট পিছিয়ে আছি। এ ক্ষেত্রে ব্রিটেন সহযোগিতা করতে পারে। তা ছাড়া শিক্ষা খাতেও ব্রিটেনের অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে, আর বাংলাদেশের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।’
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সহসভাপতি মিরান আলী।