বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৫ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার। বৃহস্পতিবার এ রিজার্ভ দাড়িয়েছে ৩৫.৯২ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলোতে ৬০ মিলিয়ন ডলার ছেড়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মঙ্গলবার রিজার্ভ ছিল ৩৬ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার।
বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকায় প্রতিনিয়ত রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মূলত এর ফলে রিজার্ভ কমছে। এছাড়া রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহেও তেমন গতি নেই। অবশ্য আমদানি ব্যয় কমানো ও রেমিট্যান্স বাড়াতে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগ চলমান আছে। তবে নানা কারণে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। পরিস্থিতি সামলাতে সরকার এখন আইএমএফের ঋণ নিতে চাইছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে আমদানি ব্যয় প্রায় ১৭ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ২৬৯ কোটি ডলার হয়েছে। আর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে রপ্তানি আয় ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার এসেছে। একই সময়ে প্রবাসী আয় মাত্র ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৫৬৭ কোটি ডলার। প্রথম দুই মাসে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বেড়েছিল। তবে সেপ্টেম্বরে কমেছে। সব মিলিয়ে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে বড় অঙ্কের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সামগ্রিক ভারসাম্যেও ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আইএমএফের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন (বিপিএম৬) ম্যানুয়াল অনুযায়ী, কেবল ব্যবহারযোগ্য অংশকেই রিজার্ভ হিসেবে দেখাতে হয়।
বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ আইএমএফের পদ্ধতি অনুসরণ করে হিসাব করলেও বাংলাদেশ বিভিন্ন তহবিলে জোগান দেওয়া অর্থকেও রিজার্ভ হিসাবে দেখাচ্ছে। এ হিসাব পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছে সংস্থাটি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অনেক বাড়ে ২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর। তখন আমদানি ব্যয় কমলেও ২০২০-২১ অর্থবছরে রেকর্ড ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে। আবার রপ্তানিতেও ১৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি ছিল। যে কারণে ২০২০ সালের শুরুর দিকে ৩২ বিলিয়ন ডলারের ঘরে থাকা রিজার্ভ বাড়তে বাড়তে গত বছরের আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে।