গত বছর ১২১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৮৪তম ও ভারত ১০৭তম অবস্থানে ছিল। এবার চার ধাপ পিছিয়ে যাওয়ায় ভারত এই সূচকে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। সূচক প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটি।
বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে কারও স্কোর শূন্য হলে বুঝতে হবে দেশটিতে ক্ষুধা নেই। আর স্কোর ১০০ হওয়ার অর্থ হচ্ছে ক্ষুধার মাত্রা সর্বোচ্চ। ক্ষুধা সূচক ১০ থেকে ১৯ দশমিক ৯ এর মধ্যে থাকলে ওই দেশ ‘মাঝারি মাত্রার’ ক্ষুধা আক্রান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ১৯, অর্থাৎ বাংলাদেশ মাঝারি মাত্রার ক্ষুধায় আক্রান্ত। একটি দেশে অপুষ্টির মাত্রা, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের উচ্চতা অনুযায়ী কম ওজন, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের বয়স অনুযায়ী কম উচ্চতা এবং শিশুমৃত্যুর হার হিসাব করে ক্ষুধার মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। বৈশ্বিক, আঞ্চলিক বা জাতীয় যে কোনো পর্যায়ে ক্ষুধার মাত্রা নির্ণয় করতে এ সূচকগুলো ব্যবহার করা হয়।
এবারের বিশ্ব ক্ষুধা সূচক অনুযায়ী, বিশ্বের অন্তত ৯টি দেশে ক্ষুধার মাত্রা ‘উদ্বেগজনক’ পর্যায়ে পৌঁছেছে। যার স্কোর ৩৫.১ থেকে ৪৯.৯। এসব দেশ হচ্ছে– সোমালিয়া, বুরুন্ডি, দক্ষিণ সুদান, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, ইয়েমেন, মাদাগাস্কার, গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো, লেসেথো ও নাইজার।
সূচকে বিশ্বের সবচেয়ে কম ক্ষুধার দেশগুলো হলো– বেলারুশ, বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনা, চিলি, চীন, ক্রোয়েশিয়া, এস্তোনিয়া, জর্জিয়া, হাঙ্গেরি, কুয়েত, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, মলদোভা, মন্টিনিগ্রো, নর্থ মেসিডোনিয়া, রোমানিয়া, সার্বিয়া, স্লোভাকিয়া, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও উরুগুয়ে।
এদিকে সূচক প্রকাশিত হওয়ার পরই তা পদ্ধতিগতভাবে ত্রুটিযুক্ত এবং দুরভিসন্ধিমূলক বলে প্রত্যাখ্যান করেছে মোদি সরকার। দেশটির নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দাবি, সূচকে মাত্র ৩০০০ জনের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে অপুষ্টির মাত্রা মাপা হয়েছে, যা ভুল পদ্ধতি। ভারতের সরকারি অ্যাপ বলছে, দেশে শিশুদের অপুষ্টির হার ধারাবাহিকভাবে ৭.২ শতাংশের নিচে রয়েছে। রাজনৈতিক দল কংগ্রেস সমালোচনা করেছে, মোদি সরকার দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছে।
সূচকে ভারতে শিশুদের অপুষ্টির হার দেশে ১৮.৭ শতাংশ, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ হিসেবে দেখানো হয়েছে। শিশুদের ওজন সাপেক্ষে উচ্চতার অনুপাতের ভিত্তিতে এই হিসাব করা হয়েছে। পাশাপাশি দেশে পাঁচ বছরের নিচে শিশুমৃত্যুর হার ৩.১ শতাংশ। যথেষ্ট স্বাস্থ্যকর খাবার জোটে না ১৬.৬ শতাংশ মানুষের। একই সঙ্গে ১৫ থেকে ২৪ বছরের মহিলাদের মধ্যে রক্ত স্বল্পতায় ভোগে ৫৮.১ শতাংশ।
সমকাল