সরকার ও আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মূলত তিন ধরনের নেতাদের লক্ষ্য করে তৎপরতা চলছে। এক. বিএনপিতে নিজেদের বঞ্চিত বা অবহেলিত মনে করেন এবং শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি ক্ষুব্ধ এমন নেতা; দুই. ওই সব প্রবীণ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য, যাঁদের এবার নির্বাচন বর্জন করলে পরের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য শারীরিক সামর্থ্য না–ও থাকতে পারে। তিন. জেলা পর্যায়ের কিছু উঠতি নেতাও রয়েছেন, যাঁদের জনপ্রতিনিধি হওয়ার ব্যাপক আগ্রহ, কিন্তু বিএনপির সঙ্গে থাকলে তাঁদের সেই সম্ভাবনা নেই।
নেতাদের বের করে আনার লক্ষ্যে নানামুখী আশ্বাস বা প্রলোভনের পাশাপাশি ক্ষেত্রবিশেষে মামলা, গ্রেপ্তার ও বিচারের বিষয়টি সামনে এনে চাপও তৈরি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বিএনপি থেকে যাঁদের বের করে আনা সম্ভব হবে, তাঁদের সম্প্রতি নিবন্ধন পাওয়া কয়েকটি দলে ভেড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি। এরই মধ্যে এসব দল ‘কিংস’ পার্টি নামে পরিচিতি পেয়েছে। এ ছাড়া প্রয়োজন অনুযায়ী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টকেও (বিএনএফ) কাজে লাগানোর চিন্তা আছে।
তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যে যোগাযোগের মধ্যে এসেছেন, এমন কোনো কোনো নেতা ছোট ছোট বা নামসর্বস্ব দলে যেতে রাজি নন। বরং স্বতন্ত্র নির্বাচন করার বিষয়ে আগ্রহী। কেউ কেউ নতুন দল গঠন করে নির্বাচনে অংশ নিতে চাইছেন। তবে নতুন দল গঠন করার আগ্রহ যাঁরা দেখাচ্ছেন, তাঁদের বিষয়ে আওয়ামী লীগের বিশ্বাস কিছুটা কম। কারণ, এঁরা চাপে পড়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাই নতুন দল গঠনের কথা বলাকে সময়ক্ষেপণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া এখন সারা দেশে যে গ্রেপ্তার অভিযান চলছে, এর মূল উদ্দেশ্য বিএনপির মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীদের ‘ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া’। পাশাপাশি গ্রেপ্তার নেতাদের কাউকে কাউকে ভোটে রাজি করানোর তৎপরতাও চলবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সম্ভাব্য নেতাদের সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ রাজনৈতিক পর্যায়ে হয়নি। সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে আলোচনা করা হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতা বা মন্ত্রীর সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগ ও আত্মীয়তার সূত্রে আলাপ-আলোচনা হয়েছে।