Site icon The Bangladesh Chronicle

বাড়ি পাচ্ছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব-মুখ্য সচিব, খরচ ধরা হয়েছে ৪৩ কোটি টাকা

প্রকল্পের কারণ হিসেবে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বলছে, বেসামরিক প্রশাসনের শীর্ষ দুটি পদের বিপরীতে নির্ধারিত বাসভবন নেই। মন্ত্রিপরিষদ সচিব এখন রাজধানীর মিন্টো রোডে সরকারি বাসভবনে থাকেন। আর মুখ্য সচিব থাকেন রাজধানীর গুলশানে সরকারি বাসভবনে। তবে দুটি বাসভবন এই পদের বিপরীতে নির্ধারিত নয়। যখন যিনি এই দুটি পদে বসেন, তাঁরা তাঁদের পছন্দমতো সরকারি বাসায় ওঠেন। সে জন্য দুটি পদের বিপরীতে আলাদা বাসভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সরকার দেশবাসীকে কৃচ্ছ্রসাধনের পরামর্শ দিচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া নতুন প্রকল্প অনুমোদন না দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ ও যানবাহন কেনাকাটা সীমিত করা হয়েছে। এমন সময়ে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলো।

অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থায় খরচ হবে ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ খাতে খরচ হবে ১৮ লাখ টাকা।

গণপূর্ত অধিদপ্তর যা বলছে

গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ মোহাম্মদ জোবায়ের প্রথম আলোকে বলেন, অর্থনৈতিক সংকট শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকে প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা চলছে। নকশা ও স্থান চূড়ান্ত করতে অনেক সময় চলে গেছে। তিনি বলেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মুখ্য সচিবের জন্য নির্ধারিত বাসভবন নেই। সে জন্য এই উদ্যোগ।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের আরেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, চলমান অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সরকার তিন শ্রেণিতে প্রকল্প বাছাই করেছে। সে ক্ষেত্রে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মুখ্য সচিবের জন্য সরকারি বাসভবন প্রকল্পটি অনুমোদন পাবে কি না, সেটি ঠিক করবে পরিকল্পনা কমিশন। যদিও প্রকল্পটি অনুমোদনে সরকারের শীর্ষ মহলের সবুজ সংকেত রয়েছে বলে জানা গেছে। তা ছাড়া প্রকল্পটির কাজ দেড় বছরের মধ্যেই শেষ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তরকে।

প্রকল্পে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মুখ্য সচিবের বাসভবনে দুই সেট সুইমিং পুল বানানোর পরিকল্পনা রাখা হয়েছে। এতে খরচ ধরা হয়েছে ৫ কোটি ১০ লাখ টাকা। সুইমিং পুল বানাতে এত টাকা খরচের প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছেন গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সদ্য বিদায়ী সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার। এক আন্তমন্ত্রণালয় সভায় তিনি সুইমিং পুলের খরচকে অতিরিক্ত বলেছেন।

তবে গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ মোহাম্মদ জোবায়ের বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, সুইমিং পুলের সঙ্গে অনেক বিষয় জড়িত। পানি বিশুদ্ধ করা ও পাম্পের বিষয় আছে। কারিগরি অনেক দিক জড়িত। এটি স্বাভাবিক জলাধার নয়। সে জন্য খরচ বেশি। তবু খরচ কম বেশি হতে পারে।

দুটি ভবনের সাজসজ্জাতেই খরচ দুই কোটি

প্রকল্পের নথি ঘেঁটে দেখা গেছে, তিনতলা দুটি ভবন নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছে সাড়ে ৯ কোটি টাকা করে। এ ছাড়া দুটি ভবনেই অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জাতে খরচ হবে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। দুটি ভবনে আসবাবের পেছনে খরচ হবে দেড় কোটি টাকা। ২টি ভবনের জন্য ৭টি করে মোট ১৪টি এলইডি টেলিভিশন কেনা হবে। এতে ব্যয় হবে ৯ লাখ টাকা। সিসিটিভি সিস্টেম কেনা হবে ৩২টি।তাতে খরচ হবে ৬০ লাখ টাকা। অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থার জন্য পৌনে দুই কোটি টাকা খরচ হবে। এক হাজার কেজি লিফটে (ইউরোপীয় স্ট্যান্ডার্ড) খরচ ধরা হয়েছে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থায় খরচ হবে ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

তবে গণপূর্ত অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, পরিকল্পনা কমিশন অনেক খরচ কাটছাঁট করবে। তখন খরচ কমে আসবে।

Exit mobile version