- ২৪ ডেস্ক
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে শনিবার রাতে আকস্মিক সফরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে যান প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। রাত ৯টা ১০ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছে তিনি সরাসরি আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং সংকট উত্তরণে বেশ কিছু জরুরি নির্দেশনা দেন।
পরিদর্শনকালে প্রধান উপদেষ্টা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিনের কাছ থেকে রোগীদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। পরিচালক জানান, আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুসরণ করে একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি বোর্ডের মাধ্যমে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশি চিকিৎসকদের পাশাপাশি সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ দলও এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত রয়েছে। বর্তমানে ৪ জন সংকটাপন্ন, ৯ জন গুরুতর এবং ২৩ জন মাঝারি মাত্রার দগ্ধ রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।
এসময় প্রধান উপদেষ্টার কাছে দুর্ঘটনার পর জরুরি স্বাস্থ্যসেবার সীমাবদ্ধতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান জানান, দুর্ঘটনার পর রোগীদের স্থানান্তরে অ্যাম্বুলেন্সের তীব্র সংকট দেখা দেয়, যা দেশের জরুরি ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে। এই বিবরণ শুনে প্রধান উপদেষ্টা অবিলম্বে এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ করে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
প্রফেসর ইউনূস হতাহতদের শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, নিহতদের পরিবার, আহত ব্যক্তি ও তাদের পরিবার এবং মাইলস্টোন স্কুলের প্রত্যেক সদস্যের মানসিক ট্রমা কাটিয়ে উঠতে সম্মিলিত কাউন্সেলিংয়ের উদ্যোগ নিতে হবে। এই কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করারও নির্দেশ দেন তিনি।
চিকিৎসাব্যবস্থায় কোনো ঘাটতি আছে কি না, তা জানতে চাইলে পরিচালক জানান, সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সবকিছুর জোগান দেওয়া হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের স্বজনদের প্রতি যত্নশীল হওয়ার জন্যও কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।
তিনি দেশি-বিদেশি সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘রোগীদের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমরা আন্তরিক ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’
হাসপাতাল পরিদর্শনকালে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম উপস্থিত ছিলেন।