Site icon The Bangladesh Chronicle

বাইরের প্রভাব মোকাবিলায় দক্ষিণ এশিয়ায় সহযোগিতা বাড়াতে হবে

ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ঘিরে বাইরের শক্তিগুলোর উপস্থিতি ও প্রতিযোগিতা বাড়ছে। তারা এ অঞ্চলের দেশগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তার করছে। এ প্রভাব মোকাবিলায় ভূকৌশলগত অবস্থান সংহত করতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে বাণিজ্য ও উন্নয়নে সহযোগিতা বাড়াতে হবে। গতকাল রোববার বে অব বেঙ্গল কনভারসেশনের আলোচনায় নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা এসব কথা বলেছেন।

গত শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বে অব বেঙ্গল কনভারসেশনের তিন দিনের সম্মেলন শুরু হয়। গতকাল দিনব্যাপী একাধিক সেশন হয়েছে। এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।
সিকিউরিটি আর্কিটেকচার অব দ্য নিউ এশিয়া প্যাসিফিক শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এ অঞ্চলের লাদাখ, অরুণাচল, দক্ষিণ চীন সাগর, পূর্ব চীন সাগর ও তাইওয়ান নিয়ে বিতর্কের বিষয় তুলে ধরে বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্ব নতুন করে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। তাই এ বিষয়গুলোতে দ্বন্দ্ব আরও বাড়তে পারে। এসব বিষয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা প্রয়োজন।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক সাবেক এয়ার কমডোর ইশফাক ইলাহী চৌধুরী বলেন, সমুদ্রে শান্তিপূর্ণভাবে সীমানা নির্ধারণে বাংলাদেশ উদাহরণ তৈরি করছে। একই পথ অবলম্বন করে চীন তার বিরোধগুলো মেটাতে পারে। লাদাখ বা অরুণাচল নিয়ে ভারত-চীন যুদ্ধে জড়ালে বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বৈশ্বিকভাবে নানা চাপ থাকলেও বাংলাদেশ সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করে আসছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা হাডসন ইনস্টিটিউটের ফেলো সাতুরু নাগাও বলেন, দক্ষিণ চীন সাগরসহ সমুদ্রে দখল বাড়াতে চীন সামরিক খাতে প্রচুর বিনিয়োগ করছে। এদিকে তাইওয়ান ও জাপান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারিত্ব বাড়াচ্ছে। অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্ব বাড়াচ্ছে চীনকে মোকাবিলার জন্য।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ অরুণ কে সাহনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে সেনা হস্তক্ষেপের পরিবর্তে অবশ্যই আত্মনির্ভরশীলতা এবং স্থিতিশীলতায় বেশি জোর দিতে হবে। ভারত ও চীনের মধ্যে বিরোধ থাকার পরও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রায় ৭০০

বিলিয়ন ডলার। এ থেকে বোঝা যায়, দেশগুলো এখন খুব বেশি পরস্পর নির্ভরশীল। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প একটি উদাহরণ। যুক্তরাষ্ট্রকে বুঝতে হবে যে বিশ্ব পরিবর্তন হচ্ছে।
এই বৈঠকের পর ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার নিয়ে বিশদ বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। ইউরোপীয় কমিশনের বিদ্যুৎবিষয়ক প্রোগ্রাম ব্যবস্থাপক চাইরা ভিডুসি বলেন, বিদ্যুৎ নিয়ে ইইউর যাত্রা এখনও চলমান। দীর্ঘ সময়ে বেশ অগ্রগতি হয়েছে, বিশেষ করে সমন্বিত বিদ্যুতের বাজারের ক্ষেত্রে। বর্তমানে ৩৫টি দেশ মিলে অভিন্ন বিদ্যুতের বাজার রয়েছে। ইইউর সদস্যদের বাইরেও দেশ রয়েছে, যারা এখান থেকে বিদ্যুৎ বাণিজ্য করে। ইইউর বিদ্যুৎ বাণিজ্য মডেলটি দক্ষিণ এশিয়াসহ অন্যান্য অঞ্চলের জন্যও প্রযোজ্য বলে তিনি মত দেন। তিনি বলেন, এর জন্য দরকার শক্তিশালী রাজনৈতিক সদিচ্ছা।

সমকাল

Exit mobile version