Site icon The Bangladesh Chronicle

বাংলাদেশে ব্যবসা বন্ধের যে কারণ দেখাল গ্রামীণ ইউনিক্লো

 

তুষার পাল

বাংলাদেশে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তৈরি পোশাকের খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ইউনিক্লো। আগামী ১৮ জুন থেকে প্রতিষ্ঠানটির ১০টি শোরুম বন্ধ হয়ে যাবে বলে আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে ঘোষণা দেওয়া হয়।

২০১০ সালে পোশাক ব্যবসার মাধ্যমে দারিদ্র্য, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য ফাস্ট রিটেইলিং কোম্পানির সঙ্গে গ্রামীণ ব্যাংক গ্রুপ যৌথভাবে বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করে। ২০১৩ সালে ঢাকায় প্রথম শোরুম খোলে প্রতিষ্ঠানটি। সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ১০টি শোরুম খোলা হয় ঢাকায়।

১০ বছরের মাথায় কেন ব্যবসা বন্ধ করা হলো তার সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ না করলেও প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ওয়েবসাইটে দেওয়া জরুরি নোটিশে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে গ্রামীণ ইউনিক্লো। তাতে ‘বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের’ পাশাপাশি ‘ব্যবসায় পরিবেশে পরিবর্তনের’ কথা তুলে ধরা হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সেই সঙ্গে ব্যবসায় পরিবেশের পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান মনে করছে যে, ব্যবসার একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য অর্জিত হয়েছে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায় কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

গ্রামীণ ইউনিক্লো বন্ধ হলেও বাংলাদেশে ফাস্ট রিটেইলিংয়ের কার্যক্রম চলবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। জাপানভিত্তিক খুচরা বিক্রেতা বহুজাতিক কোম্পানিটি ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্পের উন্নয়নে কাজ করছে। শোরুম বন্ধ হলেও অংশীদার প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ইউনিক্লোসহ ফাস্ট রিটেইলিংয়ের জন্য বাংলাদেশে পোশাক উৎপাদন চালু থাকবে বলে নোটিশে জানানো হয়।

সেই সঙ্গে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য গৃহীত ফাস্ট রিটেইলিংয়ের চলমান কর্মসূচিও অব্যাহত থাকবে। পোশাক কারখানায় নেতৃত্বের ভূমিকায় বাংলাদেশের নারীদের সামনে আনতে ২০১৯ সালে ইউএন উইমেনের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কর্মসূচিটি চালু করা হয়েছিল।

গ্রামীণ ইউনিক্লোর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে যৌথভাবে ২০১১ সালে ‘গ্রামীণ ইউনিক্লো’ নামে ‘সামাজিক ব্যবসার’ উদ্যোগ চালু করা হয়। গ্রামীণ ইউনিক্লো সব পণ্য বাংলাদেশেই তৈরি ও বিক্রি করে; মুনাফা হলে তা ব্যবসায় পুনর্বিনিয়োগ হয়।

মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসংলগ্ন জোবরা গ্রামে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করেন ‘গ্রামীণ ব্যাংক প্রকল্প’। ওই প্রকল্প ১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংকে রূপান্তরিত হয়। এই ব্যাংক বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ঋণের প্রসার করে এবং তার ওপর দাঁড়িয়ে গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ শক্তিসহ অনেকগুলো সহযোগী প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়। এর সঙ্গে ইউনূসের ‘সামাজিক ব্যবসার’ ধারণার আওতায় আরো উদ্যোগ আসে। গ্রামীণ ইউনিক্লোও তেমনি একটি উদ্যোগ।

Exit mobile version