বাংলাদেশে প্রথম সপ্তাহে ‘পাঠান’ এর আয় কত
দ্বিতীয় সপ্তাহে ৪৩টি প্রেক্ষাগৃহে পাঠান চলবে এবং প্রতিদিন ১৮৫ টি শো হবে।
ছবি: তাওহীদুজ্জামান তপু
বাংলাদেশে মুক্তির প্রথম সপ্তাহে ৮০ লাখ টাকার বেশি টিকিট বিক্রি (গ্রস) হয়েছে বলিউড সিনেমা ‘পাঠান’ এর। দ্বিতীয় সপ্তাহে হল সংখ্যা বাড়ছে, তবে কমছে প্রদর্শনীর সংখ্যা।
বৃহস্পতিবার গ্লিটজের সাথে আলাপকালে এ তথ্য জানিয়েছেন এ সিনেমার আমদানিকারক অনন্য মামুন।
গত ১২ মে দেশের ৪১টি সিনেমা হলে প্রথম সপ্তাহে পাঠানের শো রাখা হয় প্রতিদিন ২০৬টি। বুধবার পর্যন্ত ৮০ লাখ টাকার বেশি টিকেট বিক্রির তথ্য জানিয়ে অনন্য মামুন গ্লিটজকে বলেন, “বৃহস্পতিবারের হিসাব হাতে এলে প্রথম সপ্তাহে আমাদের টিকেট বিক্রির পরিমাণ আরও বেশি হবে।”
টিকিট বিক্রির মোট অর্থকে ‘গ্রস’ বলা হয়, সেখান থেকে করসহ বিভিন্ন খরচ বাদ দিয়ে আয় হিসাব করা হয়। সিনেমাটি প্রথম সপ্তাহে কত টাকা আয় করেছে, তা এখনো জানা যায়নি।
২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি ঢাকার সিনেমা হলে সালমান খান অভিনীত ‘ওয়ান্টেড’ মুক্তির পর হিন্দি সিনেমার প্রদর্শন বন্ধে কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে রাজপথে নেমেছিলেন শিল্পী ও নির্মাতারা। সেই আন্দোলনের পর দেশের সিনেমা হলে আর কোনো হিন্দি ছবি মুক্তি পায়নি।
এরপর নানা টানাপড়েন শেষে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক মুক্তবাণিজ্য চুক্তির (সাফটা) আওতায় বাংলাদেশে মুক্তি পায় ‘পাঠান’। স্পাই থ্রিলার সিনেমাটি আমদানি করেছে ঢাকার পরিবেশনা প্রতিষ্ঠান অ্যাকশন কাট এন্টারটেইনমেন্ট।
অনন্য মামুন বলেন, দ্বিতীয় সপ্তাহে ৪৩টি প্রেক্ষাগৃহে পাঠান চলবে এবং প্রতিদিন ১৮৫টি শো হবে।
সিনেমাটি মুক্তির আগে গ্লিটজকে অনন্য মামুন বলেছিলেন, পাঠান এর মাধ্যমে বাংলাদেশে বক্স অফিস ‘কার্যকর করা হবে’।
পাঠান এর মাধ্যমে বক্স অফিস কতটা কার্যকল হলো জানতে চাইলে অনন্য মামুন বলেন, “১৫টি প্রেক্ষাগৃহে ই-টিকেটিং সিস্টেম চালু ছিল। এছাড়া অন্যান্য প্রেক্ষাগৃহে হাতে হাতে টিকেট বিক্রি হয়েছে। ফলে পুরোপুরি বক্স অফিস কার্যকর করা যায়নি।”
বাংলাদেশে পাঠান মুক্তির পর বলিউডভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বলিউড হাঙ্গামা জানিয়েছিল, বাংলাদেশে পাঠান মুক্তির প্রথম দিনে ২৫ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি (গ্রস) হয়েছে।
গত ২৫ জানুয়ারি মুক্তির পর বলিউড বক্স অফিসে ঝড় তোলে ‘পাঠান’। পরে সিনেমাটি অ্যামাজন প্রাইমেও আসে। শাহরুখ অনুরাগীদের অনেকেই অনলাইনে সিনেমাটি দেখে ফেলেছেন। এ কারণেই বাংলাদেশে সিনেমাটি কম ব্যবসা করছে বলে মনে করেন চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস।
গ্লিটজকে তিনি বলেন, “মাল্টিপ্লেক্স হলে ভালো দর্শক হয়েছে, তবে সিঙ্গেল স্ক্রিন হলে পাঠান দর্শক টানতে পারেনি। তাছাড়া সিঙ্গেল স্ক্রিনে তো সিট সংখ্যাও বেশি। সেখানে হাউজফুল করা কঠিন। পাঠান সিনেমাটি চার মাস আগে ভারতে মুক্তি পেয়েছে, অনলাইনেও আছে। বাংলাদেশের অনেক দর্শক অনলাইনে দেখেছেন। এর জন্য দর্শক কম হয়েছে।”
“বলিউডে মুক্তির দিন যদি এখানেও মুক্তি দেওয়া যায়, তবে অনেক দর্শক হবে। হলিউড সিনেমা একই দিনে বাংলাদেশেও মুক্তি দেওয়া গেলে বলিউড সিনেমা কেন দেওয়া যাবে না? এর জন্য আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমাতে হবে।”
গত ১০ এপ্রিল সাফটা চুক্তির আওতায় নতুন করে উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। ‘পাঠান’ এর বিপরীতে ভারতের রপ্তানি করা হয়েছে ২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত শাকিব খানের সিনেমা ‘পাঙ্কু জামাই’। সাফটার আওতায় এই বছর পরীক্ষামূলকভাবে উপমহাদেশীয় ১০টি ছবি আনতে পারবেন আমদানিকারকেরা। শর্ত হল- সমানসংখ্যক সিনেমা রপ্তানি করতে হবে।
কম সংখ্যক হলে পাঠান মুক্তির কারণ জানিয়ে সিনেমাটির আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাকশন কাট এন্টারটেইনমেন্ট’ এর কর্ণধার অনন্য মামুন বলেন, “অনেক হল মালিক সিনেমাটি নেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছেন। কিন্তু আমরা দেখেছি সেসব হলে পরিবেশ নেই। তাদের বলেছি, নারীদের জন্য আলাদা টয়লেট, ভালো পর্দা লাগানোসহ হলের পরিবেশ ঠিক করতে হবে।”
সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত পাঠানে শাহরুখ খানের সঙ্গে রয়েছেন দীপিকা পাড়ুকোন ও জন আব্রাহাম। সিনেমাটি ইতোমধ্যে বলিউডে সুপারহিট তকমা পেয়েছে, বিদেশেও ভালো ব্যবসা করছে অ্যাকশন সিনেমাটি।