Site icon The Bangladesh Chronicle

বড় বড় ব্যবসায়ীরা টাকা পাচার করেন: এবিবি চেয়ারম্যান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

(১৮ ঘন্টা আগে) ২২ মে ২০২৩, সোমবার, ৪:৪৭ অপরাহ্ন

ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন বলেছেন, দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা টাকা পাচার করেন। আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং হয়েছে।

সোমবার রাজধানীর ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এবিবি আয়োজিত ‘ব্যাংকিং সেক্টর আউটলুক-২০২৩’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় এবিবির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং হয় এটা আমরা জেনেছি গত দেড়-দুই বছর আগে। কিন্তু এর অনেক আগে থেকেই এ পদ্ধতিতে টাকা পাচার হয়েছে। তখন আমরা এটা বুঝতাম না। আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে টাকা পাচারে সুযোগ রয়েছে, যার সবগুলো উপায় ব্যাংকাররা জানেন না। সেই সুযোগে এ পর্যন্ত মানি লন্ডারিং হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের আমদানি এলসি নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণের কারণে গত বছর থেকে এর হার অনেক কমে এসেছে।

নন পারফরমিং লোন (এনপিএল) বা খেলাপি ঋণ নিয়ে এবিবির চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাংক খাতের শুরু থেকেই এনপিএল বাড়ন্ত ছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দিক নির্দেশনায় এনপিএল কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা ব্যাংকগুলো কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন বলেন, আগে আমাদের প্রতি মাসে ৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হতো, কিন্তু তা এখন কমে সাড়ে ৪ বিলিয়নে এসেছে। কমে যাওয়া আড়াই বিলিয়নের মধ্যে এক বিলিয়ন তৈরি পোশাক খাতের মেশিনারিজ আমদানি এবং বাকি দেড় বিলিয়নের মধ্যে ওভার ইনভয়েসিং হতো, যা এখন কমে এসেছে।

এখনো ব্যাংক হতে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের অভাব রয়েছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন।

তিনি বলেন, গত ৩০ বছরে আমাদের দেশে ব্যাংকিং সেক্টর অন্যভাবে তৈরি হয়েছে। আমাদের দেশে ব্যাংকিং ব্যবসা বিভিন্ন গ্রুপের কাছে চলে গেছে। বিশ্বের অন্য অনেক দেশেই বিষয়টা এমন নয়। এজন্য সুশাসন ফেরাতে ব্যাংকে বড় ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তন দরকার। 

সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, বিশ্বের সংকট যেটা আছে এটা সামলাতে আমাদের আরও সময় লাগবে। আমরা এখনও অনেক গরিব দেশ। দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে অনেক নিচে আমরা। আমাদের ছোট অর্থনীতির দেশ এটা।

তিনি বলেন, ব্যাংক খাতের সংকট কিছুটা কেটেছে। তবে আমরা সংকট থেকে এখনও পুরোপুরি উত্তরণ হতে পারিনি। সংকটের মধ্যেও কোনো ব্যাংকের আমানতকারী টাকা তুলতে পারেনি এমন হয়নি। তারল্য ব্যাংক খাতের কোনো চ্যালেঞ্জ নয়, সে সংকটও দূর হয়েছে। তিনি বলেন, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ একটি বড় সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানে সবাইকে একসঙ্গে কাজ না করলে সমাধান করা সম্ভব না।

রেমিট্যান্স নিয়ে তিনি বলেন, রেমিট্যান্সের ডলারের শুধু দাম নির্ধারণ করলেই হবে না রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের কি ধরনের সুবিধা দেয়া হচ্ছে তাও দেখতে। প্রবাসীরা এয়ারপোর্টে ভালো সুবিধা পান না, তাদের কোনো ধরনের কাজ সম্পর্কে শেখানো হয় না। অন্যান্য দেশে বিভিন্ন ধরনের ট্রেনিং দেয়া হয়, দক্ষ করা হয়। যা আমাদের দেয়া হয় না। এতে প্রবাসীরা অনেক পিছিয়ে পড়ছে।

সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাশরুর আরেফিন বলেন, আমাদের ব্যাংকিং সেক্টরের প্রতি গ্রাহকের আস্থা বেড়েছে। এখন ডিপোজিট বেড়েছে, রেমিট্যান্স বাড়ছে। রেমিট্যান্সে ডলারের রেট ৮৭ টাকা থেকে ১০৮ টাকা হয়েছে। আমাদের তারল্য সাময়িক সংকট দেখা দিয়েছিল তবে এখন অতিরিক্ত তরল্য রয়েছে। পুরো ব্যাংক খাতে এখন অতিরিক্ত ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা তারল্য রয়েছে।

Exit mobile version