Site icon The Bangladesh Chronicle

প্রিয়া সাহার নালিশ এবং ব্যারিস্টার সুমনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা সংক্রান্ত দুটি কথা – শরীফ হাসান

Buy zithromax

by Sharif Hasan   4 September

sharifrhasan.blogspot.com

ছোটবেলায় “ইসলামের” ইতিহাসে হিন্দু রাজা গৌড় গোবিন্দ আর তার মুসলমান প্রজা বোরহান উদ্দীনের কথা পড়েছিলাম। গরু জবাই করে শিশুপুত্রের আকিকা করেন বোরহান। গো-হত্যার অপরাধে রাজার নির্দেশে শিশুটিকে হত্যা করা হয় আর সেই সংগে বোরহানের ডান হাত কর্তন করা হয়। এই নির্মম অত্যাচারের প্রতিকার চেয়ে সিলেটে আস্তানা গাড়া আওলিয়া শাহজালালের পায়ে লুটিয়ে পড়েন বোরহান। বাংলার সুলতান শামসুদ্দীন ফিরোজ শাহ্‌ আর শাহজালালের যৌথ আক্রমণে পতন হয় গৌড় গোবিন্দের।
ইতিহাস ঘাটলে নালিশের এমন ঘটনা ভুরি ভুরি পাওয়া যাবে। সে যুগে এ ধরণের নালিশকে তেমন খারাপ চোখে দেখা হতনা। তবে আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এই নালিশি পদ্ধতি যে কোন বিচারে এক ভয়াবহ অপরাধ। তাছাড়া এ যুগে এ ধরণের নালিশ করে খুব বেশি কিছু অর্জন করার নেই। উলটো নিজের বা নিজ সম্প্রদায়ের ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি। যার সর্বশেষ উদাহরণ প্রিয়া সাহা।

Buy amoxil

প্রিয়া সাহা কী উদ্দেশ্যে, কার প্ররোচনায়, ঠিক কোন ভাবনা থেকে সংখ্যালঘুদের রক্ষায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে ধর্ণা দিলেন তা হয়তো আমাদের কোন দিন জানা হবেনা। তবে পুরো বিষয়টি যে আত্মঘাতী হয়েছে সে ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই।
বাংলাদেশে হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর যে নির্যাতন নিপীড়ন চলে আসছে তা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। একথাও সত্য এর প্রতিকারে সরকার এবং দেশের জনসংখ্যার বিরাট অংশ মোটেও আন্তরিক নয়। তাই সংখ্যালঘুদের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হওয়াই স্বাভাবিক।
তবে কঠিন বাস্তবতা হলো, এই দেশ ও সমাজের অংশ হয়েই সংখ্যালঘুদেরকে এই বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। বিচক্ষন ব্যক্তিমাত্রই জানেন, সংখ্যালঘুদেরকে নির্যাতনের অপরাধে ক্ষমতাধর প্রতিবেশী রাষ্ট্র কিংবা অন্য কোন পরাশক্তি এসে বাংলাদেশকে শায়েস্তা করবে না। এ যুগে নিজ স্বার্থ ছাড়া কোনও রাষ্ট্র এক পা নড়বেনা। যেমন ফিলিস্তিনীদের জন্য কিছুই করছেনা আরব বিশ্ব, কিংবা রোহিঙ্গাদের জন্য পাকিস্তান অথবা ইন্দোনেশিয়া।
তারপরেও ভুক্তভোগীরা অন্যের দ্বারস্থ হন, প্রতিকারের আশায় নালিশ করেন। কেউ না বুঝে করেন, কেউ ব্যক্তিস্বার্থে করেন আর কেউবা প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে করেন। নালিশ যতই যুক্তিসঙ্গত হোক না কেন, এ ধরণের কর্মকান্ড বর্তমান বিশ্বের যে কোন দেশেই রাষ্ট্র বিরোধী বলে গণ্য হয়।
এ নিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা যায় কিনা সেটা তর্কের বিষয়। তবে কেউ সংক্ষুব্ধ হয়ে আদালতে মামলার আরজি জানালে তার মুণ্ডুপাত করার কিছু নেই। মুণ্ডুপাত করলেও উল্টো সাজানো মামলা দায়ের করা প্রতিহিংসাপরায়ণতা ছাড়া আর কিছুই নয়। ঠিক সেটিই ঘটেছে ব্যারিস্টার সুমনের সাথে।
আপাদমস্তক অসাম্প্রদায়িক সুমনের নামে প্রথমে ভুয়া ফেইসবুক পেইজ খুলে সেখান থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদেরকে হেয় করে বিভিন্ন মন্তব্য করার মাধ্যমে মামলার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। আর তার অব্যবহিত পরেই সুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।
একসাথে ছাত্র রাজনীতি করার সুবাদে সুমনকে জানি। স্রোতের বিপরীতে সে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে অগ্রগামী ছিল। দীর্ঘদিন ধরে নিজ এলাকায় পূজা-পার্বণে সে পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে। একাধিকবার আমি সেসব অনুষ্ঠান উপভোগ করেছি। আজ তার নামে সাজানো মামলা আমাকে ব্যথিত করেছে, ক্ষুব্ধ করেছে।
সুমন চৌকশ আইনজীবী। এই বানোয়াট মামলা মোকাবেলা করা তার জন্য তেমন কষ্টসাধ্য হবার কথা নয়। আশংকার বিষয়, এই মামলা পুরো পরিস্থিতিকে আরো উত্তপ্ত করবে। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পকে নিয়ন্ত্রণহীন করবে। মামলা দায়েরকারী, তার আইনজীবী আর ইন্ধনদাতারা যত তাড়াতাড়ি এটি উপলব্ধি করবেন ততই মংগল।
সকলের মাঝে শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
সাম্প্রদায়িকতা নিপাত যাক।
প্রিয় স্বদেশ সুস্থ হোক।
Buy amoxicillin

(ছবি গুগল ইমেইজ থেকে নেওয়া) 

Exit mobile version