Site icon The Bangladesh Chronicle

প্রতিশোধ কি নিতে পারবে আর্জেন্টিনা

প্রতিশোধ কি নিতে পারবে আর্জেন্টিনা। – ছবি : সংগৃহীত

১৯৯৮ সালের ফ্রান্স বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ক্রোয়েশিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল। ওই প্রতিশোধই নিয়েছিল ক্রোয়েটরা গত বিশ্বকাপে। লিওনেল স্ক্যালোনির দল কি পারবে সেই হারের বদলা নিতে। নাকি এবারো তারা শিরোপার লড়াই করবে। সে উত্তর মিলবে ১৩ ডিসেম্বর রাত ১টায় লুসাইল স্টেডিয়ামে। যদি সম্ভব হয় তাহলে মেসির খেলা হবে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় বিশ্বকাপের ফাইনাল।

মার্শাল টিটোর যুগোশ্লাভিয়া ভেঙে সাত টুকরা। এই সাত স্বাধীন দেশই ফুটবল বিশ্বের একটি শক্তি। বলকাল অঞ্চলের এই অংশ থেকে এবার কাতার বিশ্বকাপে প্রতিনিধিত্ব ছিল দু`দেশের। সার্বিয়া গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েও ক্রোয়েশিয়া ধরে রেখেছে তাদের সাফল্য। গত বিশ্বকাপের রানার্সআপরা এবারো সেমিফাইনালে। রাশিয়া বিশ্বকাপে ক্রোয়েটদের চমকের শুরুটা গ্রুপ পর্বের ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে ৩-০ তে উড়িয়ে। লিওনেল মেসির গা ছাড়া ভাবের কারণেই সে ম্যাচে আলবিসেলেস্তেদের এমন বাজে হার। কোচ হোর্হে (জর্জ) সাম্পাওলির সাথে মন মালিন্যের কারণেই ওই দশা। সাথে গোলরক্ষক কাভালেরোর ভুল পাসও দায়ি।

জ্লাতকো দালিচের দল ঠিক ২০১৮ বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সই ধরে রেখেছে। এখন পর্যন্ত অপরাজিত থাকা দু`দলের একটি এই ক্রোয়েশিয়া। অন্যটি মরক্কো। আর্জেন্টিনার শুরুটা হারে শুরু হলেও পরে তারা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে আজ সেমিতে। একে একে মেক্সিকো, পোল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং নেদারল্যান্ডকে হারিয়ে এখন কড়া নাড়ছে ফাইনালের দরজায়। অন্যদিকে ক্রোয়েটদের শুরুটা মরক্কোর সাথে ড্র করে।

পরবর্তীতে বেলজিয়াম এবং কানাডাকে হারিয়ে গ্রুপ সেরা হওয়া। দ্বিতীয় রাউন্ডে জাপান এবং কোয়ার্টারে ব্রাজিলকে টাইব্রেকারে কাবু করে তারা তৃতীয় বারের মতো বিশ্বকাপের সেমিতে। তাদের প্রথম সেমিফাইনাল খেলা ১৯৯৮ সালে।

আর্জেন্টিনা এবং ক্রোয়েশিয়ার এ পর্যন্ত দেখা পাঁচবার। এতে দু`দলেরই জয়ের পাল্লা সমান। দুটি করে জয়। অন্য ম্যাচটি ড্র। বিশ্বকাপেও তাদের দেখা দু`বার। দু`ফিফা প্রীতি ম্যাচেও দু`দলের একটি করে জয়। ২০০৬ সালে ক্রোয়েশিয়া ৩-২ গোলে জিতলেও ২০১৪ সালের প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনা ২-১ গোলে জয় পায়। ১৯৯৪ সালের প্রথম প্রীতি ম্যাচটি অবশ্য গোলশূন্য ড্র হয়েছিল।

ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ খেলছেন মেসি। এখন তার প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপ জিততে হলে আজ জয়ে সে আশা জিইয়ে রাখতে হবে। রাশিয়ার মাঠে মেসি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খেলেই দলকে হারিয়েছেন। আজ অবশ্য তার সেই সুযোগ নেই। কোচ স্ক্যানোলির সাথে সম্পর্কটা বেশ ভালো। একটি পরিবার হিসেবে খেলছে। ডিফেন্সে সমস্যা থাকলেও পার পেয়ে যাচ্ছে ফরোয়ার্ড লাইনের কারেন। সাথে গোলরক্ষকও সার্পোট দিয়ে যাচ্ছেন।

মেসি খেলতে যাচ্ছেন বিশ্বকাপে তার ২৫তম ম্যাচ। স্পর্শ করছেন জার্মান ফুটবলার লোথার ম্যাথুউসের রেকর্ডকে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় রাউন্ডে হাজারতম ম্যাচে মেসি হয়েছিলেন ম্যাচ সেরা। করেছিলেন একটি গোলও। দুই নিয়মিত ফুটবলারের অনুপস্থিতিতে পিএসজির এ স্ট্রাইকারকে জ্বলে উঠতেই হবে।

ক্রোয়েশিয়া এবং আর্জেন্টিনার বিগত বিশ্বকাপের নক আউটের ম্যাচের অধিকাংশই গড়িয়েছে অতিরিক্ত সময়ে। দু`দলই কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার পর্ব পার করেছে টাইব্রেকারে। আর্জেন্টিনাকে ১৪টি নক আউট ম্যাচের ৮টিই ১২০ মিনিট খেলতে হয়েছে। ইউরোপিয়ান দেশটিরও ছয় নক আউট ম্যাচের পাঁচটিই ৯০ মিনিটের পরেও খেলতে খেলতে বাধ্য হওয়া। ১৯৯৮-এর সর্বোচ্চ গোলদাতা ডেভর সুকারের দেশ ১০ নক আউটের ম্যাচের ৮টিতেই জয় পেয়েছে।

বিশ্বকাপে দারুণ সাফল্য ক্রোয়েশিয়ার। তারা গত ১২ ম্যাচের মাত্র একটিতে হেরেছে। অন্যদিকে আর্জেন্টিনা তাদের সবশেষ খেলা ৪১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্যে হেরেছে একটিতে।

Exit mobile version