Site icon The Bangladesh Chronicle

পহেলগাম ইস্যু : ভারতের জন্য আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ

ভারত বিভাজনের সময় জম্মু ও কাশ্মির একটি অখণ্ড দেশীয় রাজ্য ছিল। দেশীয় রাজ্যটির তৎকালীন মহারাজা হরি সিং রাজ্যটির জনমানুষের স্বার্থের পরিপন্থী সিদ্ধান্ত নেয়ায় আজ এটি ত্রিধাবিভক্ত হয়ে এর ৪৩, ৩৭ ও ২০ শতাংশ যথাক্রমে ভারত, পাকিস্তান ও চীনের নিয়ন্ত্রণে। বর্তমানে তিনটি দেশের অন্তর্ভুক্ত কাশ্মিরের জনমানুষের মধ্যে তিন ধরনের মতাবলম্বী রয়েছেন। একটি বড় অংশ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকতে চান। এর চেয়ে অপেক্ষাকৃত একটি ছোট অংশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে থাকতে চান আর ভারতের অংশ হিসেবে থাকতে চান সংখ্যাটি ক্রমহ্রাসমান। চীনের দখলবহির্ভূত অঞ্চলের কাশ্মিরিরা যেমন চীনের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয়ে আগ্রহী নন; তেমনি চীনের দখলকৃত অংশের কাশ্মিরিরাও যে চীনের দখলে থাকতে চান তা-ও স্পষ্ট নয়।

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির ভারতের একমাত্র রাজ্য যেখানে মুসলিম জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ। ভারত বিভাজন-পরবর্তী রাজ্যটির মুসলিম জনগোষ্ঠী বিভিন্নভাবে অত্যাচার ও নিষ্পেষণের শিকার হওয়ায় তারা ক্রমে ভারতবিদ্বেষী হয়ে ওঠেন। ১৯৮০ পরবর্তী তা ব্যাপকভাবে বাড়তে থাকে। কথাটি অনস্বীকার্য যে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে জাতিসঙ্ঘের গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ী গণভোটের ব্যবস্থা করা হলে রাজ্যটির বাসিন্দাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ স্বাধীনতা অথবা পাকিস্তানের সাথে অন্তর্ভুক্তির সপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করবেন।

বর্তমানে স্বাধীনতার দাবিতে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের অভ্যন্তরে যে চারটি সংগঠন বেশি সক্রিয় এগুলো হলো লস্করে তৈয়বা; হিজবুল মুজাহিদিন, হরকাতুল মুজাহিদিন এবং জম্মু ও কাশ্মির লিবারেশন ফ্রন্ট (জেকেএলএফ)। এ সংগঠনগুলোর সশস্ত্র সদস্য রয়েছে এবং এরা স্বাধীনতার দাবিতে সোচ্চার। ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের অভ্যন্তরে দেশটির সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছয় লক্ষাধিক সদস্য মোতায়েন রয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত সেখানে বয়স্ক ও নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মুসলিম জনগোষ্ঠীকে অত্যাচার, হয়রানি ও নিপীড়ন করছে। এদের হাতে রাজ্যটির কোনো না কোনো অঞ্চলে প্রতিদিন এক বা একাধিক হত্যার ঘটনা ঘটছে।

কাশ্মির সমস্যায় পৃথিবীর বড় অস্ত্র প্রস্তুতকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য প্রভৃতির অস্ত্র রফতানি ব্যবসায় জমজমাট। সমস্যাটি সমাধান হয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বৈরিতার অবসান হোক তা এসব রাষ্ট্রর কোনোটি আন্তরিকভাবে চায় না।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের মদদে বিভিন্ন সময়ে কাশ্মিরে যেসব সরকার গঠিত হয় এর বেশির ভাগের পেছনে জনসমর্থন ছিল না। ভারতভুক্ত কাশ্মিরে জনসাধারণের মধ্যে ১৯৮০ পরবর্তী ক্রম-অসন্তোষ পুঞ্জীভূত হতে থাকলে সেখানকার জনমানুষ স্বাধীনতার দাবিতে সোচ্চার হতে থাকেন। এ সময় নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর উভয় দেশের সৈন্যদের মধ্যে নিত্য গুলিবিনিময় একটি স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

কাশ্মিরের যে অংশটি পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত এটি আজাদ কাশ্মির ও গিলগিট-বালতিস্থান সমন্বয়ে গঠিত। অঞ্চলটির আয়তন ৮৫ হাজার ৭৯৩ বর্গকিলোমিটার যা জম্মু ও কাশ্মিরের মোট দুই লাখ ২২ হাজার ২৩৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ৩৭ শতাংশ। কাশ্মিরের অন্তর্ভুক্ত লাদাখ অঞ্চলকে চীন বরাবর তিব্বতের অংশ হিসেবে দাবি করে আসছিল। ব্রিটিশরা ভারত বিভাজনের সময় অঞ্চলটিসহ ভারতের পূর্বাঞ্চলের অরুনাচল প্রদেশকে ভারতভুক্ত দেখালেও চীন কখনো এ দু’টি অঞ্চলের ওপর ভারতের সার্বভৌমত্ব মেনে নেয়নি। ১৯৬২ সালে ভারত-চীনের মধ্যে যে সীমান্তযুদ্ধ সংঘটিত হয় তাতে লাদাখ অঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার কিলোমিটার ভূমি নিজ দখলে নিয়ে অঞ্চলটিকে আকসাই চীন নামে অভিহিত করে চীন। সে সময় অরুনাচল রাজ্যটিও চীন নিজ দখলে নিয়েছিল। কিন্তু চীন একতরফা যুদ্ধ বিরতি করে অরুনাচলের দখল ত্যাগ করলেও আকসাই চীন দখল অব্যাহত রাখে।

চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত ১৯৬৩ সালের সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তান গিলগিট বালতিস্থানভুক্ত পাঁচ হাজার ১৮০ বর্গকিলোমিটার ভূমি চীনের বরাবরে ভারতের সাথে কাশ্মির বিরোধের স্থায়ী সমাধান না হওয়া সাপেক্ষে ছেড়ে দেয়। চীনের বরাবর পাকিস্তানের ছেড়ে দেয়া অঞ্চলটি বর্তমানে চীনের জিনজিয়ান উইঘর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের অংশ।

ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতার বিষয়ে ব্রিটিশদের পক্ষ হতে সর্বপ্রথম ১৯৪৬ সালে যে কেবিনেট মিশন প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়; তাতে বলা ছিল হিন্দু অধ্যুষিত দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলের প্রদেশ সমন্বয়ে গ্রুপ (ক), পশ্চিমাংশের মুসলিম অধ্যুষিত সিন্ধু, পাঞ্জাব, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত ও বেলুচিস্তান সমন্বয়ে গ্রুপ (খ) এবং পূর্বাংশের মুসলিম অধ্যুষিত বাংলা ও আসাম সমন্বয়ে গ্রুপ (গ) তিনটি অঞ্চলের অন্তর্ভুক্তিতে ভারতীয় ইউনিয়ন গঠিত হবে। কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে থাকবে পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, মুদ্রা ও যোগাযোগ এবং অপর দিকে প্রদেশসমূহ স্বায়ত্তশাসন ভোগ করবে। ব্রিটিশের উত্থাপিত এ প্রস্তাবের প্রতি কংগ্রেস ও মুসলিম লিগের সর্বসম্মত সমর্থন না থাকায় তা কার্যকর হতে পারেনি। পরে ব্রিটিশদের পক্ষ থেকে বলা হয় হিন্দু জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত প্রদেশ সমন্বয়ে হিন্দু রাষ্ট্র এবং মুসলিম অধ্যুষিত প্রদেশ সমন্বয়ে মুসলিম রাষ্ট্র গঠিত হবে। এর বাইরে কিছু করদমিত্র রাজ্যের শাসকদের স্বাধীন থাকা অথবা মুসলিম অথবা হিন্দু অধ্যুষিত রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হওয়া বিষয়ে পূর্ণ ক্ষমতা দেয়া হয়। সে সময় ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি প্রদেশ সমন্বয়ে গঠিত হায়দরাবাদ হিন্দু অধ্যুষিত হলেও অঞ্চলটির শাসক ছিলেন মুসলিম। হায়দরাবাদের মতো মধ্যাঞ্চলের জুনাগড় হিন্দু অধ্যুষিত হলেও এর শাসক ছিলেন মুসলিম; অন্য দিকে কাশ্মির মুসলিম অধ্যুষিত হলেও এর শাসক ছিলেন হিন্দু। এ তিন অঞ্চলের মধ্যে প্রথমোক্ত দু’টির শাসকরা প্রথমত স্বাধীন থাকা বিষয়ে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। অতঃপর ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে পরাজয় এড়াতে পাকিস্তানের সপক্ষে যোগ দেয়ার ঘোষণা দেয়া হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। কাশ্মিরের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর আকাক্সক্ষার বিরুদ্ধে এলাকাটির শাসক ভারতের সাথে অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা দিলে সেখানে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে। উভয়পক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করতে জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষী মোতায়েনের আবশ্যকতা দেখা দেয়।

ভারতবর্ষের স্বাধীনতার অব্যবহিত পর মহারাজা হরি সিংয়ের অযৌক্তিক করারোপে প্রজা অসন্তোষ দেখা দিলে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্রোহের সূত্রপাত হয়। বিদ্রোহীরা মহারাজার অত্যাচার থেকে নিজেদের বাঁচাতে পার্শ্ববর্তী পাকিস্তান রাষ্ট্রের পাঠান গোত্রপ্রধানদের সাহায্য প্রার্থনা করেন। পাঠান গোত্রপ্রধানদের সৈন্যবাহিনী মুসলিম প্রজাদের দ্বারা সমর্থনপুষ্ট হয়ে শ্রীনগর অবধি পৌঁছে গেলে মহারাজা হরি সিং ভারতের রাজধানী দিল্লিতে পলায়নপূর্বক রাষ্ট্রটির কাছে সামরিক সাহায্য প্রার্থনা করেন।

তৎকালীন ভারত সরকার দিল্লির অধীন হওয়ার শর্তসাপেক্ষে সামরিক সাহায্য প্রদানে সম্মত হয়। ফলে মহারাজা হরি সিং ২৬ অক্টোবর, ১৯৪৭ কাশ্মিরের ভারতের অন্তর্ভুক্ত হওয়াবিষয়ক দলিলে স্বাক্ষর করেন। এরপর ১৯৪৭-৪৮ সালে পাকিস্তান ও ভারতীয় সৈন্যদের কাশ্মিরের ভূখণ্ডে প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয়।

১৯৫৭ সালে কাশ্মির আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। একই সাথে দেশটির সংবিধানের অনুচ্ছেদ নং ৩৭০-এ অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি অকাশ্মিরি ভারতীয়দের তথায় ভূমি ক্রয়ের অধিকার রহিত করা হয়।

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারতের রাষ্ট্রপতি দেশটির সংবিধানের ধারা ৩৭০ এবং ৩৫ক অকার্যকর করে জম্মু ও কাশ্মিরের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা ও সুযোগসুবিধা খর্ব করেন। ধারা দু’টি অকার্যকরে জম্মু ও কাশ্মির পৃথক রাজ্যের মর্যাদা হারিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়।

কাশ্মির শর্তসাপেক্ষে ভারতের সাথে যোগ দেয়ায় শর্তের অনুবলে ভারতের সংবিধানে অনুচ্ছেদ নং ৩৭০ সংযোজিত হয়। ৩৭০ অনুচ্ছেদের কারণে জম্মু ও কাশ্মিরের জনগণ ভারতের অন্য যেকোনো অংশের জনগণের চেয়ে বেশি স্বায়ত্তশাসন ভোগ করতেন। এ অনুচ্ছেদে জম্মু ও কাশ্মিরের জন্য স্বতন্ত্র সংবিধান ও পতাকা দেয়া হয়। অনুচ্ছেদটির বলে প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, অর্থ ও যোগাযোগ কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং অবশিষ্ট বিষয়গুলো রাজ্যের বিধানসভার অধীন ন্যস্ত করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু ও কাশ্মিরের বিধানসভার অনুমোদন ছাড়া অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারত না; তবে যুদ্ধ বা বহিঃশক্তির আক্রমণে কেন্দ্রীয় সরকারের জরুরি অবস্থা জারির ক্ষমতা ছিল।

ভারতের সংবিধানের ৩৫ক ধারাটি ১৯৫৪ সালে সংযোজিত হয়। ধারাটির বলে জম্মু ও কাশ্মিরের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে কারা স্বীকৃত হবেন তা নির্ধারণের একক এখতিয়ার দেয়া ছিল রাজ্যটির বিধানসভার ওপর। এ ধারার বলে রাজ্যটির স্থায়ী বাসিন্দারা সম্পত্তির মালিকানা, সরকারি চাকরি এবং ভোটাধিকারের সুবিধা ভোগ করতেন। তা ছাড়া রাজ্যটিতে রাজ্যবহির্ভূত লোকদের প্রবেশ ঠেকাতে বিধান করা হয় যে, রাজ্যটির কোনো নারী রাজ্যবহির্ভূত কোনো পুরুষের সাথে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হলে তিনি সম্পত্তির অধিকার হতে বঞ্চিত হবেন।

অনুচ্ছেদ দু’টি বাতিল পরবর্তী জম্মু ও কাশ্মির রাজ্য ভেঙে দু’ভাগ করে লাদাখকে আলাদা করা হয়েছে। নতুন দু’টি অঞ্চলে দু’জন লেফটেন্যান্ট গভর্নরের মাধ্যমে কেন্দ্রের শাসন পরিচালিত হবে। জম্মু ও কাশ্মিরের জন্য আলাদা বিধানসভার কথা বলা হলেও লাদাখে কোনো বিধানসভা থাকবে না মর্মে জানিয়ে দেয়া হয়।

ভারত সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হলেও বর্তমান বিজেপি সরকার হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শের উত্থানে একনিষ্ঠভাবে কাজ করে চলেছে। ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের এ বার্তার মধ্য দিয়ে বিজেপি কখনো ভারতের বৃহত্তম সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মুসলমানদের সমর্থন কামনা করে না। বর্তমানে লোকসভায় বিজেপি হতে নির্বাচিত কোনো মুসলিম সংসদ সদস্য নেই। জম্মু ও কাশ্মির ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য হওয়ায় এবং রাজ্যটি এ যাবৎকাল পর্যন্ত বিশেষ সুবিধা ভোগ করায় তথায় মুসলিমদের সংখ্যা হ্রাসের কোনো সঙ্গতকারণ ছিল না। কিন্তু সংবিধানের অনুচ্ছেদ নং ৩৭০ ও ৩৫ক বাতিলে ভারতের অন্য যেকোনো অংশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী জম্মু ও কাশ্মিরে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পাবেন। এ সুযোগ প্রদানের মধ্য দিয়ে হিন্দুত্ববাদে বিশ্বাসী বিজেপি ভবিষ্যতে ভারতের একমাত্র এ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যটি হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যে রূপান্তরের পথে এগিয়ে চলছে।

সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগামে সন্ত্রাসীদের হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়া পরবর্তী ভারত-পাকিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠী এ হামলার সাথে জড়িত দাবি করলেও আন্তর্জাতিক মহলে তা স্বীকৃতি পায়নি। এমনকি খোদ ভারতেও এর বিরুদ্ধে ব্যাপক আলোচনা বিরাজমান। দেশটিতে আগামী নির্বাচন সামনে রেখে ভারতের হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকারের এটি যে একটি অপকৌশল তা সম্পর্কে বিশ্ববাসী ওয়াকিবহাল। তা ছাড়া চীনসহ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন যে পাকিস্তানের পক্ষে থাকবে তাও অনেকটা নিশ্চিত। অন্য দিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের শক্তিধর দেশগুলো এ ব্যাপারে সুনিশ্চিতভাবে কোনো পক্ষের প্রতি সমর্থন না জানিয়ে আলোচনার মাধ্যমে ঘটনার ইতি টানতে পরামর্শ দিয়ে চলেছে। এমতাবস্থায়, পহেলগামের হামলা যে বিজেপির সৃষ্ট তা বোধকরি বুঝতে বিশ্বের বিবেকবান মানুষ সক্ষম। তাই পহেলগাম ইস্যু ঘিরে মিথ্যা ও অলীক অভিযোগে কথিত সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারতের যেকোনো পদক্ষেপ হিতে বিপরীত হবে এটা অনেকটা নিশ্চিত।

লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিশ্লেষক

E-mail: iktederahmed@yahoo.com

Exit mobile version