- ২৪ ডেস্ক
নদী, ভূমি, বন থেকে শুরু করে পাহাড়—বাংলাদেশে এমন বিচিত্র ধরনের দখলদার বা ‘ডাকাত’ রয়েছে, যা দেখে বিশ্ব অবাক হতে পারে। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের মতে, এতো ধরনের দখলদার পৃথিবীর আর কোনো দেশে খুঁজে পাওয়া বিরল।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যে ধরনের ডাকাতদের দেখা যায়, তা বিশ্বের অন্যান্য দেশে বিরল। নদী দখলদার, ভূমি দখলদার, বন দখলদার, পাহাড় দখলদার—সব রকমেরই আছে এখানে।’
২০ জুলাই, রবিবার, রাজধানীর সিআইআরডিএপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এই মন্তব্য করেন। ‘বননির্ভর জনগোষ্ঠীকে বন ধ্বংস, বনায়ন অর্থনীতি, জলবায়ু পরিবর্তন ও ভূমি দখল থেকে সুরক্ষা’ শীর্ষক এই কর্মশালাটির আয়োজন করে সোসাইটি ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট (এসইএইচডি)। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।
ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ দেশের সম্পদ রক্ষায় সরকারের চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে বলেন, সামান্য পরিবেশগত সম্পদ সংরক্ষণ করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি পরিকল্পিতভাবে বন থেকে সম্পদ আহরণের ওপর জোর দেন। একই সঙ্গে অতীতে বিদেশি পরামর্শ ও অর্থায়নে বাস্তবায়িত কিছু অপরিকল্পিত বন প্রকল্পের সমালোচনাও করেন তিনি।
কর্মশালায় বনজীবী জনগোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা বলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা। তিনি উল্লেখ করেন, শুধু বনজ সম্পদের ওপর নির্ভর করে কোনো জনগোষ্ঠীর পক্ষে দারিদ্র্যসীমার নিচে থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব নয়। তার কথায়, ‘এইভাবে তারা দারিদ্র্যসীমার নিচেই রয়ে যাবে।’
এই জনগোষ্ঠীর উন্নতির জন্য তিনি শিক্ষার প্রসার এবং বৃহত্তর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাদের সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, ‘ধীরে ধীরে তারা সমাজের মূল স্রোতে আসবে।’ তবে এই অন্তর্ভুক্তির সময় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতির স্বকীয়তা যেন অক্ষুণ্ণ থাকে, সে বিষয়েও তিনি তাঁর দৃঢ় অবস্থানের কথা জানান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য তানজীমউদ্দিন খান এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসইএইচডি পরিচালক ফিলিপ গেইন।