নিমজ্জিত জাহাজের যাত্রী খড়কুটো ধরে বাঁচার চেষ্টা করে। সমূলে উৎপাটিত ফ্যাসিবাদীরা তাই করছে। ‘হাওয়া থেকে পাওয়া’ গুঞ্জনই তাদের এখন ‘খড়কুটো’। অবাস্তব, অপ্রাসঙ্গিক ও অযৌক্তিক বিষয়াদিকে পুঁজি করছে তারা। উদ্দেশ্য- পানি ঘোলা করা। মীমাংসিত, তুচ্ছাতিতুচ্ছ এবং অতীতের ঝাঁপসা বিষয়াদি সামনে এনে বর্তমানকে ‘গৌণ’ করা। জাতির সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে নিপতিত করা।
বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন সুসংহত। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের রক্তনদী সাঁতরে সবেমাত্র কূলে ভিড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশ। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার লুণ্ঠিত তোষাখানা কেবল ভরতে শুরু করেছে। স্বৈরাচার-সৃষ্ট আর্থিক সঙ্কট কাটাতে সহযোগিতা করছে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবিসহ বৃহৎ দাতা সংস্থা ও পশ্চিমা দেশ। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, পথ-ঘাটে নাগরিক দুর্ভোগ, আইনশৃঙ্খলায় শৈথিল্যের বাস্তবতা সরকারের মনযোগে রয়েছে। এ মুহূর্তের অগ্রাধিকার ফ্যাসিস্ট এবং তার দোসরদের আইনের আওতায় আনা, হাসিনার সর্বগ্রাসী দুর্নীতির বিচার, পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা, প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার এবং সর্বশেষ গণতন্ত্রে উত্তরণে গ্রহণযোগ্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন। জনআকাক্সক্ষার প্রেক্ষিৎ বিবেচনায় সরকারকে বরং এ প্রশ্নই বারবার করা যায় যে, ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বিচার সরকার কবে করবে? ইতিহাসের জঘন্যতম নিষ্ঠুর নারী শাসক শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে কবে বিচারের কাঠগড়ায় তোলা হবে? হাসিনার গ্যাস্টাপো হিসেবে কাজ করা ‘আয়নাঘর’, গুম, হত্যা, গণহত্যা পরিচালনাকারী পুলিশ, র্যাব, সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পদে আসীন ব্যক্তিদের কবে আইনের আওতায় আনা হবে? পতিত মাফিয়া সরকারের অকুণ্ঠ সমর্থক, অর্থের জোগানদাতা, ব্যাংক লুটেরা, রিজার্ভ চোর, ডিজিটাল হ্যাকার-তস্করদের এখনো কেন গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না? বিদ্যুৎ খাতে শেখ হাসিনা পরিবারের লুটপাট, মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি, ফ্যাসিবাদের দীর্ঘসহযাত্রী সিভিল ব্যুরোক্র্যাট, পুলিশ, র্যাব, আনসারের শীর্ষ পদগুলো এখনো কেন স্পর্শ করা হয়নি? ‘পেশাজীবী’ নামক শেখ হাসিনার মাফিয়াতন্ত্রের নিবিষ্ট সহগামী তথাকথিত বিচারক, ডাক্তার, শিক্ষক, আইনজীবী, সংবাদকর্মীরা কেন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে? দেড় দশক ধরে যেসব ‘মিডিয়া হাউজ’ হাসিনার স্তাবক হিসেবে মোসাহেবি করেছেÑ তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে? কিন্তু না। সমকালীন প্রাসঙ্গিকতা এড়িয়ে গত কয়েক দিন ধরে বাতাসে ছেড়ে দেয়া হয়েছে অবান্তর কিছুু ইস্যু। অফিস-আদালত, পাবলিক প্লেসের আলোচনায় প্রাসঙ্গিকতায় নিয়ে আসা হচ্ছে আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার তত্ত্ব। সম্প্রতি ঢাকার জেলা আদালত প্রাঙ্গণে গাউন পরিহিত কয়েকজন ব্যক্তির শেখ হাসিনার পক্ষে স্লোগান, সোশ্যাল মিডিয়ায় এক শ্রেণির ইউটিউবারের ড. মুহাম্মদ ইউনূসবিরোধী প্রপাগান্ডা অনেকের নজর কেড়েছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পাত্তারি গুটিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর অবৈধ চোরাপথে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয় আ.লীগের কিছু পাতিনেতা। এসব নেতা নাকি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় জড়ো হচ্ছেন! শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তারা নাকি ‘প্রবাসী সরকার’ গঠন করছে! চটকদার থাম্বনেইল দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেয়া এসব ডিজিটাল কিসসা-কাহিনী কিছু মানুষের ‘ভিউ’ কুড়াচ্ছে বটে। কিন্তু সচেতন মহল ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এসবই ‘গাঁজাখুরি গল্প’। পতিত হাসিনার ফ্যাসিবাদের হতাশ সমর্থকরা এসবের মধ্যে এখন সান্ত¦¦না খুঁজছে। জুলাই-আগস্টের রক্তাক্ত বিপ্লবই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বড় বৈধতা বলে মনে করেন তারা। তাই উপরোক্ত মৌলিক প্রশ্ন এড়িয়ে ‘ইস্যু করা হচ্ছে হাওয়ায় পাওয়া’ বিষয়। যা ফ্যাসিবাদের সমর্থকদের আলোচনার খোরাক জোগাচ্ছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগ প্রসঙ্গ সামনে আনা প্রেসিডেন্টের মতো সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ এবং সরকারকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়ার প্রয়াস ফ্যাসিবাদীদের উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে হতে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তারা শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে আফগানিস্তান থেকে আশরাফ ঘানির পালিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতির সঙ্গে মেলাচ্ছেন। মার্কিন পুতুল আশরাফ ঘানি কি কারো কাছে পদত্যাগপত্র দিতে পেরেছিলেন? লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গাদ্দাফি কি পদত্যাগ করতে পেয়েছিলেন? ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মুখে উৎখাত শেখ হাসিনার পদত্যাগের প্রশ্নও তাই অবান্তর।
অনুল্লেখযোগ্য মেঠো, প্রান্তিক বিষয়-আশয়ে যখন ফ্যাসিবাদীদের হতাশায় নিমজ্জিত করছিল, তখন পুনরায় মাঠে আসে ‘হাসিনার পদত্যাগপত্র’ প্রসঙ্গ। তিনি নাকি প্রেসিডেন্টের কাছে কোনো ধরনের ‘পদত্যাগপত্র’ দিয়ে যাননি! পদত্যাগ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্রই নাকি তার কাছে নেই। প্রসঙ্গটি এসেছে একটি জাতীয় দৈনিকের প্রধান সম্পাদককে প্রেসিডেন্ট মোঃ সাহাবুদ্দিনের দেয়া ‘বিশেষ সাক্ষাৎকার’কে কেন্দ্র করে। প্রেসিডেন্ট নাকি দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগে কোনো পদত্যাগপত্র দিয়ে যাননি।
প্রেসিডেন্টের এ মন্তব্য সমালোচনার ঢেঁউ তুলেছে সারা দেশে। মহামান্য প্রেসিডেন্টের সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা। বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইন, বিচার ও সংসদ-বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারিতার অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের ইস্যুতে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন মিথ্যাচার করেছেন।
গতকাল সোমবার তার দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা বলেন। ড. আসিফ নজরুল আরো বলেন, তার (প্রেসিডেন্ট) এই পদে থাকার যোগ্যতা আছে কি-না এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। উনি যদি তার বক্তব্যে অটল থাকেন তাহলে বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদে যাবে এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আইন, বিচার ও সংসদ-বিষয়ক উপদেষ্টা আরো বলেন, প্রেসিডেন্ট স্ববিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। কারণ তিনি নিজেই গত ৫ আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে পেছনে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছে এবং তিনি তা গ্রহণ করেছেন। তাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র তার কাছে নেই বলে প্রেসিডেন্ট যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি তার স্ববিরোধী বক্তব্য।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, গত ৫ আগস্ট উদ্ভূত পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উপদেশমূলক এখতিয়ার প্রয়োগ করে প্রেসিডেন্ট সুপ্রিম কোর্টের অভিমত বা রেফারেন্স জানতে চান। এর পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবং আপিল বিভাগের অন্য সব বিচারপতি মিলে একটি অভিমত দেন, যার প্রথম লাইনটি হচ্ছেÑ ‘দেশের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন…।’ আসিফ নজরুল বলেন, এই রেফারেন্সটিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের সব বিচারপতির স্বাক্ষর রয়েছে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে থাকা ব্যক্তি পুরো জাতির সামনে ভাষণ দিয়ে বলেন যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং তিনি তা গ্রহণ করেছেন। এ ছাড়া এ বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের অভিমত পাওয়ার পরও তিনি কিভাবে ওই বক্তব্য দেন সেটি বোধগম্য নয়। প্রায় আড়াই মাস পরে আজকে যদি প্রেসিডেন্ট বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র দেননি তাহলে এটি তো স্ববিরোধিতা হয়।
আইন উপদেষ্টা বলেন, এই যে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, প্রেসিডেন্ট সংসদ ভেঙে দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যায়। আপিল বিভাগের মতামতের ভিত্তিতে একটি নোট মন্ত্রণালয় থেকে প্রেসিডেন্টের দফতরে পাঠানো হয়। প্রেসিডেন্ট এই অভিমতটা দেখেছেন এবং গ্রহণ করেছেন। এরপর তিনি নিজে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেছেন।
এখানে আমাদের বক্তব্য অত্যন্ত পরিষ্কার। উনার বক্তব্য, উনার কর্মকাণ্ডে উনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগপত্র দিয়েছেন এবং গ্রহণ করেছেন। এখন স্ববিরোধী কথাবার্তা বলার কোনো সুযোগ নেই। যদি উনি এই বক্তব্যে অটল থাকেন তাহলে উনার প্রেসিডেন্টের পদে থাকার যোগ্যতা আছে কি-না সেটি আমাদের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভায় ভেবে দেখতে হবে। আমরা জানি, বাংলাদেশের সংবিধানে বলা হয়েছে আপনার যদি শারীরিক মানসিক সক্ষমতা না থাকে বা আপনি যদি গুরুতর অসদাচরণ করেন তখন প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকতে পারেন কি-না, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আমাদের সংবিধানে রয়েছে। একজন সর্বোচ্চ পদে থাকা মানুষ পুরো জাতির সামনে ভাষণ দিয়ে কীভাবে তিনি বলতে পারেন এটি আমাদের বোধগম্য না।
পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রের কাছে দেখাতে পারবেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে প্রেসিডেন্টের কাছেই পদত্যাগ করেন। সেটি প্রেসিডেন্টের দফতরেই থাকার কথা। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, এ নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। যেহেতু পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন বলেছেন, এখন বলছেন করেননি, তাহলে উনি কি করেছেন পদত্যাগপত্র সেটি উনাকেই জিজ্ঞেস করেন।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ অবশ্য প্রেসিডেন্টের বক্তব্য সম্পর্কে ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, হাসিনাকে উৎখাত করা হয়েছে। এখানে পদত্যাগপত্রের কোনো ভূমিকা নেই। তিনি লেখেন, ‘একটি অবৈধ সরকারকে জনগণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করেছে। এখানে পদত্যাগপত্রের কোনো ভূমিকা নেই।’
এক দিন আগে, গত ২০ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অংশ নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম অবশ্য আওয়ামী তৎপরতা ও প্রপাগান্ডার জবাব দিয়েছেন কঠোর ভাষায়। তিনি বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ‘আর রাজনীতি করার জন্য দেশে ফিরতে পারবে না। হাসিনা তার দেশে থাকা সমর্থকদের সরকারবিরোধী আন্দোলন করার জন্য উস্কানি দিচ্ছে। আমি তাদের বলতে চাই, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে রাজনীতি করার জন্য আর ফিরতে পারবে না। শুধুমাত্র ফাঁসির কাষ্ঠে দাঁড়ানোর জন্যই ফিরবে।’ তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যত পুলিশ মারা গেছে এর দায় শেখ হাসিনার। আমরা শেখ হাসিনাকে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছিলাম কিন্তু তিনি তা না করে দেশে রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। ৫ আগস্ট দুপুর পর্যন্ত আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর স্নাইপার দিয়ে গুলি চালানো হয়েছে। জুলাই-আগস্ট বিপ্লব মানুষের স্মৃতি থেকে মুছে দিতে এক শ্রেণির সংবাদমাধ্যম হাসিনার দোসর হয়ে কাজ করছে। তাই তারা জুলাই-আগস্টের ‘শহীদ’দের ‘নিহত’ বলে উল্লেখ করছে। এসব সংবাদমাধ্যমকে ফ্যাসিবাদের দোসর বলে সতর্ক করে দেন তথ্য উপদেষ্টা।
সরকারকে বিব্রত করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান প্রেসিডেন্টের : শেখ হাসিনা পদত্যাগ ইস্যুতে নতুন কোনো বিতর্ক সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বিব্রত করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মোঃ সাহাবুদ্দিন।
গতকাল সোমবার বঙ্গভবন থেকে পাঠানো এক প্রেসনোটে তিনি এ আহ্বান জানান। উপপ্রেস সচিব মুহা. শিপলু জামান স্বাক্ষরিত প্রেসনোটে বলা হয়Ñ ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ইস্যুতে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে তা জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছেÑ ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও দেশত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেয়া এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাংবিধানিক বৈধতার ওপর যত ধরনের প্রশ্ন জনমনে উদ্রেক হয়েছে সেগুলোর যাবতীয় উত্তর স্পেশাল রেফারেন্স নং-০১/২০২৪ এ মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গত ৮ আগস্ট-২০২৪ এর আদেশে প্রতিফলিত হয়েছে। উল্লেখ্য, সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি ৮ আগস্ট-২০২৪ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামত চাওয়ার প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ এই মতামত দিয়েছিলেন। মীমাংসিত এই বিষয়ে নতুন করে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বিব্রত করা থেকে বিরত থাকার জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।’
এদিকে বঙ্গভবনের একটি সূত্র জানিয়েছে, যে বিশেষ সাক্ষাৎকারকে কেন্দ্র করে প্রেসিডেন্ট এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির উদ্রেক হয়েছে সেটি ছিল গত ২৬ সেপ্টেম্বর মহামান্য প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদকের একটি ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’। এ ধরনের সাক্ষাৎ তিনি ওই প্রতিবেদকসহ অনেককেই দিয়েছেন। তাতে কুশলাদি জিজ্ঞেস, ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় অনেক প্রসঙ্গের অবতারণা হয়। সেটি কোনোভাবে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশযোগ্য কোনো ‘সাক্ষাৎকার’ নয়।
inqilab