সরকারের বিরুদ্ধে স্বার্থান্বেষী মহলের অপপ্রচারে কান না দিয়ে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের কথা জনগণের সামনে তুলে ধরতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। খুনি ও সন্ত্রাসীদের ষড়যন্ত্র এবং জনগণের ভাগ্য নিয়ে যে কোনো ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আন্দোলনের নামে অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে তাঁর কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আন্দোলনের নামে অগ্নিসংযোগ করলে কেউ রেহাই পাবে না। জনগণ আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও উন্নয়ন পেয়েছে। তাই দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগকে আবারও ভোট দিন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তরিকতা, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কারণে আমরা দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করতে পেরেছি।
১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ এবং ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ২৯ বছরে বিএনপি-জামায়াতসহ অন্যান্য সরকার বাংলাদেশের উন্নয়নে কী করেছে– তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। ২৯ বছর ছিল জনগণের জন্য অন্ধকার ও বেদনার সময়। ওদের হাতে দেশের কোনো ভবিষ্যৎ নেই, কারণ ওরা জনগণের কথা চিন্তা করে না।
সরকার রেমিট্যান্সে ৫ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী বাংলাদেশিদের ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইবিএ (অস্ত্র ছাড়া সবকিছু) পরিকল্পনার আওতায় ২০৩২ সাল পর্যন্ত বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশ সুবিধা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। ব্রাসেলসে গতকাল বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রু এবং লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জেভিয়ার বেটেলের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি।
এসব বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে যাচ্ছে। কভিড-১৯ মহামারি এবং যুদ্ধের জন্য সমস্যায় রয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী বেলজিয়ামের প্রতি বাংলাদেশে, বিশেষ করে ওষুধ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও জাহাজ নির্মাণে বৃহত্তর বিনিয়োগ করার অনুরোধ জানিয়েছেন। উভয় নেতা ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করতে সম্মত হয়েছেন। দুটি দেশই এ খাতে অনেক সমৃদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে ১১৭টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে।
শেখ হাসিনা লুক্সেমবার্গের কাছে ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন খাতে আরও সহযোগিতা চেয়েছেন। মোমেন জানান, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও ব্যবসা বাড়াতে শিগগির বাংলাদেশ ও লুক্সেমবার্গের মধ্যে একটি এয়ার সার্ভিস চুক্তি হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া বৈঠকে আইসিটি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়।
প্রধানমন্ত্রী ফিরছেন আজ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে’ যোগদান শেষে দেশের উদ্দেশে গতকাল বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস ত্যাগ করেছেন। তাঁকে বহনকারী বিমান আজ শুক্রবার দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা।
সূত্র : সমকাল
