আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ‘আসন ভাগ-বাটোয়ারা’ এবং ‘আমি-ডামি’ আখ্যা দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, প্রহসনের ভোট জমছে না দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সরকার। এখন তারা ভোটারদের হুমকি-ধামকি দিতে শুরু করেছে। এমনকি বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ওএমএস, কৃষকের মাঝে সার এবং বীজ বিতরণ বন্ধের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। এভাবে গোটা দেশকে অভাবনীয় নরকপুরি ও জেলখানা বানানো হয়েছে।
সোমবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমানের হুমকি-হুংকার দেখে মনে হচ্ছে তিনি অস্তিত্ব ভূলে আওয়ামী সেবাদাসত্ব করছেন। প্রতিদিন গণভবন থেকে আসা ফরমান ঘোষণা করছেন। ইসি আনিছুরের জেনে রাখা উচিত- ‘বাংলাদেশের সংবিধানে ভোট দেওয়াও যেমন মানুষের অধিকার, তেমনি ভোট না দেওয়াও মানুষের মৌলিক অধিকার। ভোট দেওয়ার জন্য কাউকে বাধ্য করা যাবে না।’ কিন্তু প্রতিটি জনপদে নৌকা এবং ডামিরা ভোট দিতে না গেলে জনগণকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে নীরব এই আনিছুররা। ৭ জানুয়ারি যারা ভোটকেন্দ্রে যাবে না তাদেরকে গায়েবি নাশকতার মামলার ভয় দেখানো হচ্ছে। অথচ অবৈধ নির্বাচনকে না বলার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। আপনি বাধা দেওয়ার কে? ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের জোর করে নিয়ে যাওয়া যে অপরাধ তা আপনি জানেন না?
বিএনপির এই নেতা বলেন, মানিকগঞ্জে বিএনপির লিফলেট পড়ার কারণে ডলি প্লাজা মার্কেটের এক পোশাক ব্যবসায়ীকে আটক করে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে এখন নির্বাচন কমিশন নব্য নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি ইসির উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আপনাদের রক্তচক্ষু দেখার জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। এই একদলীয় ভোট জনগণ প্রত্যাখান করেছে। যত ভয়ভীতি-কেরামতি যাই করেন ভোট কেন্দ্রে কোনো ভোটার পাবেন না। এই ফলাফল ঘোষণার নির্বাচনের বিরুদ্ধে সারা বাংলাদেশ আজ ঐক্যবদ্ধ।
রিজভী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের মোট গ্রেপ্তার ১৯৫ জনের অধিক নেতাকর্মী, মোট ৮টি মামলায় আসামী ৭৮৫ জনের অধিক নেতাকর্মী, ২০ জন আহত এবং নিহত ১ জন।
বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে, চার-পাঁচদিন গুম রেখে তাদেরকে অত্যাচার করে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হলেও কেন্দ্রীয় নেতারা জানতে পারছেন না। আটক নেতাদের দিয়ে বিএনপি ও ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের জড়িয়ে শেখানো কথা বলানো হচ্ছে। সেগুলো আবার সরকার নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারও করানো হচ্ছে। ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবিরকে চারদিন গুম রেখে তারপর হঠাৎ হাজির করা হয়েছে। তাকে দিয়ে জোর করে গাজীপুরে ট্রেন লাইনে নাশকতাসহ বিভিন্ন ঘটনায় স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে। আরো অনেক নাশকতায় জেষ্ঠ্য নেতাদের নাম জড়ানোর উদ্দেশ্যে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
সমকাল