Site icon The Bangladesh Chronicle

নিখোঁজ আতিকের বাবার আহাজারিতে কাঁদলেন সবাই

নিখোঁজ আতিকের বাবার আহাজারিতে কাঁদলেন সবাই

গত দশদিন ধরে নিখোঁজ সন্তানকে ফিরে পেতে বাবার আহাজারিতে কাঁদলেন সবাই। তার আকুতি আর চিৎকার করে কান্নায় শুধু তার ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আবেদন ছিল।

বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি উপস্থিত হয়ে তার নিখোঁজ সন্তান ও ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহসভাপতি আতিকুর রহমান রাসেলকে ফিরে পেতে সবার সহায়তা চান।

এসময় তিনি বলেন, এই দশটি দিন তার একাকার হয়েছে সন্তানকে ফিরে পেতে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে তিনি সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে গেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গেছেন। এমনকি আদালতেও গেছেন। তবে এখনো কোন সন্ধান মেলেনি তার ছেলের। এসময় তার কান্নায় দলের অনেক নেতাকর্মীর চোখেই পানি আসে। অনেককে চোখ মুছতে দেখা গেছে এসময়ে।

আতিকের বাবা আবুল হোসাইন সরদার বলেন, ‘আমার নম্র, ভদ্র ছেলে। বকা দিলেও কান্না করত। আমার সোনার ছেলে ১১ দিন ধরে কোথায় আছে, কী খায়। আমার ছেলেকে আমার বুকে ফেরত চাই।’

ছেলের নিখোঁজ হওয়ার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে ১ জুলাই সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ। সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে।’

ছেলে নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়ে তাঁর আবুল হোসেন সরদার ২ জুলাই লালবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তিনি বলেন, পুলিশের কাছে বারবার গিয়েছি। ফলাফল শূন্য৷ ওই এলাকার সিসিটিভি খুঁজে দেখলেই জানা যাবে কারা নিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সবাই জানি আতিকুর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আছে। কিছুটা বিরতি দিয়ে সরকার গুমের সংস্কৃতিতে ফিরে আসছে। বিএনপি-ছাত্রদল যেন সরকারের অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে উচ্চকিত না হয়, তাই মনোযোগ সরাতে এসব গুম করা হচ্ছে। মাফিয়া-সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কোনো আয়নাঘরে আতিকুরকে বন্দী রাখা হয়েছে।’

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, ছাত্র দলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম, সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান, ঢাকা কলেজ শাখার সভাপতি শাহীনুর রহমান শাহীন ও সাধারণ সম্পাদক জুলহাস মৃধা প্রমুখ। কান্নারত আতিকের বাবাকে এই নেতারা ছাড়াও অন্যান্য নেতাকর্মীরা সান্ত্বনা দেন। তবে তারাও ছিলেন মলিনমুখে, আনেকে চাপা কান্নায়।

গত ১ জুলাই রাজধানীর আজিমপুর অগ্রণী স্কুলের সামনে থেকে থেকে তাকে উঠিয়ে নেয় সাদা পোশাকের লোকজন। এরপর থেকে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন এমনকি ছাত্রদল ও বিএনপির বিভিন্ন পর্যায় থেকে তার সন্ধানের জন্য নানান দৌড়ঝাঁপ করেও আতিকের কোন সন্ধান বের করতে পারেননি। গত বুধবার নিখোঁজ আতিকুর রহমানের রাসেলের সন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাস (সশরীরে হাজির কর) রিট করেন আতিকের বাবা আবুল হোসাইন সরদার।

samakal

Exit mobile version