- ২৪ ডেস্ক
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘জাতির পিতা’ অভিধাটি ইতিহাসের কোনো অংশ নয়, বরং এটি রাষ্ট্রকে সংকুচিত করে একটি দলকে ফ্যাসিস্ট বানানোর হাতিয়ার। তার মতে, শেখ মুজিবুর রহমান জাতির পিতা না হলেও স্বাধীনতা অর্জনে তার ভূমিকা ও ত্যাগকে স্বীকার করতে হবে। শুক্রবার বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম ‘মুজিববাদ’কে একটি ফ্যাসিস্ট ও বিভাজনের আদর্শ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ‘মুজিববাদ মানে জোরপূর্বক গুম, হত্যা, ধর্ষণ, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং দেশের সম্পদ লুট করে বিদেশে পাচার করা। এর অর্থ ইসলামোফোবিয়া, সাম্প্রদায়িকতা, সংখ্যালঘুদের ভূমি দখল এবং বিদেশি শক্তির কাছে জাতীয় সার্বভৌমত্ব বিক্রি করা।’
তার ভাষ্যমতে, ‘ষোল বছর ধরে মুজিবকে রাজনৈতিকভাবে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল অস্ত্র হিসেবে এবং এই মতবাদের আড়ালে গুম, খুন, লুটপাট ও গণহত্যা চালানো হয়েছে।’
এনসিপি আহ্বায়ক শেখ মুজিবের শাসনামলের সমালোচনা করে বলেন, তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ ভারতের একটি ‘ঔপনিবেশিক রাজ্যে’ পরিণত হয়েছিল। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ১৯৭২ সালে ‘গণবিরোধী’ সংবিধান আরোপ করা হয় এবং এর মাধ্যমে লুটপাট, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ও একদলীয় বাকশাল একনায়কতন্ত্রের ভিত্তি স্থাপিত হয়।
নাহিদ ইসলামের মতে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ‘মুজিব পূজা’ ও ‘মুক্তিযুদ্ধ পূজা’ জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়ে নাগরিকদের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছিল, যা ছিল ‘গণতন্ত্রের ছদ্মাবরণে আধুনিক জমিদারি’। তিনি দাবি করেন, ‘২০২৪ সালের গণবিদ্রোহ এই জমিদারিকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি, পরিবার বা মতাদর্শকে আর কখনো নাগরিকদের অধিকার কেড়ে নিতে বা বাংলাদেশের ওপর ফ্যাসিবাদ আরোপ করতে দেওয়া হবে না।’ তার মতে, একটি সার্বভৌম ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলাই তাদের সংগ্রাম, যেখানে কোনো দল বা নেতা জনগণের ঊর্ধ্বে থাকবে না। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কারো সম্পত্তি নয়, এটা গণপ্রজাতন্ত্র।’