Site icon The Bangladesh Chronicle

দেশে হঠাৎ বেড়েছে ফিলিস্তিনি ‘কেফিয়াহ’ রুমালের বিক্রি

ইসরায়েল-হামাস (ফিলিস্তিন) যুদ্ধের এক মাস পেরিয়ে গেছে। এই এক মাসে ফিলিস্তিনের সমর্থনে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। এসব বিক্ষোভ–সমাবেশে অনেককেই ফিলিস্তিনের পতাকা প্রদর্শন করতে দেখা গেছে।

অনেকে আবার গলায়–মাথায় ফিলিস্তিনি রুমাল (কেফিয়াহ) জড়িয়ে মিছিল–সমাবেশ যোগ দেন। সাধারণত বাংলাদেশে এর ব্যবহার খুব দেখা না গেলেও গাজায় ইসরায়েলের সর্বাত্মক হামলার কারণে ফিলিস্তিনের কেফিয়াহ রুমাল ও পতাকা বিক্রি বেড়েছে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ও গুলিস্তান এলাকার ফুটপাত এবং চকবাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনের কেফিয়াহ রুমাল ও পতাকা বিক্রি হঠাৎ বেড়ে গেছে। তবে এগুলো বেশি বিক্রি হয় ফিলিস্তিনের সমর্থনে সভা-সমাবেশ কর্মসূচির আগে।

দেশের বাজারে সাধারণত আমদানি করা কেফিয়াহ বিক্রি হয়। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখন স্থানীয়ভাবে অনেকেই এটি তৈরি করে বাজারে ছাড়ছেন।

রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেটের শাহিন আতর হাউসের স্বত্বাধিকারী মো. শাহিন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এগুলো সাধারণত মাসে দুই-পাঁচটা বিক্রি হতো। হঠাৎ চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দোকানে গোটা পঞ্চাশ যা ছিল, সব বিক্রি শেষ। এই মুহূর্তে আমাদের কাছে আমদানি করা কেফিয়াহ নেই। আমদানির পাশাপাশি দেশেও এখন এগুলো তৈরি হচ্ছে।’

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের ফলে দেশে কেফিয়াহর বিক্রি গত এক মাসে ১০ গুণের মতো বেড়েছে। কেফিয়াহ আসে চীন, ভারত, পাকিস্তান, দুবাই, সৌদি আরব প্রভৃতি দেশ থেকে। ‘লাগেজ পার্টির’ মাধ্যমেও কেফিয়াহ আসে। আমদানি করা কেফিয়াহর স্বল্পতার পাশাপাশি দাম বেশি হওয়ার কারণে দেশে তৈরি কেফিয়াহর বিক্রি বেড়েছে। দেশে তৈরি কেফিয়াহর চাহিদা বেশি ঢাকার বাইরে।

ইসলামিক পণ্যের প্রতিষ্ঠান মাশহুরের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মো. সোহেল আহমেদ বলেন, কেফিয়াহ নিয়মিত বিক্রি হয় না। চাহিদা পেলে সে অনুযায়ী সরবরাহ করা হয়। এখন চাহিদা বেড়েছে।

ঢাকার কয়েকজন খুচরা বিক্রেতা জানান, যুদ্ধের আগে তাঁরা মাসে ১৫–২০টি কেফিয়াহ বিক্রি করতেন। গত এক মাসে প্রতিদিন ২০০–৩০০টি বিক্রি হয়েছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, তাঁরা আগে মাসে ২০০–৪০০টি কেফিয়াহ বিক্রি করতেন। গত এক মাসে বিক্রি হয়েছে দেড় হাজার থেকে পাঁচ হাজারের মতো।

একেকটি বিদেশি কেফিয়াহর দাম ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। ভালো মানের কেফিয়াহ দুই হাজার টাকায়ও বিক্রি হয়ে থাকে। অন্যদিকে দেশি কেফিয়াহ মিলছে ২০০–৬০০ টাকায়।

এদিকে গুলিস্তানের আশপাশে ও চকবাজারে ফিলিস্তিনের পতাকা আকারভেদে ১০০-৫০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। অনেকে নিজেদের পছন্দমতো আকারের পতাকাও তৈরি করিয়ে নিচ্ছেন।

ইসলামিক পণ্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বশির উদ্দিন বলেন, ‘মানুষ এসব পণ্য আবেগে কেনেন। যুদ্ধের কারণে কেফিয়াহ বিক্রি অন্তত ১০ গুণ বেড়েছে। এখনো খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারদের কাছে চাহিদা জানাচ্ছেন। বিদেশি কেফিয়াহ আনা যেহেতু সময়সাপেক্ষ, সেহেতু অনেকেই দেশে এটি তৈরি করছেন।’

কেফিয়াহ বাংলাদেশে ফিলিস্তিনি রুমাল নামে বেশি পরিচিত। অনেকে এটাকে ফিলিস্তিনের প্রয়াত নেতা ইয়াসির আরাফাতের রুমাল বলেন।

সূত্র : প্রথম আলো

Exit mobile version