Site icon The Bangladesh Chronicle

দেশের শ্রম পরিস্থিতি ও মার্কিন চাপ


আমাদের দেশসহ বিশ্বের অনেক দেশেই শ্রমিক ও শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে শ্রমিক নেতারা অনেক বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে থাকেন। বিশেষ করে প্রতি বছর ১ মে তারিখে তথা রীতিমত উৎসব করা হয়। সাধারণ শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের দাবিতে মিছিল-মিটিংয়ে অনেক বক্তব্য-বিবৃতি দেয়া হয়। এসব বক্তা তথা শ্রমিক নেতারা খুবই দরদ দিয়েই বলেন, শ্রমিকদের দাবি মানতে হবে, শ্রমিকদের সঠিক মজুরি দিতে হবে। শ্রমিকদের ঘামে ও শ্রমেই সভ্যতা গড়ে উঠেছে। কিন্তু একদিন পরই শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আর কোনো তৎপরতা পরিলক্ষিত হয় না। যারা এ ধরনের বক্তৃতা-বিবৃতি দেন তাদের দেশে এবং তাদের আশপাশেই লাখ লাখ শ্রমিক ন্যায্য অধিকার পায় না। শ্রমিকরা কী অবস্থায় আছে, কেমন আছে, তারও কোনো খোঁজখবর নেয়া হয় না।

শ্রমিকরা বেসরকারি শিল্প-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে যেমন কাজ করেন তেমনিভাবে রাষ্ট্রীয় বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানেও কাজ করে থাকেন। সাধারণত সরকারি ও বেসরকারি শিল্প-প্রতিষ্ঠানে যারা কাজ করেন, তাদেরকেই শ্রমিক হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে। কিন্তু দেশে অসংগঠিত অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে লাখ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, ১৭ কোটি মানুষের দেশে শ্রমিক সংখ্যা প্রায় ৬ কোটি। তারা বিভিন্ন ছোট-বড় কলকারখানায় নানা শ্রেণী ও পেশায় নিয়োজিত আছেন। তারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কোনো না কোনোভাবে প্রতিদিন বা প্রতি মাসে কিছু টাকা রোজগার করেন। কিন্তু এই শ্রেণী ও পেশার মানুষের প্রতিদিন বা প্রতি সপ্তাহে কত ঘণ্টা শ্রম দিতে হবে, দেশের শ্রম আইনে উল্লেখ করা থাকলেও তা বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেই।

বাংলাদেশে শ্রমিকদের জন্য ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন’ নামে একটি আইন রয়েছে, সেই শ্রম আইনে শ্রমিকদের দৈনিক ও সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা নির্ধারণ করা হলেও নিম্নতম মজুরি বা বেতন-ভাতার কোনো উল্লেখ নেই। শ্রম আইনের কর্মঘণ্টা ও ছুটিবিষয়ক নবম অধ্যায়ের ১০০ ধারার দৈনিক কর্মঘণ্টা বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘কোনো প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক কোনো প্রতিষ্ঠানে সাধারণত দৈনিক আট ঘণ্টার অধিক সময় কাজ করিবেন না বা তাহাকে দিয়া কাজ করানো যাইবে না। তবে শর্ত থাকে যে ধারা ১০৮-র বিধান সাপেক্ষে কোনো প্রতিষ্ঠানে উক্তরূপ কোনো শ্রমিক দৈনিক দশ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করিতে পারিবেন।’ সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা সম্পর্কিত ১০২ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক কোনো প্রতিষ্ঠানে সাধারণত সপ্তাহে আটচল্লিশ ঘণ্টার অধিক সময় কাজ করিবেন না বা তাহাকে দিয়া কাজ করানো যাইবে না। (২) ধারা ১০৮-এর বিধান সাপেক্ষে, কোনো প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক কোনো প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে আটচল্লিশ ঘণ্টার অধিক সময়ও কাজ করতে পারিবেন; তবে শর্ত থাকে যে, কোনো সপ্তাহে উক্তরূপ কোনো শ্রমিকের মোট কর্ম-সময় ষাট ঘণ্টার অধিক হইবে না এবং কোনো বৎসরে উহা গড়ে প্রতি সপ্তাহে ছাপ্পান্ন ঘণ্টার অধিক হইবে না।’

কিন্তু বাংলাদেশে শ্রমিকরা কত ঘণ্টা শ্রম দিয়ে কী পরিমাণ মজুরি পায় বা ন্যায্য মজুরি পায় কি না, তা অনুসন্ধান করে কোনো সমীক্ষা কি শ্রমিক সংগঠনগুলো করে থাকে? করে থাকলে তার কোনো আনুষ্ঠানিক রিপোর্ট বা প্রতিবেদন কি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। আমরা যারা নিয়মিত পত্রপত্রিকা পড়ি এবং দেশ ও জনগণের খোঁজখবর রাখার জন্য সর্বক্ষণ নিয়োজিত আছি, তারা কোনো খবর পাই না। অথচ বাংলাদেশে শ্রমিক সংগঠন ও শ্রমিক ফেডারেশন একটি বা দুটি বা একশত দুইশত নয়, বরং হাজার হাজার শ্রমিক সংগঠন ও ফেডারেশন রয়েছে। বাংলাদেশে শ্রমিকদের সবচেয়ে বড় খাত হচ্ছে পরিবহন ও গার্মেন্টস খাত।

সরকারের শ্রম অধিদফতরের ওয়েবসাইটের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, শ্রমিক সংগঠনগুলোর জাতীয় ফেডারেশনের সংখ্যা ৩৭। এক শ্রমিক নেতা বলেছেন, জাতীয় ফেডারেশন বর্তমানে ৪৩টি, আর কনফেডারেশন হচ্ছে ৯টি। দেশে ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা হচ্ছে ৪ হাজার, তন্মধ্যে সক্রিয় হচ্ছে ১১০০। অভিযোগ রয়েছে, এসব ট্রেড ইউনিয়ন ও শ্রমিক ফেডারেশনের অধিকাংশই কাগজে-কলমে আছে, বাস্তবে অধিকাংশেরই যথাযথ কোনো তৎপরতা নেই।

তৈরী পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানায়, পোশাক খাতে বর্তমানে নিবন্ধিত ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা ১ হাজার ৩৩। তার মধ্যে ৮৯৫টি গঠিত হয়েছে রানা প্লাজা ধসের পর। ২০১৪ সালে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ১৮৮টি ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধিত হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নিবন্ধন হয়েছে ২০১৯ সালে, ১২৪টি। গত ২০২০ সালে করোনাকালেও নিবন্ধন পেয়েছে ৯৯টি ইউনিয়ন।

সারা দেশে শ্রমজীবীর সংখ্যা কত, তার কোনো আপডেট হিসাব সরকার বা শ্রমিক সংগঠনগুলোর কাছে নেই। তবে ২০১৬ থেকে ১৭ সালের মধ্যে পরিচালিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপ অনুসারে, বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় নিয়োজিত শ্রমিকের সংখ্যা ৬ কোটির বেশি। এর মধ্যে ৮৫ দশমিক ১ শতাংশই কাজ করে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। এক শ্রমিক নেতা বলেছেন, বাংলাদেশে সংগঠিত ও তুলনামূলক কম সংগঠিত শ্রমিক সংখ্যা এক কোটি হবে। শ্রমিক সংখ্যার ব্যাপারে বিভিন্ন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা নিজ নিজ খাতের শ্রমিক সংখ্যার একটি গড়পড়তা হিসাব দিয়ে থাকেন। সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী জানিয়েছেন, পরিবহন খাতে শ্রমিক সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ। বাংলাদেশ হোটেল-রেস্টুরেন্ট-সুইটমিট-বেকারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আক্তারুজ্জামান খান জানিয়েছেন, এ খাতে শ্রমিক সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ। বাংলাদেশ হকার ওয়ার্কার্স ট্রেড ইউনিয়ন সেন্টারের সভাপতি মো: মুরশিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সারা দেশে হকারের সংখ্যা প্রায় দশ লাখের মতো হবে।

জাতীয় দোকান কর্মচারী ফেডারেশন নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সারা দেশে ৬০ লাখের বেশি দোকান কর্মচারী আছে। এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক বলেন, দোকান কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অবিলম্বে দোকান কর্মচারীদের জন্য নি¤œতম মজুরি বোর্ড গঠন করার মাধ্যমে বেতন-সম্পর্কিত বিষয়ের সুষ্ঠু সমাধান দাবি করেন তিনি। দোকান কর্মচারীদের পক্ষে ১৫ দফা দাবি তুলে ধরে তিনি বলেন, দোকান কর্মচারীকে মালিকের স্বাক্ষরযুক্ত নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র দিতে হবে। দোকান কর্মচারীদের শ্রম আইন অনুযায়ী সাপ্তাহিক দেড় দিন ছুটি দিতে হবে।

১৫ দফা দাবির মধ্যে আরো রয়েছে ৮ ঘণ্টা কাজের পর অতিরিক্ত সময়ের জন্য ওভারটাইম, বছরে ২টি উৎসব বোনাস, শ্রম আইন অনুযায়ী সার্ভিস বেনিফিট প্রদান, সরকারি উদ্যোগে কল্যাণ তহবিল গঠন, কর্মচারীদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু, কর্মস্থলে নিরাপত্তা ও আহত-নিহত শ্রমিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান, কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের জন্য ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, ট্রেড অধিকার নিশ্চিতকরণ, সামাজিক সুরক্ষা প্রদান, প্রতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধ ও জাতীয় সংসদে দোকান কর্মচারীদের প্রতিনিধিত্ব।

দেশের সাধারণ মানুষ; বিশেষ করে শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, অশিক্ষিত এবং দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, তাদের সহায়তা ও তদারকি করার জন্য একটি মন্ত্রণালয় রয়েছে। মন্ত্রণালয়টির নাম হচ্ছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, তার একজন মন্ত্রী আছেন, একজন সচিব আছেন। এ মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি জাতীয় মজুরি বোর্ড আছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সুপারিশের ভিত্তিতেই দেশে জাতীয় নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এ বোর্ডের দায়িত্ব হচ্ছে দেশের শিল্প ও বাণিজ্য খাতের শিল্প কারখানার শ্রমিকদের জন্য নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করা ও তার বাস্তবায়নে তদারকি করা।

আন্তর্জাতিক শ্রম আইন অনুযায়ী একজন শ্রমিকের ৮ ঘণ্টা কাজ করার কথা হলেও বাংলাদেশে কলকারখানা থেকে শুরু করে দোকান কর্মচারী, হোটেল শ্রমিক ও পরিবহন শ্রমিকসহ সর্বক্ষেত্রেই প্রতিদিন কাজ করতে হয় ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা। শ্রম আইনে যেখানে একজন শ্রমিক সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টা কাজ করার কথা, সেখানে শ্রমিকদের সপ্তাহে ১০০ ঘণ্টাও কাজ করতে হয়। অতিরিক্ত সময়ে শ্রম দেয়ার জন্য কোনো ওভারটাইম দেয়া হয় না। শ্রম আইন অনুযায়ী, একজন শ্রমিক সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করার পর একদিন ছুটি পাবে, কিন্তু অধিকাংশ শ্রমিক তা পায় না। অন্যদিকে সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সপ্তাহে পাঁচ দিন কাজ করেই দুই দিন ছুটি পান।

সব মিলিয়ে বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি কাক্সিক্ষত মানের কাছাকাছিও নেই। বরং দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যে শ্রমিকদের ওপর নির্ভর করে, সেই শ্রমিকদের বেতন-ভাতা থেকে শুরু করে শ্রম ঘণ্টার বাস্তব অবস্থা খুবই করুণ। অমানুষিক শ্রম দেয়ার পর দেশের শ্রমিকদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। একটা বয়স শেষে তথা বৃদ্ধ বয়সে এসে শ্রমজীবীদের আর শ্রম দেয়ার সামর্থ্য থাকে না। এ কয়েক কোটি শ্রমিকের যেহেতু চাকরি জীবন শেষে কোনো পেনশনের ব্যবস্থা নেই বা গ্র্যাচুয়িটি নেই তাদের শেষ বয়সে জীবনধারণ করা আরো কঠিন হয়ে পড়ে।
এমনি এক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সফরে আসছেন ইউনাইটেড স্টেটস ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভের (ইউএসটিআর) এক কর্মকর্তা। ইউএসটিআর দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ব্রেনডেন লিঞ্চ আগামী ২০ থেকে ২৪ মে পর্যন্ত সফরকালে বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে সরকার, বাণিজ্য সংগঠন ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর সাথে বৈঠক করবেন। বিভিন্ন কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে যে, বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট নয়। বাংলাদেশের শ্রম পরিবেশ ও মান আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে আসার জন্য ওয়াশিংটন এক যুগের বেশি সময় ধরে তাগাদা দিয়ে আসছে। বিশেষ করে শ্রমিক সংগঠনের স্বাধীনতা এবং দরকষাকষির অধিকার, জোরপূর্বক শ্রম, শিশুশ্রম, কর্মস্থলের নিরাপত্তা, পেশার ক্ষেত্রে বৈষম্য, শ্রমিকের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, শ্রম ইউনিয়ন করার অধিকার, কর্মক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য শর্তাবলি, শ্রমিকের কর্মঘণ্টাসহ সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে দেশটির। সফররত মার্কিন এ কর্মকর্তা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্তরের নেতা ও কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করবেন। এসব বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক শ্রম আইনের মান অনুযায়ী বাংলাদেশে শ্রম আইনের পূর্ণ বাস্তবায়ন চাইবে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে আগামী দিনের বাণিজ্য পরিস্থিতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাচ্ছে কঠিন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের আগে বাংলাদেশ তাদের শ্রম পরিস্থিতির বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে উন্নয়ন করুক। এ ছাড়া বাংলাদেশের নির্বাচনের আগে মার্কিন কর্মকর্তার বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে এ সফরটির অন্য একটি তাৎপর্য রয়েছে। এমনিতেই বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়, মার্কিন কর্মকর্তা বাংলাদেশ সফরকালে তেমন কোনো ভালো খবর পাবে না, বরং নেতিবাচক পরিবেশই পাবে। আর এ নেতিবাচক পরিস্থিতির ওপর যখন মার্কিন কর্মকর্তা তার সরকারের কাছে রিপোর্ট পেশ করবে, তখন বাংলাদেশ সরকারের ওপর একটি চাপ তৈরি হবে। এ চাপটা যতটা না, বাণিজ্যিক তার চেয়ে বেশি হবে রাজনৈতিক কারণে। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে; বিশেষ করে আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঢাকার সম্পর্ক খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন মার্কিন সরকার বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে শ্রম পরিস্থিতি দেখার জন্য এক কর্মকর্তাকে পাঠানো আর একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে দেখছেন। তবে আমাদের অভিমত, বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতিকে কোনো পক্ষ রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করে শ্রমিকদের প্রকৃত সমস্যা সমাধান করবে। বাংলাদেশে শ্রমিকরা যে বিভিন্নভাবে বঞ্চিত হচ্ছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যথাযথ উদ্যোগ নিলেই তার অবসান হতে পারে। আর আমাদেরও প্রত্যাশা শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাদের জীবনমানের উন্নয়ন হবে।

Exit mobile version