Site icon The Bangladesh Chronicle

দীর্ঘ অপেক্ষার পর মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীর দল, গ্রুপ ছবি তুলে প্রশংসায় ভাসছেন হাইকমিশনার

 


Jamuna TV

আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া:

দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী যাওয়া শুরু হয়েছে। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্র নিয়ে ৫৩ জন কর্মীর প্রথম দলটি মালয়েশিয়ায় পৌঁছেছে। কূটনীতিকরা বলছেন, মালয়েশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের নতুন মাইলফলক এটি।

গত ৯ আগস্ট ৫৩ জন কর্মীকে মালয়েশিয়া বিমানবন্ধরে স্বাগত জানান দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার। এ সময় কর্মীদের সাথে হাইকমিশনার ছবিও তোলেন। হাইকমিশনের শ্রম উইংয়ের মিনিস্টার নাজমুস সাদাত সেলিমসহ মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ও দুই দেশের সাংবাদিকরাও তখন বিমানবন্ধরে উপস্থিত ছিলেন।

হাইকমিশনারের সাথে তোলা গ্রুপ ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভাইরাল ছবির ক্যাপশনে অনেকে লেখেন, শ্রমিক বান্ধব হাইকমিশনারকে স্যালুট। আরেকজন লিখেছেন, আগে কখনো এই ব্যবহারের নজির আছে ভদ্রলোকের? যদি প্রবাসীদের সাথে এরকম পূর্বের নজির থাকে তাহলে কথা নেই, স্যালুট।

উল্লেখ্য,২০১৮ সালের আগস্টে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ বন্ধের ঘোষণা আসে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে। দীর্ঘ আলোচনা ও যোগাযোগের পর গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর দুই দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা সই হয়। পরে গত জুন মাসে ঢাকায় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে শ্রমবাজার খোলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে জুনের মধ্যে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়ে ঘোষণা দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। কিন্তু দীর্ঘসূত্রতা কিছুতেই পিছু ছাড়ছিল না মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের। সব দীর্ঘসূত্রতা কাটিয়ে অবশেষে দেশটিতে যাচ্ছেন বাংলাদেশি কর্মীরা।

বিএমইটি সূত্র বলছে, ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে এসব কর্মী ফ্যাক্টরি ওয়ার্কার হিসেবে মালয়েশিয়ায় গেলেন। তাদের বেতন ১৫০০ মালয়েশিয়ান রিংগিত, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৩২ হাজার টাকা। শর্ত অনুসারে তাদের চুক্তি তিন বছরের। ওয়ান ওয়ে প্লেন ভাড়া, বাসস্থান ও যাতায়াত ফ্রি পাবেন কর্মীরা। তবে খাবার ব্যবস্থা করতে হবে নিজেকে।

দীর্ঘ চার বছরের অচলায়তন ভেঙে মালয়েশিয়ার নতুন করে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ শুরু হওয়াতে হাই কমিশনার গোলাম সারোয়ারে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বাংলাদেশের ও মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আগামী তিন বছরের মধ্যে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের প্রায় ৫ লক্ষাধিক নতুন লোকের কর্মসংস্থান হবে এবং এর মাধ্যমে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশের প্রেরিত মোট রেমিট্যান্স তিন বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে বলে আশা করছেন তিনি।

এ দিকে ৫৩ কর্মী মালয়েশিয়ায় আসার পর সার্বক্ষণিক তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন হাইকমিশনের সংশ্লিষ্টরা। কর্মীরা সেখানে ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন হাইকমিশনের লেবার মিনিস্টার নাজমুস সাদাত সেলিম। অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই কর্মীরা দুয়েকদিনের মধ্যে নতুন কাজে যোগ দেবেন, এমনটিই জানা গেছে নিয়োগ কর্তাদের কাছ থেকে।

এদিকে ৫৩ জন বাংলাদেশি কর্মীকে গ্রহণ করার পর দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নোটিশের মাধ্যমে তাদের স্বাগত জানানো হয়। নোটিশে বলা হয় এমওইউ স্বাক্ষর অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ দেয়া হবে। এ পর্যন্ত ৮০টি কোম্পানির নিয়োগকর্তার কাছ থেকে আবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে এবং সেগুলো সত্যায়নের জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসে পাঠানো হয়েছে। সত্যায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই বাংলাদেশি কর্মীরা মালয়েশিয়ায় যাবেন।

/এডব্লিউ

Exit mobile version