Site icon The Bangladesh Chronicle

ঢাবির হলে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে কিল–ঘুষি ও গলা চেপে ধরে ‘নির্যাতন’

Prothom Alo

আরিফুল ও তরিকুল তৃতীয় বর্ষে (২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) অধ্যয়নরত। অন্যদিকে ছাত্রলীগের কর্মী সিফাত উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ ও মাহমুদুর ইংলিশ ফর স্পিকারস অব আদার ল্যাংগুয়েজেস বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।

ভুক্তভোগী মো. আরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ক্লাস-পরীক্ষার কারণে আমি ও তরিকুল বেশ কিছুদিন ধরে ছাত্রলীগের কর্মসূচি ও গেস্টরুমে অনিয়মিত হয়ে যাই। এ নিয়ে সিফাত ও মাহমুদুর আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাঁরা ইতিপূর্বে আমাদের হল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করলেও আমাদের কক্ষ হল প্রশাসনের মাধ্যমে বরাদ্দ হওয়ায় তা করতে পারেননি।’

আরিফুল আরও বলেন, ‘রোববার (গতকাল) রাতে আমি ও তরিকুল কক্ষে ঘুমাচ্ছিলাম। রাত আড়াইটার দিকে সিফাত উল্লাহ ও মাহমুদুর রহমান অর্পণ কক্ষে এসে আমাদের দুজনকে তাঁদের কক্ষে (৩৫১ নম্বর) ডেকে নিয়ে যান। সেখানে তাঁদের আরও চার বন্ধু উপস্থিত ছিলেন। সেখানে প্রথমে তাঁদের সঙ্গে বেয়াদবি করার অভিযোগ তুলে আমাদের গালিগালাজ করা হয়।’

আরিফুল বলেন, ‘একপর্যায়ে সিফাত ও মাহমুদুর উত্তেজিত হয়ে আমাদের দিকে রড-স্ট্যাম্প নিয়ে তেড়ে আসেন। এ সময় অন্য বন্ধুরা তাঁদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন।

এরপর তাঁরা রড-স্ট্যাম্প ফেলে আমাদের কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে আমাদের দেয়ালের সঙ্গে গলা চেপে ধরেন। আমার হাঁপানির সমস্যা থাকায় শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ইনহেলার নিতে হবে জানালেও তাঁরা আমাকে ছাড়েননি। তখন অসুস্থ হয়ে ওই কক্ষেই আমি শুয়ে পড়ি। তখনো তাঁরা আমাদের গালিগালাজ করছিলেন।’
আরিফুলের ভাষ্যমতে, ভোররাত চারটার সময় তাঁদের দুজনকে ওই কক্ষ থেকে বের হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। যাওয়ার সময় সোমবার (আজ) দুপুরের মধ্যে হল থেকে বের হয়ে না গেলে মেরে হলের পানির ট্যাংকের পেছনে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন তাঁরা। পরে ভয়ে রাতেই তাঁরা দুজন হল থেকে বের হয়ে গেছেন।

এদিকে তরিকুল ইসলামের ভাষ্যেও মারধরের ঘটনার একই বর্ণনা পাওয়া গেছে।
জানতে চাইলে সিফাত উল্লাহ মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ছাত্রলীগের রাজনীতি করি। আমার রাজনীতি নষ্ট করার জন্যই হয়তো এসব অভিযোগ করা হচ্ছে।’

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে মাহমুদুর রহমানের মুঠোফোনে কল করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

সিফাত ও মাহমুদুর সূর্য সেন হল শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী ইমরান সাগরের অনুসারী। মারধরের ঘটনার বিষয়ে ইমরান বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। এর সঙ্গে ছাত্রলীগ বা আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। মারধরের বিষয়টি প্রমাণিত হলে হল কর্তৃপক্ষ যে ব্যবস্থা নেবে, সেখানে আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে।’
এ বিষয়ে জানতে সূর্য সেন হলের প্রাধ্যক্ষ মো. মকবুল হোসেন ভূঁইয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

Exit mobile version