Site icon The Bangladesh Chronicle

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ছাত্র–শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সব ধরনের দলীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত পৌনে নয়টা পর্যন্ত সিন্ডিকেটের জরুরি সভা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়–সংলগ্ন লাউঞ্জে এ সভা হয়। সভায় সিন্ডিকেটের ১৭ সদস্যের মধ্যে ১৫ জন অংশ নেন।

বৈঠকে অংশ নেওয়া সিন্ডিকেট সদস্য মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়মা হক বিদিশা রাতে প্রথম আলোকে বলেন, রাজনীতির বিষয়ে সিন্ডিকেট সদস্যরা মতামত দিয়েছেন। সেগুলো পর্যালোচনা করে শিগগিরই একটি সারসংক্ষেপ বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

কোটা সংস্কারের আন্দোলনের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা যে ৯ দফা দাবি দিয়েছিলেন, সেগুলোর মধ্যে একটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দলীয় লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দলীয় রাজনীতি বন্ধ চেয়ে বিক্ষোভ–মিছিল ও সমাবেশ করেছেন একদল শিক্ষার্থী।

এর মধ্যে গতকাল বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক (এফএইচ) হলে চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। একই রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন একদল শিক্ষার্থী।

এই দুই ঘটনা নিয়ে দিনভর বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। এভাবে মানুষকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদ জানান বিভিন্ন দল, সংগঠন ও নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ইতিমধ্যে এফএইচ হলের ছয় শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব ধরনের দলীয় রাজনীতি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে দেশের অন্তত ৩২টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ৪টি সরকারি কলেজ ও ১০টি সরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ২৬টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

prothom alo

Exit mobile version