Site icon The Bangladesh Chronicle

ঢাকা-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক সহজ করার ক্ষেত্রে ভারতের যা ভূমিকা

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,জো বাইডেন ও শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের একটি বৈঠকে, ২০১৪
  • Author,শুভজ্যোতি ঘোষ
  • Role,বিবিসি নিউজ বাংলা, দিল্লি

ঘটনাটা ঠিক বছরখানেক আগের। দিল্লির জওহর ভবনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে প্রশ্নটা ছুঁড়ে দেয়া হল : র‍্যাবের ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তোলার চেষ্টায় বাংলাদেশ কি ভারতের সাহায্য চেয়েছে? ঢাকায় তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো সেরকমই দাবি করেছেন!

মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী এমনিতে খুবই সপ্রতিভ একজন কর্মকর্তা, সব প্রশ্নের ঝটিতি উত্তর থাকে তার ঠোঁটের ডগায়। কিন্তু এই প্রশ্নটায় তাঁকেও রীতিমতো অপ্রস্তুত দেখাল, যেন কী বলা যায় বুঝেই উঠতে পারছেন না।

শেষে কিছুটা আমতা আমতা করেই তিনি যা বললেন তার মর্মার্থ হল, বাংলাদেশ যদি এরকম অনুরোধ জানিয়েও থাকে তাহলে তার ডিটেলস বা ভারত তাতে সাড়া দিয়ে কিছু করেছে কি না, সেগুলো নিয়ে জনসমক্ষে আলোচনা করা বোধহয় ঠিক হবে না।

ঘটনাচক্রে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর সে দিনই আবার সরকারি সফরে ঢাকায় গেছেন, দেখা করছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও।

না, এরপর আর কোনও তথ্য মিডিয়াকে জানানো হয়নি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তদবির করার জন্য ভারতকে অনুরোধ জানানো হয়েছে – এই বক্তব্য দিল্লি যেমন নিশ্চিত করেনি, তেমনি আবার অস্বীকারও করেনি।

সম্পর্কিত খবর :

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,গত এক দশকে নরেন্দ্র মোদী ও শেখ হাসিনার মধ্যেও গড়ে উঠেছে ব্যক্তিগত সমীকরণ

আসলে ভারতের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ – এই মুহুর্তে উভয়েরই দারুণ কূটনৈতিক সম্পর্ক।

ফলে ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে কোনও অস্বস্তি তৈরি হলে সেটা নিরসনের জন্য ভারতের চেষ্টা চালানোটা কোনও অস্বাভাবিক কিছু নয়, আর সেটা বহুদিন ধরে হয়েও আসছে বলে পর্যবেক্ষকরা জানাচ্ছেন।

তবে বিষয়টা বেশ স্পর্শকাতর বলেই এটা নিয়ে কোনও পক্ষই প্রকাশ্যে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন – যদিও গত বছর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. কে. আবদুল মোমেনের র‍্যাব নিয়ে সেই মন্তব্য ছিল অবশ্যই ব্যতিক্রম।

তা ছাড়া ভারত যেহেতু দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী শক্তি, তাই এই অঞ্চলের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ বাংলাদেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে তারা ভারতের মতামতকে আমলে নিয়ে থাকে, এটাও বহু দিন ধরেই লক্ষ্য করা গেছে।

যদিও ইদানীং ভারতকে কিছুটা এড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি বাংলাদেশের সঙ্গে ‘ডিল’ করছে এরকম একটা প্রবণতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তার পরেও ঢাকা ও ওয়াশিংটনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারতের একটা ছায়া বা প্রভাব যে আছেই, তা অস্বীকার করার উপায় নেই।

অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে যেভাবে আমেরিকার কড়া সমালোচনা করেছেন এবং দুই দেশের সম্পর্কে নানা অস্বস্তিকর বিষয় দেখা যাচ্ছে, তাতে ভারতের সেই ‘ভূমিকা’ যথারীতি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

‘অভিন্ন স্বার্থ, অভিন্ন চ্যালেঞ্জ’

ভারতের সাবেক শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিবিদ রিভা গাঙ্গুলি দাস বছরতিনেক আগেও ঢাকায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন।

তবে তিনি এ কথা মানতে রাজি নন যে বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার কোনও প্রশ্নে মতবিরোধ হলে ভারত তাতে নাক গলিয়ে থাকে।

ছবির ক্যাপশান,রিভা গাঙ্গুলি দাস
বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন :

“বরং আমি তো বলব বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। ভারত যদি তাদের কোনও বিষয় নিয়ে তৃতীয় কোনও দেশের ওপর প্রভাব খাটাতে যায় তাহলে তারাই বা সেটা পছন্দ করবে কেন?”, বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন সাবেক এই হাইকমিশনার।

“তবে হ্যাঁ, বাংলাদেশ ও আমেরিকা উভয়েই ভারতের খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু দেশ। দিল্লির সঙ্গে এই দুটো ‘বাইল্যাটারালে’ অনেক কমন ইন্টারেস্ট (স্বার্থ) যেমন আছে, তেমনি অনেক কমন চ্যালেঞ্জও আছে।”

“সেগুলোর কোনওটা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ভারত নিজের প্রয়োজনেই সেগুলো অ্যাড্রেস করতে চাইবে, এর মধ্যে তো কোনও ভুল নেই। কে না চাইবে তার দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মধ্যেও সম্পর্কটা ভাল থাকুক!” আরও যোগ করেন মিস গাঙ্গুলি দাস।

তবে বাস্তবতা হল, সাম্প্রতিকালে বাংলাদেশ তাদের নিজস্ব কিছু সমস্যার সমাধানের চেষ্টায় তৃতীয় পক্ষের ওপর প্রভাব খাটাতে ভারতের সাহায্য চেয়েছে – আর সেটা প্রকাশ্যেই।

যেমন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরার পথকে সুগম করতে ভারত যাতে ‘বন্ধু’ মিয়ানমারের ওপর প্রভাব খাটায় বাংলাদেশ একাধিকবার সেই অনুরোধ জানিয়েছে এবং দুদেশের যৌথ ঘোষণাপত্রেও তার উল্লেখ আছে।

রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণে রূপপুর পরমাণু কেন্দ্রের সরঞ্জাম নিয়ে আসা রুশ জাহাজ যখন বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়তে পারেনি, ভারত তখন ঢাকার সাহায্যে এগিয়ে এসেছে এবং মস্কোর সঙ্গে দিল্লির সুসম্পর্ককেও সেখানে কাজে লাগানো হয়েছে।

ছবির ক্যাপশান,শুভ্রকমল দত্ত

দিল্লিতে পররাষ্ট্রনীতির বিশেষজ্ঞ ও বিজেপির ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষক শুভ্রকমল দত্ত মনে করেন, একই জিনিস আমেরিকার সঙ্গেও না-হওয়ার কোনও কারণ নেই।

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলছিলেন, “দিল্লি ও ঢাকার সম্পর্কটা এখন এমনই যে শেখ হাসিনা যদি নরেন্দ্র মোদীকে কোনও কঠিন অনুরোধও জানান, তাহলেও সেটা কিছুতেই ফেলা সম্ভব নয়।”

“আর নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ব্যক্তিগত হৃদ্যতাও যে কতটা নিবিড়, দু’দিন আগে জাপানেই তো আমরা তার প্রমাণ পেলাম।”

“ফলে বাইডেন ও হাসিনার মধ্যে কোনও বিষয়ে দূরত্ব তৈরি হলে ব্যক্তিগতভাবে নরেন্দ্র মোদী সেখানে হস্তক্ষেপ করে ভুল বোঝাবুঝি দূর করার ক্ষমতা রাখেন, এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আর তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে তিনি সেটা করবেন বলেও আমি নিশ্চিত”, জানাচ্ছেন শুভ্রকমল দত্ত।

এমন কী, ২০১৪ ও ২০১৮তে বাংলাদেশের প্রশ্নবিদ্ধ সাধারণ নির্বাচনকে যুক্তরাষ্ট্র যাতে মেনে নেয়, সে ব্যাপারেও ভারত যথেষ্ঠ ‘সক্রিয় ভূমিকা’ নিয়েছিল – মনে করিয়ে দিচ্ছেন তিনি।

‘সমস্যার নাম র‍্যাব ও রাশেদ’

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের মধ্যে ভারতের ভূমিকা নিয়ে বিবিসি বাংলা দিল্লিতে একাধিক সাবেক কূটনীতিবিদের সঙ্গে কথা বলেছে, যাদের মধ্যে কেউ কেউ ঢাকায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে বা দিল্লিতে বাংলাদেশ ডেস্কেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

তবে বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বলে তাঁদের অনেকেই নিজেদের নাম প্রকাশ করতে চাননি। কিন্তু তাঁরা এই প্রসঙ্গে এমন অনেক ‘ডিটেল’ শেয়ার করেছেন, যা খুবই কৌতূহলোদ্দীপক।

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,র‍্যাব গঠনের সময় আমেরিকা-সহ পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থন ছিল

এমনই একজন বলছিলেন, “বাংলাদেশে গণতন্ত্র রক্ষার নামে আমেরিকা যেভাবে বিরোধী দলকে প্রকাশ্যে তোল্লাই দিয়ে থাকে বা বিরোধী নেতাদের সঙ্গে ঘন ঘন বৈঠক করে, ভারতও কিন্তু সেটা পছন্দ করে না। বাংলাদেশ তুলনায় ছোট দেশ বলেই বোধহয় ওখানে ওটা করা যায়।”

“ভারতেও যদি মার্কিন দূতাবাস এ দেশের বিরোধীদের নিয়ে এই জিনিস করত, তাহলে দিল্লিতেও কোনও শাসক দলই সেটা পছন্দ করত না বলাই বাহুল্য। ফলে এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের ক্ষোভ যুক্তিসঙ্গত বলেই দিল্লির বিশ্বাস।”

এই বিষয়টি ভারত সাম্প্রতিক অতীতে আমেরিকার সঙ্গে তাদের আলোচনায় একাধিকবার উত্থাপন করেছে বলেও তিনি জানাচ্ছেন।

এমন কী, বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন না-তুলে সে দেশের জনগণের ‘ম্যান্ডেট’কে মেনে নিতেও আমেরিকাকে তারা বহুবার পরামর্শ দিয়েছে।

আর একজন সাবেক ভারতীয় কূটনীতিবিদ বলছিলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে বিষয়গুলো নিয়ে মনোমালিন্য, সেগুলো এমন কোনও গুরুতর ইস্যু নয় যে আপস রফা করা যাবে না – এমনটাই দিল্লির ধারণা।

তাঁর কথায়, “যেমন ধরুন, দুটো সমস্যার কথা বলতে পারি। এক, র‍্যাবের কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা। যে এলিট ফোর্স আমেরিকার পরামর্শেই তৈরি হয়েছিল সেটা এখন কীভাবে তাদেরই চক্ষুশূল হয়ে উঠল, বাংলাদেশ সরকারের এই প্রশ্ন কিন্তু ভারতেরও প্রশ্ন।”

ছবির ক্যাপশান,বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। মে, ২০২৩

“আর দ্বিতীয় সমস্যাটা হল রাশেদ চৌধুরীর আমেরিকায় রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে থাকা।”

“বাংলাদেশের জাতির জনকের যিনি আত্মস্বীকৃত খুনী, ফাঁসির আসামি হওয়া সত্ত্বেও তিনি কীভাবে বহাল তবিয়তে আমেরিকায় থাকেন এবং কেন তাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে না, ভারত এটাকেও বৈধ প্রশ্ন বলেই মনে করে।”

এই দুটো ইস্যু নিয়ে ভারত বিভিন্ন পর্যায়ে আমেরিকার সঙ্গে একাধিকবার কথাবার্তা বলেছে বলেও তিনি আভাস দিচ্ছেন।

ভারতে পর্যবেক্ষকরা অনেকে এ কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বাংলাদেশের জন্মলগ্নে যুক্তরাষ্ট্র সর্বশক্তিতে বাধা দিয়েছিল এবং সমকালীন সেই ইতিহাস মাত্র পঞ্চাশ বছরের পুরনো বলেই মানুষের স্মৃতি থেকে তা হারিয়ে যায়নি।

“ফলে ভারত মনে করে ঢাকা ও ওয়াশিংটনের সম্পর্কে কিছু ‘রাফ প্যাচ’ থাকবেই – তবে সেটা দূর করার জন্য ভারতের কিছু করণীয় থাকলে তারা সেটা করতেও দ্বিধা করবে না”, বলছিলেন এমনই একজন কূটনৈতিক বিশ্লেষক।

সম্প্রতি বাংলাদেশ তাদের যে বহুপ্রতীক্ষিত ‘ইন্দো-প্যাসিফিক’ নীতি ঘোষণা করেছে, তাতেও যেহেতু চীনের দিকে না-ঝুঁকে একটা ভারসাম্য বিধানের কথা বলা হয়েছে সেটাও আমেরিকার সঙ্গে তাদের সম্পর্কে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে দিল্লিতে পর্যবেক্ষকদের অভিমত।

ভারতের স্বার্থটা কী?

দিল্লি-ঢাকা-ওয়াশিংটনের এই কূটনৈতিক ত্রিভুজে পারস্পরিক স্বার্থের অঙ্কটা যে প্রবলভাবেই আছে তা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই।

ভারতের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কোনও ‘লাভ’ না-থাকলে তারা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক সহজ করার চেষ্টায় ঢুকতেই যাবে না, তাও বলাই বাহুল্য।

Skip Twitter post
Twitter কনটেন্টের জন্য কি অনুমতি দেবেন?

এই নিবন্ধে Twitterএর কনটেন্ট রয়েছে। কোন কিছু লোড করার আগে আমরা আপনার অনুমতি চাইছি, কারণ তারা হয়ত কুকি এবং অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকতে পারে। আপনি সম্মতি দেবার আগে হয়ত Twitter কুকি সম্পর্কিত নীতি এবং ব্যক্তিগত বিষয়ক নীতি প়ড়ে নিতে চাইতে পারেন। এই কনটেন্ট দেখতে হলে ‘সম্মতি দিচ্ছি এবং এগোন’ বেছে নিন।

ভিডিওর ক্যাপশান:সতর্কবাণী: বিবিসির নয় এমন ওয়েবসাইটের কনটেন্টের জন্য বিবিসি দায়ী না

End of Twitter post

মাসচারেক আগে আন্তর্জাতিক সাময়িকী ‘দ্য ডিপ্লোম্যাটে’ অনেকটা এ প্রসঙ্গেই একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির গবেষক তথা এশিয়া সোসাইটির ফেলো আনু আনোয়ার।

সেই নিবন্ধে তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশকে নিয়ে আমেরিকা ও চীনের মধ্যে ‘ভূ-রাজনৈতিক যুদ্ধ’ চললেও এই লড়াইতে আসলে কিন্তু ভারতেরই জয় হচ্ছে, কারণ “নিজেদের সম্পদ খরচ না-করেও তারা বেজিং ও ওয়াশিংটনকে পরস্পরের বিরুদ্ধে খেলিয়ে দিতে পারছে।”

কেন তিনি এমন একটা মূল্যায়ন করছেন, নিবন্ধে তারও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন হার্ভার্ডের ওই গবেষক।

তিনি সেখানে যুক্তি দিয়েছেন, “বাংলাদেশে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, ততই কিন্তু সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য পশ্চিমা শক্তিগুলো বাংলাদেশের ওপর তাদের চাপ বাড়াচ্ছে।”

“অথচ বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র হওয়া সত্ত্বেও ভারত কিন্তু মোটেই সেই রাস্তায় হাঁটছে না। বরং আওয়ামী লীগ সরকারকে বাইরের এই চাপ থেকে আড়াল করার জন্য যা যা করা সম্ভব তার সবই তারা করছে।”

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,কোয়াড জোটের শরিক হিসেবে ভারত ও আমেরিকা আরও কাছাকাছি এসেছে

আনু আনোয়ারের মতে, ভারত জানে গণতন্ত্র নিয়ে বাংলাদেশকে প্রচ্ছন্নভাবেও চাপ দিতে গেলে সেখানে তাদের সমর্থনের ভিত নড়ে যাবে – তাই তারা এই ‘দায়িত্ব’টা ছেড়ে দিয়েছে আমেরিকার মতো পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর।

উল্টোদিকে তারা নিজেরা এমন সব পদক্ষেপ নিচ্ছে, যাতে শেখ হাসিনার সরকার কিছুতেই বিপর্যয়ের মুখে না-পড়ে।

ওই নিবন্ধের বক্তব্য অনুযায়ী, এতে করে দিল্লির ওপর ঢাকার নির্ভরশীলতা ক্রমশ বাড়ছে এবং ভারত এটা সচেতনভাবে করছে কারণ তারা জানে “যতদিন আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে ক্ষমতায় থাকবে ততদিন তারা প্রত্যাশারও বেশি পাবে।”

ঠিক একই কারণে ভারত যে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক সহজ করার জন্য সক্রিয় ও সচেষ্ট থাকবে – তা সহজেই বোধগম্য।

 

Exit mobile version