Site icon The Bangladesh Chronicle

ডলার সংকটের নেতিবাচক প্রভাব কোম্পানির মুনাফায়

ডলার সংকটের নেতিবাচক প্রভাব কোম্পানির মুনাফায়ডলার
জুনে আর্থিক হিসাব বছর শেষ হয়, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এমন কোম্পানিগুলোর গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে মুনাফায় সার্বিকভাবে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে। অনেক কোম্পানি এর জন্য ডলার সংকটকে দায়ী করছে। অতিরিক্ত মূল্যে ডলার কিনতে গিয়ে বেড়েছে পরিচালন খরচ। একই সঙ্গে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বিক্রি কমছে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মুনাফায়।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দেশীয় উৎপাদন ও সেবা খাতসংশ্লিষ্ট ১৭৮টি কোম্পানি চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে ১২৪টির কম-বেশি মুনাফা হয়েছে। তবে ৫৫টির মুনাফা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। ২৮ কোম্পানির ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারের বিপরীতে নামমাত্র ১ থেকে ৯ পয়সা পর্যন্ত মুনাফা হয়েছে। অন্যদিকে লোকসান করেছে ৫৫টি কোম্পানি, যার ২২টি গত বছর মুনাফায় ছিল। অবশ্য ১৬ কোম্পানি লোকসান থেকে মুনাফায় এসেছে। এদিকে নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও ৬২ কোম্পানি আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। আর ৩৮টি কোম্পানি পর্ষদ সভা আহ্বানই করেনি। ধারণা করা হচ্ছে, নির্ধারিত সময়ে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ না করা কোম্পানিগুলোর সিংহভাগই আর্থিকভাবে রুগ্‌ণ অবস্থায় বা বন্ধ আছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৫৫ কোম্পানির মধ্যে ২২৮টি দেশীয় সেবা ও উৎপাদন খাতসংশ্লিষ্ট।

সার্বিক নেতিবাচক ধারার মধ্যেও কিছু কোম্পানি ভালো মুনাফা করেছে। লোকসানে থাকা ৫৫ কোম্পানির সাকল্যে ১০০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।

মুনাফায় থাকা ১২৪ কোম্পানির মধ্যে ৭০টির মুনাফা গত হিসাব বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। এর মধ্যে ১০ শতাংশের বেশি মুনাফা বেড়েছে ৪৪টির।
শেয়ারপ্রতি এক টাকা বা তার বেশি মুনাফা করার তথ্য দিয়েছে মোট ৪২ কোম্পানি। ১০ টাকার শেয়ারের বিপরীতে সর্বাধিক ৯ টাকা ২৪ পয়সা করে মুনাফার (ইপিএস) তথ্য দিয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পদ্মা অয়েল। গত বছরের একই সময়ে এর ইপিএস ছিল ৭ টাকা ২০ পয়সা। এ ছাড়া যমুনা অয়েলের ইপিএস ৫ টাকা ৯৮ পয়সা থেকে বেড়ে ৭ টাকা ৫৯ পয়সায় উন্নীত হয়েছে। উভয় কোম্পানি জানিয়েছে, ব্যাংক আমানতের সুদের হার বৃদ্ধি তাদের মুনাফায় ইতিবাচক প্রভাব রেখেছে।
ইপিএসের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বেসরকারি ওষুধ কোম্পানি রেনাটা শেয়ারপ্রতি ৮ টাকা ৮৯ পয়সা মুনাফা করেছে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১০ টাকা ৮৬ পয়সা। স্কয়ার ফার্মার ইপিএস সামান্য বেড়েছে। ৬ টাকা ২০ পয়সা থেকে ৬ টাকা ৭৭ পয়সায় উন্নীত হয়েছে। তবে ইপিএসে এগিয়ে থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে সোনালী পেপার, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, ইউনাইটেড পাওয়ার, ডরিন পাওয়ার, এপেক্স ফুটওয়্যারসহ কিছু কোম্পানির মুনাফা কমেছে।

দেশীয় ইলেকট্রনিকস পণ্য উৎপাদন ও বিপণনকারী কোম্পানি ওয়ালটন গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৫২ পয়সা করে লোকসান করে। এ বছর ৬ টাকা ৬৭ পয়সা করে মুনাফা করার তথ্য দিয়েছে। বিএসআরএম স্টিলও শেয়ারপ্রতি ৯৩ পয়সা লোকসান থেকে ১ টাকা ২১ পয়সা মুনাফা করেছে বলে জানিয়েছে।
লোকসান থেকে বেরিয়ে আসার কারণ ব্যাখ্যায় ওয়ালটন জানিয়েছে, গত হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে ডলার ও ইউরোর বিনিময়জনিত লোকসান ছিল ২৬২ কোটি টাকারও বেশি, যা এ বছর ২ কোটি টাকার নিচে নেমেছে। পাশাপাশি অর্থায়ন খরচও কমানো হয়েছে। এতে কোম্পানির মুনাফা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

সমকাল

Exit mobile version