Site icon The Bangladesh Chronicle

টিএসসিতে ত্রাণ দিতে আসা মানুষের ঢল

ট্রাকে ভরে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে আসা হয়েছে টিএসসিতে গণত্রাণ সংগ্রহ কেন্দ্রে জমা দেওয়ার জন্য
ট্রাকে ভরে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে আসা হয়েছে টিএসসিতে গণত্রাণ সংগ্রহ কেন্দ্রে জমা দেওয়ার জন্যসাজিদ হোসেন

দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যার্ত মানুষকে সহায়তা করার জন্য আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচিতে মানুষের ঢল নেমেছে। শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগে অংশীদার হতে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী নগদ অর্থ কিংবা ত্রাণসহায়তা পৌঁছে দিতে আসেন বিপুলসংখ্যক মানুষ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে সকাল ১০টা থেকে টিএসসির ফটকে স্থাপিত বুথে ত্রাণ সংগ্রহ শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে মানুষের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। কেউ ব্যক্তিগত গাড়িতে, কেউ ভ্যানে করে, কেউ ছোট ট্রাকে করে ত্রাণ নিয়ে আসতে থাকেন। বুথে থাকা শিক্ষার্থীরা দাতার নাম ও পণ্যের বিবরণ লিখে রাখছিলেন খাতায়। বেলা গড়াতে টিএসসিতে ত্রাণ দিতে আসা মানুষের ঢল নামে। সুশৃঙ্খলভাবে ত্রাণ সংগ্রহের কাজ করতে শিক্ষার্থীরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যান।

ত্রাণ নিয়ে আসা বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগমে বিকেলের দিকে টিএসসি এলাকা ছিল লোকারণ্য। টিএসসির ফটকে বুথ সামলাতে হিমশিম খান শিক্ষার্থীরা। কেউ বোতলজাত পানি ও খাওয়ার স্যালাইন, কেউ মুড়ি-চিড়া, কেউ বিস্কুট, আবার কেউ খেজুরসহ বিভিন্ন শুকনা খাবার নিয়ে আসেন। স্বেচ্ছাসেবক ছাত্র-ছাত্রীরা সেগুলো হাতে বা কাঁধে করে টিএসসির অভ্যন্তরীণ ক্রীড়াকক্ষ ও ক্যাফেটেরিয়ায় নিয়ে জমা করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই উদ্যোগে অনেকে নগদ অর্থ দিয়েও শরিক হন। বুথে বসা ছাত্রীরা খাতায় অনুদানের অঙ্ক লিখে টাকা জমা রাখেন। আজ সেখানে ৮৬ লাখ টাকা জমা পড়েছে বলে আন্দোলনের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার সদস্য আবদুল্লাহ সালেহীন জানিয়েছেন।

নগদ অর্থের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের ত্রাণসামগ্রী জমা পড়েছে। সেগুলো জমা করায় টিএসসির ক্রীড়াকক্ষ ও ক্যাফেটেরিয়া বিশাল ত্রাণভান্ডারে পরিণত হয়েছে। ত্রাণ প্যাকেটজাত করার কাজও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা ত্রাণ নির্ধারিত বস্তায় ভর্তি করছেন। রাতে ট্রাকে করে সেগুলো পাঠানো হবে দুর্গত এলাকায়।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে বিপুল পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী জমা পড়ে। সেই সঙ্গে জমা হয় ২৯ লাখ ৭৬ হাজার ১৭৩ টাকা। দিনভর ত্রাণ সংগ্রহের পর রাতে কয়েকটি ট্রাকে করে সেগুলো দুর্গত এলাকায় পাঠানো হয়।

এদিকে বন্যায় আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারে অংশ নিতে গতকালই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা ২০০টি স্পিডবোটে করে দুর্গত এলাকায় গেছেন বলে আন্দোলনের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার সদস্য আবদুল্লাহ সালেহীন জানিয়েছেন।

দেশের পূর্বাঞ্চলে বন্যা শুরু হওয়ার পর গত বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণত্রাণ সংগ্রহের এই উদ্যোগের ঘোষণা দেন৷ আন্দোলনের সব সমন্বয়ক ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিজ নিজ জেলা-উপজেলায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও জনসাধারণের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বেচ্ছাসেবী দল গঠনের আহ্বান জানান বাকের। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল সবার সঙ্গে সমন্বয় করে বন্যাকবলিত মানুষের জন্য দুর্গতদের জন্য রেসকিউ অপারেশন ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

prothom alo

Exit mobile version