জনপ্রতিনিধি ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ!

  • নাজমুল হক
  •  ১৪ মার্চ ২০২৩, ২০:১৮

আমরা যখন ছাত্র ছিলাম, তখন পাঠ্যক্রমে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জুতা আবিষ্কার’ পড়েছিলাম। হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রী জাতিকে ধুলো থেকে রক্ষা করার কোনো উপায় বের করতে পারেননি। একজন মুচি এক জোড়া চামড়ার জুতা আবিষ্কার করে জাতিকে ধুলাবালু থেকে মুক্ত করে দিলো। ফেসবুকে ভিডিও ফুটেজ দেখতে পেলাম একজন এমপির নীতির কথা ফুটন্ত বক্তৃতা। তার মেয়ের দ্বিতীয় জামাই ঢাকা সিটি করপোরেশন দক্ষিণের ৩০ নম্বর ওয়াড কমিশনার পদপ্রার্থী হিসেবে ইলেকশনের জনসভা। সংসদ সদস্য তার জামাইকে নিয়ে গবিত ও উৎফুল্ল! কারণ জামাই ইরফান একজন ভালো ছেলে, শ্বশুরের গুণধর জামাই সম্পর্কে মূল্যায়ন- ১. তিনি চাঁদাবাজ নন; ২. সন্ত্রাসী নন; ৩ টাকার অভাবী নন। এ জন্য তিনি গর্বিত। জামাইয়ের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পেলে সংসদ সদস্য বেয়াইকে নিয়ে লাঠি দিয়ে পেটাবেন।” কথাগুলো শুনতে খুবই চমৎকার ও সুমধুর।

কিছু দিন পর হিন্দুদের দুর্গাপূজার দিন বাঙালি জাতি কী দেখতে পেল? নিরাপত্তা সংস্থা র‌্যাব ও ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার আলম সাহেব একজন ওয়ার্ড কমিশনারকে মদ, বেআইনি অস্ত্র রাখার অপরাধে গ্রেফতার করে এক বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন। পিতা ও শ্বশুর সংসদ সদস্য হয়েও তাকে (সন্ত্রাসী জামাইকে) রক্ষা করতে পারেননি। কী বিচিত্র দৃশ্যের বাংলাদেশ, সংসদ সদস্যের পছন্দ, চিহ্নিত সন্ত্রাসের রাজা জামাই! আবার জনপ্রতিনিধি। সংসদ সদস্য শ্বশুর এই রকম জামাই পেয়ে গর্বিত। বেয়াই সাহেব জাল দলিল করে সরকারি ব্যাংকের জায়গা দখল করে আছে এক যুগেরও বেশি সময়। সেই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ও জায়গা দখল, নদী-খাল দখলের অসংখ্য অভিযোগ। সংসদ সদস্য ও তার ছেলের কার্যকলাপ দেশের আইন আদালত ও সংবিধান পরিপন্থী। তারপরও বেয়াই ও জামাইয়ের পরিবার এবং তাদের নীতি-নৈতিকতা নিয়ে বেয়াই সাহেব গর্বিত! হায়রে বাংলাদেশ, একী তোমার প্রতিচ্ছবি?

বিভিন্ন জেলায় সরকারি অফিসে ডিজিটাল ব্যানার আছে- ‘আমি ও আমার অফিস দুর্নীতিমুক্ত।’ অথচ সেই সব অফিসে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না। এভাবে আর কতকাল বাঙালি জাতিকে বোকা বানানো যাবে! দু’টি ঘটনা মনে পড়ে গেল।

১. আশির দশকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারি ছাত্র সংগঠনের একজন ছাত্রনেতা ছিল তার নাম ছিল আবদুল হামিদ। তিনি চলাফেরা করতেন প্রকাশ্যে পিস্তল হাতে নিয়ে। তিনি বক্তব্য রাখার সময় পিস্তলসহ এক হাত উঁচু করে বলতেন, আমি সন্ত্রাসে বিশ্বাস করি না। তখন তার শার্টের নিচ থেকে অন্য পিস্তলটি দেখা যেত।

২. ১৯৯৬ সালে আমার আন্তর্জাতিক সংস্থায় চাকরিকালীন উল্লাপাড়া উপজেলার ইউএনও আলতামাস একটি ঘুষের টাকার লেনদেন নিয়ে গল্প করলেন। তিনি বললেন, জেলা প্রশাসক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী সিরাজগঞ্জ আসছেন। তার আগমন উপলক্ষে প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ১০ হাজার টাকা ম্যানেজ করে দিতে হবে। তিনি দাঁড়িয়ে বললেন, স্যার, আমার কাছে এত টাকা নেই, আমি ব্যক্তিগতভাবে তিন হাজার টাকা দিতে পারি। জেলা প্রশাসক ধমক দিয়ে বললেন, আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে দিতে হবে না, উপজেলা সাব-অ্যাসিসস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে ডেকে বলুন, টাকার ব্যবস্থা হয়ে যাবে। তিনি আসতে আসতে চিন্তা করলেন, যিনি ১০ হাজার টাকা ম্যানেজ করে দিতে পারেন তিনি নিশ্চয়ই ২০ হাজার টাকার ব্যবস্থা করতে পারবেন। তিনি ইঞ্জিনিয়ারকে নির্দেশ দিলেন, নির্দিষ্ট দিন ইঞ্জিনিয়ার টাকা নিয়ে অফিসে হাজির। তিনি ইঞ্জিনিয়ার আসামাত্র দরজা বন্ধ করে দিলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, তিনি কিভাবে টাকা ম্যানেজ করলেন? ইঞ্জিনিয়ার সাহেব বললেন, তিনি ৮০ হাজার টাকা ম্যানেজ করে ৬০ হাজার টাকা নিজে নিয়েছেন। ইউএনও সাহেব জানতেন না, কিভাবে মাঠ প্রশাসনে টাকা ম্যানেজ ও লেনদেন হয়। তিনি ১০ হাজার টাকা ভবিষ্যৎ প্রোগ্রামের জন্য রেখেছেন।

৩. ভারতের প্রধানমন্ত্রী চরণ সিংয়ের ঘুষ লেনদেন
এক দিন তিনি কৃষক সেজে ময়লা কাপড় পরিহিত অবস্থায় স্থানীয় থানায় গেলেন তার গরু চুরি হয়েছে এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করতে। থানার বড় কর্তাবাবু দু-চারটি শক্তমন্দ প্রশ্ন করে অভিযোগ নিলেন না। বিফল মনোরথ সেই কৃষক থানা থেকে বেরিয়ে আসছিলেন। পেছন পেছন এক কনস্টেবল এসে কৃষককে বললেন, কিছু খরচাপাতি দিলে অভিযোগ লিপিবদ্ধ করা হবে। ৩৫ টাকায় রফাদফা করে অভিযোগ লেখালেন। দারোগাবাবু কৃষককে জিজ্ঞেস করলেন, সই দেবেন না টিপসই দেবেন? তিনি বললেন, সই দেবো। এ কথা বলে পকেট থেকে স্ট্যাম্প সিল বের করলেন। দারোগাবাবু আবার প্রশ্ন করলেন, সই দিলে স্ট্যাম্প সিল কেন? কৃষক বললেন, দুটোই দেবো। এই বলে সই করলেন, নিচে সিল মারলেন। সিলের বর্ণনা ছিল- ‘চৌধুরী চরণ সিং, প্রাইম মিনিস্টার, গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়া।’ এই দেখে দারোগা ও কর্তাবাবুর চোখ মাথায় উঠে গেল। ভালো করে পরখ করে দেখে পায়ে পড়লেন। থানার কাজকর্ম যাচাই করতে চৌধুরী চরণ সিং কাপড়চোপড় ময়লা করে, নিজের কনভয় দূরে রেখে থানায় প্রবেশ করেন।

৪. উগান্ডায় যখন দেশের সবাই চোর! উগান্ডায় একবার এক চোরকে সামান্য ম্যানহোলের ঢাকনা চুরির অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলো। তখন সে চোর তার শেষ ইচ্ছা হিসেবে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করার সুযোগ চাইল। যখন তাকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে আসা হলো তখন সে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলল- স্যার, আপনার সাথে দেখা করতে চাওয়ার একটিই কারণ; তা হলো- আমার কাছে এমন একটি গাছের বীজ আছে, যে গাছটি মনের সব ইচ্ছা পূরণ করতে পারে। আমি আপনার জন্য এই গাছটি রোপণ করে দিয়ে যেতে চাই। প্রধানমন্ত্রী তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার চারা লাগাতে কত দিন লাগবে? চোর উত্তর দিলো- এই তো স্যার, সাত দিন।

সাত দিন পর তাকে আবার মন্ত্রিসভায় হাজির করা হলো। একজন জিজ্ঞেস করল, তোমার চারার কী খবর? চোর বলল, আসলে জমি তো রেডি কিন্তু বীজটা পরিপক্ব হতে আরো তিন দিন লাগবে। তিন দিন পর তাকে আবার হাজির করা হলো। প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞেস করলেন, ‘বীজ রেডি তো এবার? চোর বলল, স্যার জমি বীজ সবই রেডি কিন্তু আমি তো তা রোপণ করতে পারব না। প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞেস করলেন, কেন? চোর বলল, এটি এমন একজনের হাতে রোপণ করতে হবে যেকোনো দিন চুরি করেনি। না হলে এটি কার্যকারিতা হারাবে। সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রী অর্থমন্ত্রীকে নির্দেশ দিলেন বীজ রোপণ করতে।

অর্থমন্ত্রী কাঁচুমাচু হয়ে বললেন, স্যার সারা দেশের অর্থ নিয়ে আমার কাজ। এত কাজের মধ্যে দু-একটা তো এদিক-সেদিক হতেই পারে। এরপর প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিলেন পরিবহনমন্ত্রীকে, পরিবহনমন্ত্রী কাঁচুমাচু হয়ে বললেন, স্যার, কত কত গাড়িঘোড়া আমার প্রতিনিয়ত অনুমোদন দিতে হয়, এর মাঝে তো দু-একটা এদিক-সেদিক হতেই পারে। এরপর প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীও কাঁচুমাচু হয়ে বললেন, স্যার, এত দেশের সাথে যোগাযোগ, এত দেশে যাওয়া-আসা, বাণিজ্য-লেনদেন; এর মধ্যে তো আমারও দু-একটি এদিক-সেদিক হতেই পারে।

প্রধানমন্ত্রী এরপর যাকেই বলেন সেই এদিক-সেদিকের দোহাই দিয়ে এড়িয়ে যায়। হঠাৎ সবাই প্রধানমন্ত্রীকে ধরলেন, স্যার, আপনিই রোপণ করুন না। তখন প্রধানমন্ত্রী বললেন, তোমাদের তো দায়িত্ব ছোট ছোট, আমি পুরো দেশ চালাই। আমার কি একটু আধটু এদিক-সেদিক হতে পারে না? তখন সবাই চুপ হয়ে গেল। হঠাৎ একজন বলে উঠলেন, তাহলে স্যার, এই লোক তো সামান্য একটি ম্যানহোলের ঢাকনা চোর। একে মৃত্যুদণ্ড দেয়া কি ঠিক? একে ছেড়ে দেয়া হোক। আরেকজন বললেন, না একে ছেড়ে দেয়া যাবে না। তাহলে সে বাইরে গিয়ে সব ফাঁস করে দেবে। সবাই চিন্তায় পড়ে গেল একে নিয়ে কী করা যায়? তখন একজন বলল, স্যার এক কাজ করুন। একে আমাদের মতোই একটি পদ দিয়ে আমাদের সাথে শামিল করে নিন। যেই কথা সেই কাজ, সেই চোর হয়ে গেল মন্ত্রিসভার সদস্য। এভাবেই মন্ত্রিসভা গঠিত হচ্ছে সারা দুনিয়ায়।

৫. সংসদ সদস্যের পুত্রের জীবনী : ছোটবেলা থেকেই টাকার জন্য তার মাকে আটকে রাখত, মারধর করত। সংসদ সদস্য নিজেই এলাকায় একজন সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। রাজনীতিতে তার উত্থানই সন্ত্রাসের মাধ্যমে। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, জমি দখল, নদনদী দখল ইত্যাদি তার নিত্যনৈমিত্তিক কাজ। মানুষের সাথে জবরদস্তি করা থেকে শুরু করে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলও দখলের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এলাকার মানুষকে ভয়ভীতি দেখানো বা জিম্মি করে রাখাই ছিল তার রাজনৈতিক কৌশল। আর এই কৌশলের কারণেই প্রথমে ওয়ার্ড কমিশনার ও পরে ’৯৬ সালে এমপি হয়ে সংসদে। তার দুই পুত্র। দু’জনের মধ্যে বড় ছেলেকে নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু ছোট ছেলেটি শুরু থেকে সন্ত্রাসী ও অবাধ্য হয়ে ওঠে। একাধিক ব্যক্তি জানায়, ছোটবেলা থেকেই বখে যায় ও নানা রকম অপকর্মের সাথে যুক্ত হতে শুরু করে।

তার সাথে একসময় চলাফেরা ছিল এই একজন বলেন, বখে যাওয়ার কারণে শিক্ষা জীবনও শেষ করতে পারেনি। বিবিএ ভর্তি হলেও পড়াশোনা শেষ করতে পারেনি। মহল্লার স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, এমন হয়ে ওঠার কারণেই পিতা তাকে বিয়ে দিয়েছিলেন। সেই সাথে রাজনীতিতেও তাকে আনতে চেয়েছিলেন। জানা গেছে, এই ছেলে আগামী নির্বাচনে এমপি হওয়ার লড়াইয়ে নামতেন। এ বিষয়ে বাবাকেও তিনি আগে থেকে সতর্ক করে দিয়েছেন বলে জানা যায়। একজন জানান, ২০১১ সালের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, তখন পিতাকে পিস্তল নিয়ে তাড়া করেন। এর পর থেকে পিতা ছেলেকে ‘সমঝে’ চলতে শুরু করেন। বেশ কয়েকজন জানায়, সে বড় হওয়ার সাথে সাথে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে থাকে। সেই সাথে চাঁদাবাজি আর দখল জবরদস্তিতে অনেককেই কোণঠাসা করে ফেলে। ঘনিষ্ঠরা বলেন, শেষ দিকে এসে হাজী সেলিমের সাথেও দূরত্ব তৈরি হয়। দ্বন্দ্বই বলা চলে। তারা জানায়, বিভিন্ন বিষয়ে সেলিমের সাথে প্রতিনিয়নই তার ঝগড়া বিবাদ হতো।

এরকম ঘটনায় পুরান ঢাকায় অনেকেই লাঞ্ছিত ও নিগ্রহের শিকার হয়েছেন বলে জানা যায়। লাঞ্ছনার হাত থেকে নারীরাও বাদ যায়নি বলে জানান মহল্লার অনেকে। গত বছরই লালবাগ এলাকায় একটি বড় ঘটনা ঘটে। সে সময় তার গাড়ির সামনে দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন এক কলেজ ছাত্রী।

তখন তার লোকজন ছাত্রীটিকে উঠিয়ে নিয়ে মদিনা আশিক টাওয়ারে আটকে রাখে। অবশ্য পরে অনেক অনুনয় করে মেয়েটিকে উদ্ধার করে তার অভিভাবকরা।

একাধিক ব্যক্তি জানান, পিতা বাকশক্তি হারানোর আগেও তার ছেলেকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতেন। আর এখন এই উদ্বেগই যেন সত্যি হলো! (সূত্র : বাংলা ইনসাইডার) জানা গেছে, গত এক বছরে এর বাহিনী এলাকায় পুরো ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিল। আর এই বাহিনীতে ৭০ জনের মতো ক্যাডার ছিল। র‌্যাবের মতে, এদের সবার হাতেই অস্ত্র ছিল, যার সব ক’টিই আবার অবৈধ। আর এসবের কারণে এলাকায় নেতার কথাই ছিল শেষ কথা। আর এ কারণে পিতাও ছেলের ব্যাপারে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। শেষের দিকে একেবারে হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন বলেও জানা যায়।

এ ঘটনার পরও কীভাবে কাউন্সিলর হলেন- সেটি একটি বড় প্রশ্ন। এলাকাবাসী জানান, তাদের কোনো উপায় ছিল না। সে এলাকায় এক আতঙ্কের নাম। তাদের মতে, বাবার তাও কিছু গুণ ছিল- সে এলাকার গরিব মানুষদের কিছু সাহায্য-সহযোগিতা করত। মানুষের অভাব, অভিযোগ কিছুটা হলেও শুনত। কিন্তু ছেলেটি এসবের ধারেকাছেও নেই। এলাকার মানুষকে মারধর করা আর সন্ত্রাস করাই ছিল তার কাজ।
এলিট ফোর্স র‌্যাব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার আলম মাঝে মধ্যে আমাদেরকে জাতির সচেতনতার জন্য কিছু বখাটে, রাঘববোয়ালকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিয়ে চমক দিয়ে থাকেন। সোশ্যাল মিডিয়া টকশো, সিনিয়র সিটিজেন ও দেশপ্রেমিক নাগরিক কিছুটা বিনোদন পেয়ে থাকে: ক্যাসিনো, পাপিয়া, সাহেদ, সাবরিনা, মেজর সিনহা, ওসি প্রদীপ, নৌবাহিনীর অফিসার, ইরফান সেলিম, ফুলমতি ইত্যাদি।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেঁচে থাকলে বাঙলি জাতির জন্য দ্বিতীয় ‘জুতা আবিষ্কার’ লিখতেন। তার নাম হতো বাঙালির মূল্যবোধ ডাকাতদের হাতে বন্দী! দেশের আইনপ্রণেতা, উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, মেয়র ইত্যাদি জনপ্রতিনিধির আয় রোজগার, ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীদের জীবন কাহিনী নিয়মিত পত্র-পত্রিকায় এলে জাতি জানতে পারত, প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বাংলাদেশ! মূল্যবোধের সূচকে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ! স্বাধীন জাতির লাগামটি সঠিক পথে আনবে কে!

লেখক : গবেষক ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ