ঢাকা
বর্তমান সরকার ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে জনজীবনে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ফলে কেবল এই সরকারের অধীনেই নয়, এই শাসনব্যবস্থায় বদল না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন ও মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে না বলে মনে করে গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণফোরাম (একাংশ)। তাই বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় প্রশ্নে মঙ্গলবার বিকেলে গণফোরাম ও গণতন্ত্র মঞ্চের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর ইডেন কমপ্লেক্সে গণফোরাম কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সভা শেষে বেরিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণফোরামের নেতারা এসব কথা বলেন।
এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজনের জন্য পরিবেশ তৈরি এবং শাসন ব্যবস্থার সংস্কার—এই বিষয়গুলো নিয়ে তাঁরা গণফোরামের সঙ্গে কথা বলেছেন। গণফোরামও একমত হয়েছে যে বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। এই সরকারের অধীনে তারাও নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলেছে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘বর্তমান শাসনব্যবস্থাকে এমনভাবে কুক্ষিগত করা হয়েছে এবং দলীয়করণ করা হয়েছে যে, এই সরকারের অধীনেই নয়, এই শাসনব্যবস্থার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করা সম্ভব নয়। ফলে আমরা এই শাসনব্যবস্থা বদলের জন্য জনগণের মধ্যে বৃহত্তর ঐক্য সৃষ্টি করছি। যারা সম্ভব এক মঞ্চে কাজ করবেন।
যাঁরা এক মঞ্চে আসতে পারছেন না, তাঁরা একটা অভিন্ন লক্ষ্যকে সামনে রেখে যুগপৎ ধারায় বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলে এই আন্দোলন অগ্রসর করবেন। আন্দোলনকে বিজয়ী করে মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করবেন।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বর্তমান সরকার ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে জনজীবনে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। লাখো কোটি টাকা লুটপাট ও পাচার করেছে। রিজার্ভ ফাঁকা করে দিচ্ছে। বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় গণতন্ত্র মঞ্চ কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ক্রমাগত লুণ্ঠন, অর্থ পাচারের মাধ্যমে বর্তমান সরকার জনগণের জীবনকে যে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে, তার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণফোরাম সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।
গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে ২০১৮ সালের মতো কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না। বরং দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন প্রতিহত করতে সক্রিয়ভাবে মাঠে থাকবেন। বর্তমান সরকারের সীমাহীন লুটপাট ও অর্থ পাচারের ফলে জনগণের যে নাভিশ্বাস উঠেছে, তার বিরুদ্ধে জনগণের মধ্যে ঐক্য ও আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন।
মতবিনিময় সভায় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের মধে৵ আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম, গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)–এর কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদ্যস্যসচিব হাবিবুর রহমান প্রমুখ। গণফোরামের পক্ষে সুব্রত চৌধুরীসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।