Site icon The Bangladesh Chronicle

ছয় শিল্প গ্রুপের শেয়ার স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা

ছয় শিল্প গ্রুপের শেয়ার স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা

দেশের শীর্ষস্থানীয় ৬টি শিল্প গ্রুপ এবং মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান নগদের শেয়ারের মালিকানা স্থানান্তর স্থগিত রাখতে যৌথ মূলধনি কোম্পানিসমূহের  নিবন্ধককে (আরজেএসসি) অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল। সম্প্রতি এমন চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি। এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো শেয়ার কেনাবেচা ও দান করা যাবে না।

শিল্প গ্রুপের মধ্যে রয়েছে– এস আলম, বসুন্ধরা, ওরিয়ন, সামিট, বেক্সিমকো এবং নাসা গ্রুপ। এ ছাড়া রয়েছে নগদের মালিকানায় থাকা প্রতিষ্ঠান থার্ড ওয়েব টেকনোলজিস। এসব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অনুসন্ধান করছে এনবিআর। এনবিআরের বাইরে দুদক এবং সিআইডি কারও কারও বিষয়ে অর্থ পাচার ও অন্য আর্থিক অপরাধের অনুসন্ধান করছে। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিও কারও কারও বিষয়ে তদন্ত করছে।

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির পাশাপাশি ব্যাংক খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত চলছে। বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। সরকার পতনের পর তিনি আটক হয়েছেন।  নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার অতি সম্প্রতি আটক হয়েছেন। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এবং ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম। সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান, যিনি জ্বালানি খাতের বড় ব্যবসায়ী। নগদের মালিকদের অন্যতম এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক।
এনবিআরের পাঠানো চিঠি অনুযায়ী এসব ব্যবসায়ী গ্রুপের মালিক বা উদ্যোক্তা বা পরিচালক বা তাদের সংশ্লিষ্টরা কেউ তাদের কোনো অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের মালিকানা অন্য কারও কাছে বিক্রি বা হস্তান্তর বা দান করতে পারবেন না। চিঠিতে বলা হয়েছে, আয়কর আইন-২০২৩-এর ২২৩ ধারার ক্ষমতা বলে এনবিআর কর ফাঁকি রোধে সম্পত্তির অন্তর্বর্তীকালীন অবরুদ্ধকরণ বা ক্রোকের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। চলমান তদন্ত অনুযায়ী, উল্লিখিত কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগসহ নানা আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে গুরুতর অভিযোগ আছে।

আয়কর আইনের ২২৩ ধারায় ১ উপধারা বলা হয়েছে, আয়কর আইনে কাজ করার সময় এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের মহাপরিচালক বা কমিশনারের কাছে যদি সুনির্দিষ্ট থাকে, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তার আয় ও বিনিয়োগ বিষয়ে তথ্য গোপন করেছে, সে ক্ষেত্রে লিখিত আদেশ দিয়ে ওই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অধিকারে থাকা যে কোনো অর্থ, অলঙ্কার, আর্থিক দলিল, আর্থিক পরিসম্পদ, মূল্যবান কোনো সম্পদ অপসারণ, হস্তান্তর বা অন্য কোনোভাবে বিলিব্যবস্থা না করতে নির্দেশ দিতে পারবেন। তবে এ আইনের ২ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, আদেশ জারির তারিখ থেকে এক বছর পর এ আদেশের কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। তবে চাইলে এনবিআর বোর্ডের অনুমোদনক্রমে এমন আদেশের মেয়াদ সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত বাড়ানো যাবে।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সালমান এফ রহমান, নজরুল ইসলাম মজুমদার, আহমেদ আকবর সোবহান, আজিজ খান, ওবায়দুল করিম এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের লেনদেনের তথ্য চেয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠিও পাঠায় এনবিআরের এ গোয়েন্দা সংস্থা।

samakal

Exit mobile version