তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র বানাতে গিয়ে সুন্দরবন যাতে না বাঁচে সে চেষ্টাই করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে- রামপালের সব কিছুই ভারতের। তাহলে, ভারত কেনো নিজেদের জায়গায় বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করছে না। চীন ও ভারত আমাদের উপকূলীয় এলাকা ধ্বংস করে ফেলছে।
আজ (২৪ জানুয়ারি) নাটোরের ভিক্টোরিয়া পাবলিক লাইব্রেরিতে ‘সুন্দরবনের রামপাল ও রূপপুরের বিদ্যুৎকেন্দ্র জনস্বার্থ রক্ষা করবে কি?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, “সরকারের চীনপন্থী, রুশপন্থী, ভারতপন্থী এবং জাপানপন্থী তৎপরতার কারণে সুন্দরবন এবং উপকূল ধ্বংসের মুখে রয়েছে। কক্সবাজারের সৈকতে যে প্রাণ বৈচিত্র্য তা পৃথিবীতে বিরল। কিন্তু এর আশপাশ দিয়ে ১৭টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করছে চীন, ভারত এবং রাশিয়া। এশিয়া এনার্জি কোম্পানি কোনো প্রকার বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বাংলাদেশের কয়লা খনির মালিকানা দেখিয়ে লন্ডনে শেয়ার ব্যবসা করে যাচ্ছে। এসব বিষয়ে সরকারকে বারবার বলেও কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে আগামী মাসে দিনাজপুরের ফুলবাড়ি থেকে আবারও আন্দোলন করবে জাতীয় কমিটি।”
পানি সম্পদকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেছেন, “পানি সম্পদ বাংলাদেশের বড় সম্পদ। এই সম্পদ পানি উন্নয়ন বোর্ড নষ্ট করছে। নদীতে পানি প্রবাহের সৃষ্টি করতে হবে। নদী জীবিত থাকলে সব ধরণের বর্জ্য দূর করা সম্ভব।”
তিনি বলেছেন, “রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প বাংলাদেশের অনেক ক্ষতি করবে। সমীক্ষাসহ বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনার মধ্য দিয়ে এ ধরণের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা উচিত। কিন্তু সেগুলো মানা হয়নি। এই প্রকল্পের কারণে প্রায় লাখ লাখ মানুষ বিপদগ্রস্তের তালিকায় রয়েছে। পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত চরম ঝুঁকিতে থাকবে। এর বাইরে আরও দুই স্তরে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝুঁকিতে থাকবে।”
এ সময় জনগণের নিরাপত্তার বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে গত বছরে এক হাজারের বেশি শ্রমিক অবহেলার কারণে নিহত হয়েছেন। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের কোনো প্রকার নিরাপত্তা থাকে না।”
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন বাদলের সভাপতিত্বে এবং দেবাশীষ কুমারের সঞ্চালনায় আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার, সাংবাদিক রেজাউল করিম রেজা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা চন্দন সিদ্ধান্ত, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি আনছার আলী দুলাল, নাট্যকর্মী সুখময় রায় বিপলু প্রমুখ।