Site icon The Bangladesh Chronicle

গুলিবিদ্ধ হয়ে নিখোঁজের ১৩ দিন পর মর্গে পাওয়া গেল যুবকের লাশ

আল আমীন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন

২৯ বছরের যুবক আল আমীন পরিবারের সঙ্গে সৌদি আরবে থাকতেন। চার মাস আগে দেশে ফিরে সাভারের বাইপাল এলাকায় বাবার সঙ্গে মুদিদোকান খুলে ব্যবসা শুরু করেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বিজয় মিছিলে যোগ দিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। এরপর তাঁর আর কোনো সন্ধান পাচ্ছিল না পরিবার। গত শনিবার ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে তাঁর লাশ খুঁজে পান পরিবারের সদস্যরা।

আল আমীন শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার দক্ষিণ মগর গ্রামের ইসমাইল মীরমালত ও জিয়াসমিন বেগম দম্পতির ছেলে। সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা।

গতকাল রোববার আল আমীনের লাশ নিয়ে ‘যৌক্তিক আহ্বান’ নামে শরীয়তপুরের একটি সংগঠনের সদস্যরা জেলা শহরে আসেন। তাঁরা জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহাম্মেদ ও পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলমের সঙ্গে দেখা করে আল আমীনকে শহীদের মর্যাদা দেওয়া, তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা ও তাঁর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান।

আল আমীনের পরিবারের সদস্যরা বলেন, ইসমাইল মীরমালত স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সৌদি আরবে থাকতেন। এক বছর আগে আল আমীন বাদে পরিবারের সবাই বাংলাদেশে ফিরে আসেন। চার মাস আগে ফেরেন আল আমীন। ৫ আগস্ট বিজয় মিছিলে যোগ দেওয়ার জন্য বিকেল চারটার দিকে বাসা থেকে বের হন তিনি। মিছিলে গিয়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাঁকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি পরের দিন মারা যান। পরিবারের সদস্যদের খুঁজে না পাওয়ায় অজ্ঞাত লাশ হিসেবে তাঁকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়।

গত শুক্রবার একটি সংবাদমাধ্যমের খবর দেখে আল আমীনের ছোট বোন আফলান সিনথিয়া শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে যান। গত শনিবার তিনি ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করেন। ওই রাতে গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।

আল আমীনের বোন আফলান সিনথিয়া বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে সৌদি আরবে থাকি। দেশের রাজনীতি আমরা বুঝি না। আমার ভাই সেই নোংরা রাজনীতিতে পড়ে জীবন হারাল। মা–বাবার ইচ্ছে ছিল ডিসেম্বরে ওকে বিয়ে দেওয়ার। সেই আশা আর পূরণ হলো না। আমরা চাই তাকে যেন শহীদের মর্যাদা দেওয়া হয়।’

আল আমীনের বাবা ইসমাইল মীরমালত প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলের লাশটা ১২ দিন বেওয়ারিশ হয়ে হাসপাতালের মর্গে পড়ে ছিল। বাবা হিসেবে এই যন্ত্রণা কী, তা আমি কাউকে বোঝাতে পারব না। আমি ছেলে হত্যার বিচার কার কাছে চাইব?’

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম বলেন, ‘ছেলেটির মৃত্যুর ঘটনায় আমরাও ব্যথিত। ওর পরিবার ও একটি সংগঠন কিছু দাবি তুলে ধরেছে। আইনের মধ্যে থেকে যা করা যায়, আমরা সেগুলো বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর ওই পরিবারের পাশে স্থানীয় প্রশাসন ও আমরা সব সময় থাকব।’

samakal

Exit mobile version