Site icon The Bangladesh Chronicle

গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় ভারত পাশে ছিল ও আছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় ভারত পাশে ছিল ও আছে বলে জানিয়েছেন নতুন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার নিজের দপ্তরে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী  বলেন, ২০১৪ সালেও নির্বাচন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল। ভারতবর্ষ আমাদের পাশে ছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনকেও বিতর্কিত করার এবং সে নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্থাপন করা হয়েছিল। ভারতবর্ষ আমাদের পাশে ছিল। এবারও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থানটা কী ছিল বা আছে সবার জানা।

প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর ভারতে যাওয়ার আগ্রহ রয়েছে জানিয়ে নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতের পক্ষ থেকে তাঁকে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাঁরা এখন সময়টা দেখছেন, কখন তাঁর জন্য এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য সুবিধাজনক হয়। সেটা নিয়ে উভয় পক্ষ কাজ করছে। প্রণয় ভার্মার সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি সৌজন্য সাক্ষাৎ হলেও আমরা নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।

বিশেষত আমরা গুরুত্বসহকারে কানেক্টিভিটি নিয়ে আলোচনা করেছি, সীমান্ত হাটগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারতীয় রুপি ও বাংলাদেশি টাকায় বিনিময়ের মাধ্যমে বাণিজ্য সম্প্রসারণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এটি ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে এবং অল্প কিছু বাণিজ্যও হয়েছে। কীভাবে আরও সম্প্রসারণ করা যায় এবং কীভাবে জনপ্রিয় করা যায় এবং সবার কাছে কীভাবে পরিচিত করা যায়, সে বিষয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এটি হলে পরে ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা আমাদেরও কমবে, ভারতেরও কমবে। দুই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে সেটি সহায়ক হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। মানুষে মানুষে যোগাযোগ বাড়ানো নিয়েও আলোচনা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের পণ্য বহন করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এটা নিয়ে কাজ চলছে। এ–সংক্রান্ত বিষয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নীতিকাঠামো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ছোটখাটো কিছু বিষয় আছে, সেগুলো হয়ে গেলে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে রামগড় ও আখাউড়া দিয়ে পণ্য পরিবহন স্থিতিশীল হবে।

নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে ভারতে দূতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা যেটা আলোচনা করেছি, সেটি হচ্ছে সুষ্ঠু, সুন্দর, অবাধ, নিরপেক্ষ ও জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলাদেশে একটি নির্বাচন হয়েছে এবং এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছিল। যেমন দেশের মধ্যে অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্য চালানো হয়েছে। ৫ জানুয়ারি পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে একটি ট্রেনে পুরো পরিবারকে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং অন্যান্য মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। স্পষ্টত, নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এবং মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য করা হয়েছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে।

তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীন আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং এ বিষয়ে ভারত জানতে চেয়েছে কি না প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে আলোচনা হয়নি। বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, যারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, যারা রাজনীতি করে না, যারা সন্ত্রাস-নৈরাজ্য করে, তাদের সঙ্গে তো আলোচনার কোনো কারণ নেই।

মানব জমিন

Exit mobile version