- মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন ইবনে মঈন চৌধুরী
- ০৪ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:৪০
হজরত ইব্রাহিম আ:- এর একটি ঘটনা উল্লেখ করছি। হজরত ইব্রাহিম আ: কোনো দিন অতিথি ছাড়া আহার করতেন না। তার কাছে একদিন এক ক্ষুধার্ত মানুষ এসে খাবার চাইলেন। তিনি আনন্দের সাথে নিজ ঘরে নিয়ে একসাথে খেতে বসলেন। কিন্তু খাবার শুরুতে তিনি বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম বলে শুরু করেন। কিন্তু তিনি লক্ষ করলেন, মেহমান বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম না বলে খাবার খেতে শুরু করেছে। হজরত ইব্রাহিম আ: তাকে প্রশ্ন করলেন আপনি আল্লাহ তালার নাম না পড়ে খাবার শুরু করলেন। আগন্তুক বলল, সে ইহুদি। হজরত ইব্রাহিম আ: তার সামনে থেকে খাবার সরিয়ে নিয়ে তাড়িয়ে দিলেন। আল্লাহ পাক সঙ্গে সঙ্গে হজরত ইব্রাহিম আ:কে বললেন, আমার শুকরিয়া আদায় না করলেও তার সব অভাব মিটাই আর আপনি আমার দান খাবার থেকে তাকে বিরত কিভাবে করলেন? হজরত ইব্রাহিম আ: এই নির্দেশ পেয়ে দৌড়ে গিয়ে, সেই ক্ষুধার্ত অতিথির কাছে ক্ষমা চাইলেন এবং ফিরিয়ে এনে আতিথেয়তা করলেন। এখন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম জাতির পিতার মাধ্যমে শিক্ষা দিলেন, মানুষে মানুষে বিভেদ বা দূরত্ব নেই। আজ ইহুদি, নাসারা, খ্রিষ্টান, মূর্তিপূজারিরা জুলুম নির্যাতন নিপীড়ন করতে সংখ্যাগরিষ্ঠ আর সংখ্যালঘু বানিয়ে অত্যাচার চালাচ্ছে। আর তাদের নিরাপত্তার দেয়াল হিসাবে জাতিসঙ্ঘ কাজ করে চলেছে। বিশ্বনবী, বিশ্বমানবতার নেতা, দয়াময় আল্লাহ তায়ালার প্রিয় হাবিব মুহাম্মদ সা:কে যখন আল্লাহ পাক আদেশ দিলেন নবীর গোষ্ঠীকে আল্লাহ তালার কাছে আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানাতে। দয়াল নবী করিম সা: এক পাহাড়ের পাদদেশে তার গোষ্ঠীর সবাইকে একত্র করে বললেন, যদি বলি, পাহাড়ের অপর পাশে আমাদের ওপর হামলা করতে অস্ত্রশস্ত্রসহ শক্ররা অপেক্ষা করছে, আপনারা কি তা বিশ্বাস করবেন? দয়ার নবীর গোষ্ঠীর সবাই সমস্বরে বলে উঠল রাহমাতুল্লিল আলামিন কোনো দিন মিথ্যা বলেন নাই, বলতে পারেন না। আমরা আপনার কথা বিশ্বাস করি। বিশ্বনবী সা: ঘোষণা দিলেন, ‘এই বিশ্বভ‚মণ্ডলের মালিক দয়াময় আল্লাহ তালার পথে ফিরে না এলে অপ্রতিরোধ্য আল্লাহ তায়ালার বাহিনী আমাদের গ্রেফতার করবে।’ তখনই কিছু মানুষ, যারা অস্বচ্ছ জীবন-যাপনে অভ্যস্ত, ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন আর আবু লাহাব বিশ্বমানবের নেতার ওপর এক টুকরো পাথর নিক্ষেপ করল, কিন্তু পাথরটা দয়ার নবীর গায়ে লাগেনি। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার সহ্য হলো না। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা করে দিলেন, আবু লাহাব ও তার বংশ ধ্বংস হোক। দয়ার নবী বিশ্বের সব মানুষের আল্লাহ তায়ালার দেয়া অধিকার প্রতিষ্ঠা ও আল্লাহ তালার রাস্তায় আহবান করার কারণে দুই বছর কারাভোগ করেছেন। জালেম ও মানুষের অধিকার হরণকারীদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে জুলুম, নিপীড়ন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। জালেমের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন।
সবার কাছে আল্লাহ তায়ালার ওয়াস্তে ক্ষমা চাই, দোয়া চাই মহান মালিক আমাকেসহ সব উম্মতি মোহাম্মদীকে ঋণ ও অভাবমুক্ত মানবিক জীবনসহ হজ আদায়ের পর শাহাদাতের মৃত্যু যেন দেন। রক্ত দিয়ে কেনা স্বাধীন দেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, রূপকার, স্থপতি মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, স্বাধীনতার ঘোষক বহুদলীয় গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়া শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, দেশমাতৃকার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মহান আল্লাহ পাকের কাছে ক্ষমা চেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের প্রার্থনা করছি। রক্ত দিয়ে কেনা স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার আর ধর্মীয় অধিকার হুমকির মুখে! কিন্তু এত রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতার লড়াই শুরু হয়,তার লক্ষ ছিল বৈষম্য মুক্ত, শোষণহীন সমাজে এ ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের মাধ্যমে একটা সভ্য স্বাধীন দেশের আত্মমর্যাদাশীল নাগরিক হওয়া। কিন্তু বিজয়ের আত্মসমর্পণ দলিলে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীকে স্বাক্ষর করতে দেয়া হলো না! আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের উপপ্রধান উপস্থিত থাকলেও তার কাছে আত্মসমর্পণ করানো হয় নাই! তা হলো ইন্ডিয়ার জেনারেল অরোরার কাছে! ওদিকে দিল্লির পার্লামেন্টে তখনকার তাদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাজার সাল কা বদলা লিয়া! এই যে বদলা নেয়া শুরু হলো আজও তা অব্যাহত। এ যেন ইসলাম, মানবতা, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সাম্য ও বহুমতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। স্বাধীনতার পরবর্তী প্রথম প্রহরে সাম্প্রদায়িক শক্তির চক্ষুশূল, ঐতিহ্যবাহী ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোগ্রাম থেকে ‘রাব্বি জিদনি ইলমা’ সরিয়ে দেয়া হয় কেন? তারপর শুরু হলো মানুষের অধিকার বাক ব্যক্তি, গণমাধ্যম ও সংগঠন করার অধিকার হরণ করার প্রক্রিয়া। ২২ জানুয়ারি ১৯৭২ মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী গৃহবন্দী দশা থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেই জাতিকে সাবধান করে দিলেন, রক্ত দিয়ে পিন্ডি থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি দিল্লির গোলামির জন্য নয়! কিন্তু আজ দিল্লির নির্দেশনার বাইরে বা তাদের স্বার্থের পরিপন্থী কোনো রাজনীতি করার এখতিয়ার কি রাজনীতিবিদদের আছে? সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা উপস্থাপন করতে হয়। স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া দক্ষিণ এশিয়ার নাগরিকদের আধিপত্যবাদ মুক্ত রাখার লক্ষ্য নিয়ে সার্ক গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। স্বাধীনতার ঘোষক জিয়ার পরিবার ও তার প্রতিষ্ঠিত বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সার্ককে শক্তিশালী করেছে আধিপত্য ও আগ্রাসন থেকে দক্ষিণ এশিয়ার জনগণকে মুক্ত রাখতে! কিন্তু বাংলাদেশে জাতিসঙ্ঘের প্রতিনিধির এক ইমেইল বার্তা মাধ্যমে দেশের গণমানুষের স্বার্থপরিপন্থী আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মইন উদ্দিন-ফখরুদ্দীনের জিঞ্জির পরানোর শাসন শুরু। এ ক্ষেত্রে মুসলিম গণহত্যায় বিশ্বাসী সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রগুলো সমর্থন দেয়। আর জাতিসঙ্ঘের ইমেইল বার্তা, জনশ্রুতি অনুযায়ী ‘র’ এবং মোসাদের কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ জনগণ শান্তির লক্ষ্যে স্বাগত জানায়। দেশপ্রেমিক শক্তির ওপর জুলুম নির্যাতন শেষ করে একটা মেরুদণ্ডহীন সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়া হলো! তাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়া শুরু করে স্বার্থান্বেষীরা। শাসক আর রাষ্ট্রের বেতনভুক কর্মচারীদের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে গুম, খুন, অপহরণ, মিথ্যা মামলা আর বিচারের নামে হত্যা আটক করে এক আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়।
একটি স্বাধীন ও মৌলিক অধিকার সম্পন্ন দেশে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর অবাধ থাকলে আধিপত্যবাদের আগ্রাসনের কবলে পড়তে হয় না।
১. ধর্মীয় আদর্শে শিক্ষিত নেতৃত্ব থাকা চাই।
২. গণতন্ত্র, গণমাধ্যম, আইনের শাসন, ন্যায়বিচারের পরিবেশ নিশ্চিত থাকলে সাম্য প্রতিষ্ঠা পায়,
৩. দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় শিক্ষার নিশ্চয়তা থাকতে হবে। কিন্তু এই তিনটিতেই আধিপত্যবাদের মদদপুষ্ট শাসক ক্ষমতায় এলেই মূল আঘাত করে
যে জন্য শীর্ষ পর্যায় থেকে দুর্নীতি অনিয়মের পক্ষে সাফাই গাওয়া সম্ভব। যাহোক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ‘ভানুমতির জোট’ হয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এই ফ্রন্টের প্রধান হন ড. কামাল হোসেন যিনি সংবিধান প্রণয়ন করে পুরা সংবিধানটাকে অকার্যকর করতে মূল নীতির মধ্যে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ অন্তর্ভুক্ত করেন। তার পরিণতি দেশের সর্বজন সমর্থনহীন এই প্রবীণ নেতা! অপ্রিয় সত্য হলো, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সমর্থনপুষ্ট দল বিএনপিকে অত্যন্ত সূ-কৌশলে মিত্র থেকে আলাদা করে, তার নিয়ন্ত্রিত ঐক্যফ্রন্টে নিয়ে, আগের রাতে ভোটে নির্বাচন করিয়ে বিএনপিকে জনসমর্থনহীন করার অপচেষ্টা করলেও, সাংবাদিক ও ভোটারদের কারণে সেটা ব্যর্থ হয় বলে জনশ্রুতি আছে। এই ডক্টর সাহেব বেগম খালেদা জিয়ার মামলায় লড়ার ঘোষণা দিয়ে শেষ পর্যন্ত যাননি! তাদের আরেকটা উদ্দেশ্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সমসাময়িক সময় সবচেয়ে স্বচ্ছ ব্যক্তি, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বিতর্কিত করার চেষ্টা; যদিও তা সফল হয়নি। এদিকে আওয়ামী লীগের বাইরে অবস্থানকারী বিভিন্ন ব্যক্তির আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেদের আসনগুলোর বিনিময়ে বিশ্বের স্থিতিশীলতা ধ্বংসকারী রাষ্ট্র ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিএনপিকে মিত্রহীন করার চক্রান্তে মেতেছে বলে ব্যাপকভাবে শোনা যাচ্ছে।
জানা যায়, তাদের টার্গেট বিএনপির চেয়ারপারসন ও জোটনেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেও তারা স্বস্তি পাচ্ছে না। বিএনপির কাউন্সিলে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত তারেক রহমান স্বাভাবিকভাবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। তার পর থেকে বাইরে থেকে দলবিশেষকে ক্ষমতায় রাখতে নানা পথ সৃষ্টিকারীদের দুশ্চিন্তা বেড়ে যায়। তারা এখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় হতাশ! তারা এখন গণতন্ত্রের শীর্ষ দুই নেতাকে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির কৌশল বাস্তবায়ন করতে চেষ্টা চালাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ মধ্যমপন্থী অর্থাৎ ইসলামের দর্শনে বিশ্বাস করে বিধায় অতীতে ইসলামী শক্তির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে ইসলামের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে হেন কুৎসা বা মিথ্যাচার চালানো হয় নাই, তা নয়! এ দেশের মানুষ সিলেটের কথিত রাজা গৌর গোবিন্দ, খুলনার কসাই প্রতাপ সিং, পাবনার শিথলী বাবুসহ অসংখ্য কসাই ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের দখলদারির আগে পরে সৃষ্টির ইতিহাস মানুষ জানে। নানা চক্রান্ত এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতেও পারেনি। একটি পত্রিকায় সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা, বর্তমান একটা ঐক্য সংগঠনের আহ্বায়ক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বিএনপি যদি জামায়াত, হেফাজতে ইসলাম ত্যাগ না করে, তাহলে ইন্ডিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব তাদের সমর্থন দেবে না।
কিন্তু বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকরা ওইসব নেতার কাছে জানতে চায় তারা যদি এই দেশের মানুষের কল্যাণ চান তাহলে তারা এটা প্রথম করুন যে, বাংলাদেশের জনগণের রক্ত ঘাম করা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ, চুরি, লুটপাট করে বিশ্বে যেখানেই পাচার করুক না কেন তা বাংলাদেশে ফেরত প্রদান। জনগণের অর্থ আত্মসাৎকারীদের তার দেশের আইনে বিচার করে শাস্তি দিয়ে কালো তালিকাভুক্ত করে ফেরত পাঠাক। এই দেশের মালিক সাধারণ নাগরিকদের প্রশ্ন এরা তো তারাই যারা ফিলিস্তিনি, কাশ্মির, উরুগুয়ে, সিরিয়া, ইয়েমেনের মানুষের রক্ত নিয়ে খেলছে। এরা কি তারা নয় কুর্দি দিয়ে যারা লিবিয়া ও ইরাকের মানুষের শান্তি আর উন্নয়নে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে! এরা কি তারা নয় যারা মিয়ানমার বা বার্মার মুসলমানদের নির্বিঘ্ন হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান করতে অক্ষম। এরা তারাই কি না যারা আফগানিস্তানের জনগণের অধিকার যখন ২০ বছর পর দখলদারমুক্ত জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে তখন মিথ্যাচারে তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে দখলদারদের পক্ষের অপশক্তির স্বার্থে অপপ্রচার করাচ্ছে। দেশের জনগণ কার সাথে থাকলে শান্তিতে থাকবে, সেটা সিদ্ধান্ত দেয়ার কে? বিএনপি মধ্যমপন্থী একটা দল তার মিত্র, জামায়াত, খেলাফত মজলিস, হেফাজত ইসলাম এরাই তো হবে! তার পরও বিএনপিকে কাউন্সিল করতে দেওয়া হয় না। জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে যতটুকু জানি দলটি নানা ঘটনার পরও কাউন্সিলর বা ভোটারদের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নেতা নির্বাচন করে থাকে।
বিএনপির মিত্ররা সবাই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাদের নেতা নির্বাচন করে। তাদের ব্যাপক জনপ্রিয়তা আছে। তাদের দেশপ্রেম জনগণের কাছে পরীক্ষিত। কিন্তু কে থাকলে সমর্থন দেবে কে থাকলে দেবে না, এই বক্তব্যের অর্থ দেশটার স্বাভাবিক জীবন বিঘিœত করে কাশ্মির, ফিলিস্তান, লিবিয়া, ইরাক, সিরিয়া, রোহিঙ্গাদের ভাগ্যবরণ করতে বাধ্য করার চক্রান্ত কিনা। এটা বিএনপিকে বিবেচনা করেই পথ চলতে হবে। কারণ যাদের মাধ্যমে এসব প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে তারা একটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হতে পারবে কিনা, তাদের ভোটারদের মধ্যেই সন্দেহ রয়েছে। দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন, ‘চারদলীয়’ জোট নেত্রী বেগম জিয়া সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণায় যাওয়ার পথে দিনের বেলায় হামলার মুখে পড়লেও রাষ্ট্র তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা কিংবা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পক্ষে টুঁ শব্দটা করেনি।
ওয়ান-ইলেভেনে বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে সক্ষম না হওয়ায় তাকে জনগণের দৃষ্টিতে অগ্রহণযোগ্যভাবে সাজা প্রদানের বিষয় সম্পর্কে নীরব। অথচ স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও গ্রহণযোগ্যতা আর রাষ্ট্রের বেতনভুকদের আত্মমর্যাদা জবাবদিহিতায় বিশ্বাসী এই দল। জামায়াত, বিএনপি ও তাদের মিত্রদের গ্রেফতার রিমান্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে জনগণ কখনোই দেখে না। তারা এই জাতির কল্যাণে কোনো পরামর্শ দিতে পারে কিনা কেউ বিশ্বাস করে না। তাদের দাবি বা পরামর্শ হওয়া উচিত সংবিধানের ৩৭, ৩৮, ৩৯ ধারা কার্যকর করা।
গুম, খুন অপহরণকৃত নাগরিকদের ফেরত প্রদান। স্বাধীনতার পর থেকে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে রাষ্ট্রপতি একটা নির্বাচনকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করা উচিত। আটক সাংবাদিকদের মুক্তি, রাজনীতিকদের মুক্তি, সব কালাকানুন বাতিল, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার দরকার। বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের হয়রানি বন্ধে বাধ্য করলে বুঝা যেত, তারা জনগণের প্রতিপক্ষ নন। ১২তম সংসদ নির্বাচনে কে কার সাথে থাকবে এটা বিবেচ্য নয়, বিবেচ্য হলো- নির্বিঘ্নে ভোটাররা ব্যালটে ভোট দেবে আর কেন্দ্র থেকেই প্রার্থীর সব এজেন্ট আর পোলিং অফিসারের স্বাক্ষরে ভোটের ফলাফল নিয়ে যাবে।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশন (বিআরজেএ) চেয়ারম্যান