খালি কন্টেইনারেই বন্দর দিয়ে পালাচ্ছে লোকজন

 

21 January, 2023   shippingexpressbd.com  বিশেষ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের সংরক্ষিত এলাকার ভিতর দিয়ে খালি কন্টেইনারে ঢুকে মানুষ অবৈধভাবে বিদেশে পালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে যত কন্টেইনারে মানুষ পাচারের ঘটনা ঘটেছে তার বেশিরভাগই খালি কন্টেইনারেই গেছে। আর এই খালি কন্টেইনারগুলো আসে বন্দরের বাইরে বেসরকারী কন্টেইনার ডিপো থেকেই।
গত ১৭ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দরে যে কিশোরকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে সেও খালি কন্টেইনারে করে সেখানে পৌঁছেছে। এর চারমাস আগে ২০২২ সালের অক্টোবরেও মালয়েশিয়ার আরেক বন্দর পেনাংয়ে এক ব্যক্তির লাশ পাওয়া যায়; সেও চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালি কন্টেইনারে সেখানে পৌঁছে। ফলে খালি কন্টেইনারই তাদের টার্গেট।

বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, পণ্যভর্তি রপ্তানি কন্টেইনারে ঢুকে কোন ব্যক্তির বন্দরের ভিতরে প্রবেশের সুযোগ নেই। কারণ ডিপো থেকে যেসব রপ্তানি কন্টেইনার আসে সেগুলো সীলগালা করা থাকে। ট্রেইলরে করে ঢুকে সরাসরি জেটিতে গিয়ে জাহাজের পাশে দাঁড়ায়। আর ক্রেন দিয়ে সেই কন্টেইনার জাহাজে তোলা হয়। আর খালি কন্টেইনার আসে সাধারনত বন্দরের বাইরে বেসরকারী কন্টেইনার ডিপো থেকে। ফলে তাদের টার্গেট থাকে ওই খালি কন্টেইনার।

এক বার্থ অপারেটর কর্মকর্তা বলছেন, খালি কন্টেইনারে বাইরে থেকে বন্দরে দুই উপায়ে ওই ব্যক্তি কন্টেইনারে করে বিদেশে পাড়ি দিতে পারে। একটি হচ্ছে, খালি কন্টেইনারে ডিপো থেকে লুকিয়ে বন্দর কর্মকর্তাদের গাফিলতির সুযোগে বন্দর সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ। আরেকটি হচ্ছে, ইয়ার্ড, জেটিতে পণ্য উঠানামার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের কেউ সুযোগ বুঝে খালি কন্টেইনারে উঠে যাওয়া।

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার এসোসিয়েশন সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজন বলছেন, ডিপো বা চট্টগ্রাম বন্দরের ভিতর কোন এক জায়গায় নিরাপত্তা ঘাটতি বা দুর্বলতা আছেই বলেই তো বারবার এই ঘটনা ঘটছে। এবার ছেলেটি জীবিত থাকায় তার কাছ থেকে সঠিক বয়ান জেনে দুর্বলতা সম্পর্কে ধারনা পাওয়া এখন সবচেয়ে সহজ। কিভাবে সে এত কঠিন এবং দীর্ঘ পথ পাড়ি দিল সেটি হয় বাংলাদেশে এনে কিংবা দুতাবাসের মাধ্যমে জেনে ঘাটতি উত্তরণ সম্ভব। এসব ঘটনায় বিশ্ব শিপিং বাণিজ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের ভাবমূর্তি যাতে আর ক্ষুন্ন না হয় তার দ্রুত স্থায়ী সমাধান দরকার।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘বন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সুরক্ষিত আছে। আমরা সংবাদপত্রে বিষয়টি জেনেছি কেলাং বন্দর ও শিপিং লাইন থেকে কোন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলেই তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি উদঘাটন করা হবে।’

উল্লেখ্য, এর আগেও চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কন্টেইনারে ঢুকে বিদেশের বন্দরের চলে গেছ্ েএদের মধ্যে অনেকে জীবিত ছিল আবার অনেকেই মারা গেছে।

এর আগে ২০১৬ সালে ভারতের বিশাখাপত্তনম বন্দরে একটি খালি কন্টেইনার থেকে মোহাম্মদ রোহান হোসেন (৩০) নামে এক যুবককে উদ্ধার করেছিলো সেখানকার পুলিশ।
২০১৭ সালে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সিঙ্গাপুরগামী একটি জাহাজে কন্টেইনার বোঝাই করার সময় বাবুল ত্রিপুর নামে কেডিএস কন্টেইনার ডিপোর এক শ্রমিককে কন্টেইনারের ভেতর থেকে উদ্ধার করেছিলো বন্দরের নিরাপত্তা কর্মীরা।

২০১১ সালে গাঁজা সেবনের পর ঘুমানোর জন্য সহকর্মী আল আমীনকে নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে রাখা একটি খালি কন্টেইনারে ঢুকেছিলেন দ্বীন ইসলাম। ১ এপ্রিল তাদের নিয়েই হানসা কালেডো নামের একটি জাহাজ সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ করে।

এর পাঁচদিন পর জাহাজটি সিঙ্গাপুর বন্দরে পৌঁছায়। কন্টেইনারটি আরো পাঁচ দিন ওই বন্দরে পড়ে থাকার পর বন্দরের পাসিং পানজার টার্মিনালের কর্মীরা আল আমীনের মরদেহ পায়, তবে দ্বীন