Site icon The Bangladesh Chronicle

ক্রান্তিকালে পাকিস্তানের রাজনীতি

ক্রান্তিকালে পাকিস্তানের রাজনীতি – ছবি : সংগৃহীত


পাকিস্তানের টালমাটাল রাজনীতি এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বিশেষ করে দেশটির ক্ষমতাধর সেনাবাহিনীর অরাজনৈতিক অবস্থানের কথা ঘোষণা পরিস্থিতিকে আরো জটিল ও সঙ্কটাপন্ন করে তুলেছে। কারণ দেশটির জন্মের পর থেকেই সেনাবাহিনী কখনো সরাসরি কখনো বা নেপথ্যে থেকে শাসন করে আসছে। ফলে হঠাৎ সেনা নেতৃত্বের অরাজনৈতিক অবস্থান ঘোষণায় রাজনৈতিক নেতারাও একটু বেকায়দা অবস্থায় আছেন। কারণ একদিকে যেমন দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি ও অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিতে শাহবাজ সরকারের সেনাবাহিনীর সহযোগিতা দরকার; তেমনি অন্য দিকে ইমরান খানের দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি পূরণের জন্যও সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতা প্রয়োজন। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের তিন দিনের মাথায় আইএসপিআর-এর ডিজি মেজর জেনারেল বাবর ইফতেখার এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অরাজনৈতিক অবস্থানের কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী ক্ষমতাসীন সরকারক সমর্থন করে থাকে যেমনটা ইমরান খান সরকারকে সমর্থন করেছিল। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, জেনারেল বাবরের বক্তব্য সত্যের অপলাপ ছাড়া আর কিছু নয়। নিঃসন্দেহে সরকার পরিবর্তনে সেনাবাহিনীর নীরব ভূমিকা ছিল। সুতরাং সেনাবাহিনীর অরাজনৈতিক কিংবা নিরপেক্ষ অবস্থানের কথা সত্যের চেয়ে চাতুর্যপূর্ণ বেশি।
পাকিস্তানের রাজনীতি সম্পর্কে যাদের সামান্যতম ধারণা আছে, তারা ভালো করে জানেন যে, পাকিস্তানের জন্মের পর থেকেই দেশটির সেনাবাহিনী কখনো সরাসরি কখনো নেপথ্যে থেকে শাসন করে আসছে। বিগত ৭৫ বছরে ৩৩ বছরই সেনাবাহিনী দেশটি শাসন করেছে। ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান, সর্বক্ষণিক নিরাপত্তা উদ্বেগ, আফগান যুদ্ধ, অভ্যন্তরীণ জঙ্গি হামলা এবং সর্বোপরি রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যকার দ্ব›দ্ব ও বিভাজন সেনাবাহিনীকে বারবার প্রলুব্ধ করেছে ক্ষমতা দখলের জন্য কিংবা নেপথ্যে থেকে শাসন করতে।

পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই নিরাপত্তাজনিত আশঙ্কার কারণে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যে সিভিল-মিলিটারি অ্যালায়েন্স তৈরি করেছিলেন তা গত ৭৫ বছরে অবধারিত বাস্তবতায় রূপ নিয়েছে যদিও বিগত দেড় যুগ বেসামরিক রাজনৈতিক সরকার কর্তৃক দেশ শাসন চলছে। তথাপি পাকিস্তানের অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতিতে সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ব বজায় রয়েছে যা প্রায় অলঙ্ঘনীয় পর্যায়ে। ফলে সেনাবাহিনী দূরে আছে আবার দূরে নেই। আর নিরাপত্তাজনিত কারণে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পক্ষেও সেনাবাহিনীকে নিরপেক্ষ অবস্থানে ঠেলে দেয়া সম্ভব নয়; এটা যেন একটা পরিপূরক অবস্থান। এই বাস্তবতার কারণে পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ রবীন্দ্রনাথের ‘খাঁচার পাখির’ মতো স্বাধীনভাবে উড়তে পারে না। তাদের চেয়ে থাকতে হয় সেনাবাহিনীর দিকে। এখন বর্তমান সঙ্কট উত্তরণে সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই সেনাবাহিনীর ভূমিকা কী দাঁড়াবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।

তবে সরকার বদলের প্রক্রিয়া যেভাবে সম্পন্ন হয়েছে তাতে পর্দার অন্তরালে সেনাবাহিনীর ভূমিকা কি ছিল তা বুঝতে কারো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। সা¤প্রতিক সরকার বদলের গোটাপ্রক্রিয়া পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় যে, সেনাবাহিনী, বিচার বিভাগ ও ১২ দলীয় পিডিএম-এর যৌথ পরিকল্পনা ও প্রযোজনায় ইমরান খান সরকারকে হটানো হয়েছে। কারণ আদালত ইমরান খান সরকারের কোনো অভিযোগই আমলে নেয়নি; যেমন পিটিআই-এর কিছু সদস্যের ফ্লোর ক্রসিং, অর্থের লেনদেন এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মার্কিন হস্তক্ষেপ যা দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছিল। বলা হয়েছিল, এটা ক্ষমতা বদলের প্রত্যক্ষ হুমকি। কিন্তু আদালত এসব কোনো বিষয় গ্রাহ্যই করেনি। বরং মূল ধারার পত্র-পত্রিকা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ইমরানকে অর্থনৈতিক দুরবস্থার জন্য দায়ী করে তাকে অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিস্ট হিসেবে ব্যাপক প্রচারণা চালানো শুরু করে। মূলত এটা ছিল নয়া উপনিবেশবাদের কাছে কর্তৃত্ববাদী মহলের সমন্বিত আত্মসমর্পণের বহিঃপ্রকাশ। সেনাবাহিনী এর বাইরে ছিল, তা কখনো মনে হয়নি। এখানে এটা দেখা যাচ্ছে যে, মার্কিন হস্তক্ষেপমূলক চিঠিটা আসার পরই পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাবের প্রক্রিয়া শুরু হয়, যা ছিল গণতন্ত্র ও সংবিধানের নামে এক কলঙ্কিত অধ্যায়। গণতান্ত্রিক কাঠামোর চূড়ান্ত অপব্যবহার, যা কায়েমি স্বার্থবাদী মহলকে আপাতত সুবিধা দিলেও দীর্ঘ মেয়াদে গণতন্ত্রেরই কবর রচনা হয়েছে। ফলে সেনাবাহিনীর অরাজনৈতিক অবস্থান ঘোষণা প্রতারণা ও দুরভিসন্ধিমূলক।

কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যদি বিদেশী মদদপুষ্ট ষড়যন্ত্রমূলক শাসনের বিরুদ্ধে গণ অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ফেলতে পারেন; তাহলে পরিস্থিতি উল্টে যেতে পারে। কারণ সেনাবাহিনী দেশের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গণ অসন্তোষের মুখোমুখি হতে চাইবে না। এ রকম অবস্থা সৃষ্টি হলে সেনানায়করা রেফারির ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন। তার অর্থ, আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে বাধ্য করা। এখন দেখা যাক, ৬ দিনের আলটিমেটাম শেষে ইমরান খান কী ঘোষণা দেন। পয়লা জুন ওই আলটিমেটামের মেয়াদ শেষ হবে।

এখন এটা সত্য যে, ইমরান খান যদি আবার লংমার্চের ঘোষণা দেন; তাহলে সরকার আরো বেশি শক্তি নিয়ে প্রতিহত করতে রাস্তায় নামবে, যার অবধারিত পরিণতি হবে সঙ্ঘাত, সংঘর্ষ। আর এ ধরনের পরিবেশে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের জন্য বসে আছে অনেকে। সবচেয়ে বড় কথা, ফেডারেল রাষ্ট্রব্যবস্থায় কেন্দ্র দুর্বল হলে নিরাপত্তাও দুর্বল হয়ে পড়ে। অতীতের অনেক সাম্রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্বলতার কারণে ভেঙে খানখান হয়ে গেছে। ভারত সাম্রাজ্যের বাহাদুর শাহের কথা বাদই দিলাম আমাদের নিকট অতীতে সোভিয়েত সাম্রাজ্যের পতন ঘটেছে কমিউনিস্ট আদর্শগত বিপর্যয়ের কারণে নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্বলতার কারণে। তার পারমাণবিক শক্তিসহ বিশাল সেনাবাহিনী কোনো কাজে আসেনি। কমিউনিস্ট আদর্শগত ব্যাপার হলে গণচীন এখনো কিভাবে টিকে আছে?

এ ছাড়া এটা এখন স্পষ্ট যে, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে পাকিস্তানের সমাজ মোটা দাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এক দিকে শহরের মধ্যবিত্ত ও গ্রামাঞ্চলের বিপুল দরিদ্র মানুষ যারা ইমরান খানকে সমর্থন করছে; অন্য দিকে দুর্নীতিগ্রস্ত শরিফ- জারদারির পরিবারতন্ত্রের অনুসারী ফিউডাল এলিট ক্লাস। এ ছাড়া রয়েছে বিশাল নিরাপত্তা ঝুঁকি যে ঝুঁকি পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সবসময় ভাবিয়ে রাখে। সবার জানা আছে যে, পাকিস্তানের সঙ্গে রয়েছে ভারত, ইরান, আফগানিস্তান ও চীনের সীমানা। ভারতের দিক থেকে সার্বক্ষণিক হুমকি, আফগানিস্তান থেকে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা, সম্প্রতি বেলুচিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা বৃদ্ধি-সব মিলিয়ে সেনাবাহিনী চাপের মধ্যে আছে। এই অবস্থায় অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি সঙ্ঘাতময় হয়ে উঠলে নিরাপত্তাসহ অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক হয়ে পড়বে। ফলে এ পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন নিরপেক্ষ থাকতে পারবে বলে মনে হয় না। হয় তাকে দ্রæত নির্বাচনের দিকে যেতে হবে, না হয় সামরিক অভ্যুত্থান ঘটাতে হবে। এখন ইমরান খানের হাতে আন্দোলন করার যে ক্ষমতা সঞ্চিত আছে তা প্রয়োগ করা শুরু করলে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে উঠবে। কারণ ইমরান খানের জনপ্রিয়তা এখন আকাশছোঁয়া। আর তিনি জানেন, কিভাবে জনগণকে উজ্জীবিত করা যায়।

এদিকে ইমরান খানের বড় দুর্ভাগ্য। তার মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলের অভূতপূর্ব সাফল্যগুলোকে সুপরিকল্পিত অপপ্রচারে ঢেকে দেয়া হয়েছে। অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় তার স্বল্প সময়ের সাফল্য ছিল অভাবিত। বিশেষ করে তার সরকারের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সম্পূর্ণ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশে এটা কি ভাবা যায়! হ্যাঁ, সেটাই হয়েছে। কিন্তু পরাশক্তিটির কাছে সেটা বিবেচিত হয়নি।

তবে ইমরান খানের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল যে, তিনি কায়েমি স্বার্থের শক্তিশালী বৃত্ত ভেঙে নয়া পাকিস্তান গড়ার যে কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন তার জন্য দরকার ছিল একটি সংঘবদ্ধ শক্তিশালী সরকার। কিন্তু সেটা তার ছিল না। তিনি নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও তাকে কয়েকটি ছোট দল নিয়ে একটি দুর্বল সরকার গঠন করতে হয়েছিল। এই জোটের এমনকি তার নিজ দলের অনেকেই এ রকম একটা আমূল পরিবর্তনের পক্ষে ছিলেন না। তারা ছিলেন সুবিধাবাদী ও পুরনো কায়েমি স্বার্থের অনুগামী। তাই সহজেই তারা দল বদল করে ফেলেন। অন্য দিকে যখন তিনি দেখলেন, তার দলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এমপি ও কয়েকটি শরিক দল বিরোধী দলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে, তখনই সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে দেয়া উচিত ছিল। কিন্তু তিনি সময় ক্ষেপণ করে মারাত্মক ভুল করে ফেলেন। আর এই সুযোগ পেয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা স্বল্পতম সময়ে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করে ফেলে। আর অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের পর পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী সংসদ ভেঙে দেয়ার কোনো সুযোগ থাকে না যদিও পরবর্তী ঘটনাবলি নিয়ে বিরাট প্রশ্ন রয়েই গেছে।

দ্বিতীয়ত, ইমরান খান যাদের নিয়ে পিটিআই গঠন করেছিলেন তাদের অনেকেই ছিলেন বিভিন্ন দলছুট সুবিধাবাদী নেতা, যারা প্রচলিত ধারার রাজনীতিতে অভ্যস্ত। একটা বড় পরিবর্তনের ধারণায় তারা ভীত হয়ে পড়েছেন। তিনি যে কর্মসূচি দিয়েছিলেন তা বাস্তবায়নের জন্য দরকার ছিল সুসংহত পাথরকঠিন রাজনৈতিক দল। কিন্তু সেটা তার ছিল না। আর সে কারণেই ইমরান খানকে এ ধরনের বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে।

তবে সব মন্দেরই ভালো দিক আছে। কথায় আছে, আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। কারণ ষড়যন্ত্রমূলক এই অপসারণ ইমরান খানকে পাকিস্তানের অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত করেছে। তার ডাকে দেশের ভিতরে ও বাইরে কোটি কোটি মানুষ রাস্তায় নেমে আসে তা সে দিনে বা রাতে হোক। বিদেশী গোলামির শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীনতার যে ডাক তিনি দিয়েছেন তা পাকিস্তানের প্রতিটি তরুণকে আবেগের জোয়ারে ভাসিয়ে দিয়েছে। উদ্বুদ্ধ করেছে স্বাধীনতার জন্য জীবন কোরবানি করার জন্য।

আর যে সঠিক কাজটি তিনি করেছেন, তা হচ্ছে, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর কোনো সময় ক্ষেপণ না করে চলে গেছেন জনতার আদালতে। জনগণ তাকে ফিরিয়ে দেয়নি। লুফে নিয়েছে মহান নেতা হিসেবে। আর তার শত্রæরা ক্ষমতায় বসে ইমরান সুনামিতে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। তাই তো শুরু হয়েছে নানা ধরনের নিপীড়ন। জ্যাঁ পল সার্ত্রের ‘অস্তিত্ববাদ’ যেন মূর্ত হয়ে উঠছে।

অপার দিকে শাহবাজ শরিফের সরকার সূ² সুতার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। তার টিকে থাকা ও পতনের মাঝখানে মাত্র দু’ভোটের ব্যবধান। দু’ভোট বেরিয়ে গেলেই পতন ঘটে যাবে তার সরকারের। তবুও তিনি বেপরোয়া। ভাবছেন, বাকি মেয়াদ পূর্ণ করবেন। কিন্তু পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, কেবলমাত্র ইমরান চাপ নয়; যে কোনো সময় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে ফেলতে পারেন। সম্ভাবত সে কারণে সংসদে তড়িঘড়ি করে তাদের কাক্সিক্ষত নির্বাচনী সংস্কার বিলগুলো পাস করিয়ে নিয়েছেন। হয় তো মেয়াদ পূরণের আকাক্সক্ষা পূর্ণ নাও হতে পারে।

Exit mobile version