মানিকগঞ্জে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রবাসীরা স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মানছেন না। প্রকাশ্যে হাট-বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সেলুনে কিংবা চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, অনেক বিদেশ ফেরত ব্যক্তি নিজ নিজ এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা তারা মানছেন না। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা: আনোয়ারুল আমিন আখন্দ জানান, করোনা ভাইরাসের লক্ষণ না থাকলেও সতর্কতা হিসেবে চিহ্নিত প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে নিষেধ করা হলেও অনেকেই নির্দেশনা মানছেন না। অবাধে হাট-বাজার, চায়ের দোকানসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বারবার সতর্ক করা হলেও তারা ভ্রুক্ষেপ করছেন না। তাদের মধ্যে কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে ভয়াবহ বিপদ হতে পারে।
জেলা সিভিল সার্জন সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জে প্রবাসীদের দেশে আসার সংখ্যা বাড়ছে। মঙ্গলবার নতুন ৯৩ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ নিয়ে ৩৮৯ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনের আওতায় রাখা হয়েছে। পর্যবেক্ষণ শেষে ৬২ প্রবাসীকে কোয়ারেন্টাইন থেকে মুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে মানিকগঞ্জে ৩২৭ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
কোয়ারেন্টাইনে থাকার ব্যাপারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় মানিকগঞ্জের ঘিওরে এক অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীকে ১৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আইরিন আক্তার এ অর্থদণ্ড প্রদান করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের পশ্চিম কুশুণ্ডা গ্রামের ইন্তাজ উদ্দিনের ছেলে পান্নু মিয়া (৭০)।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আইরিন অক্তার জানান, কোয়ারেন্টাইন অমান্য করলে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে। সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত মানিকগঞ্জে করোনাভাইরাস আক্রান্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি।
মানিকগঞ্জে কোয়ারেন্টাইন নির্দেশনা অমান্য করে কোয়ারেন্টাইন ছেড়ে বাইরে যাওয়ায় এক সৌদি প্রবাসীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
১৫ মার্চ বিকেলে তাকে এ জরিমানা করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম।
হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ অমান্য করায় মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় আরেক প্রবাসীকে অর্থদণ্ড দিয়েছেন ইউএনও। তিনি ইরাক থেকে ফিরেছেন। ইরাক ফেরত ওই ব্যক্তি গত ৬ মার্চ দেশে ফেরেন। তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি নির্দেশনা অমান্য করে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। সোমবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ওই ব্যক্তিকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
জানা যায়, মঙ্গলার সিংগাইরে কুয়েত থেকে আসা এক প্রবাসীকে ও ঘিওরে সিঙ্গাপুর প্রবাসীকে স্থানীয় বাজারে বাজার করতে ও বাইরে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে। এতে এলাকায় ছড়িয়ে পরছে আতঙ্ক।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করেছি। না হলে এটা ছড়িয়ে যেতে পারে। যারা কোয়ারেন্টাইন নির্দেশনা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।