Site icon The Bangladesh Chronicle

কেন্দ্রের গবাদি পশু নি‍র্দেশিকা মানবে না রাজ্য, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

কেন্দ্রের গবাদি পশু নি‍র্দেশিকা মানবে না রাজ্য, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

May 29, 2017

#কলকাতা: চাষের কাজ ছাড়া পশুবাজারে কেনা যাবে না গরু, মোষ, বলদ, বাছুর এমনকি উটও। কেন্দ্রের তরফে ইতিমধ্যেই জারি হয়েছে নির্দেশিকা ৷ সেই নির্দেশকে একতরফা বলে অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ একইসঙ্গে কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো খর্ব করারও অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান ৷

গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি

করে জানানো হয়, দেশের কোনও জায়গাতেই এবার থেকে গরু,

মোষ-সহ গবাদি পশুকে হত্যা বা বিক্রি করা যাবে না ৷ পশুকল্যাণের

হিতেই এই নতুন নিয়ম জারি করা হয়েছে ৷ বাজারে গবাদি পশু আনতে

গেলে আগাম অনুমতি পত্র লাগবে ৷ যদি কেউ গরু বা মোষ কিনতে চান

তাহলে তাকে সঠিক পরিচয় পত্র দিতে হয়ে যে সে পেশায় কৃষক ৷

কেন্দ্রের এই নির্দেশিকা মানতে নারাজ রাজ্য ৷ এদিন কেন্দ্রের গবাদি পশু

সংক্রান্ত নি‍র্দেশিকা নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গবাদি পশু

সংক্রান্ত নির্দেশিকা একতরফা ৷ নিয়ম-নীতির কোনও তোয়াক্কা করছে না

৷ কেন্দ্রের মত রাজ্য সরকারও নির্বাচিত ৷ জোর করে রাজ্যের উপরে

সিদ্ধান্ত চাপানো হচ্ছে ৷ ক্রমাগত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ভাঙার চেষ্টা

চলছে ৷ রাজ্যের অধিকার খর্বের চেষ্টা করা হচ্ছে ৷ এটা সংবিধান বিরোধী ৷

তাই আইন আমরা মানব না ৷ এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করব ৷’

একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘কে কী খাবে, পরবে সেটাও ঠিক করে দেবে? গবাদি পশু কোথায় বিক্রি হবে না হবে,সেটাও ওরা ঠিক করে দেবে? কৃষকরা গরু নিয়ে যাচ্ছেন, খুন করা হচ্ছে ৷ উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশে এই ঘটনা ঘটছে ৷ আমার কাছে সব ধর্মই এক ৷’

গবাদি পশু নিয়ে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে মাথায় হাত মাংস, চামড়া ব্যবসায়ীদের। দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা কয়েক হাজার ট্যানারিও অনিশ্চয়তার মুখে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ধাক্কায় বসে যেতে চলেছে লক্ষ কোটি টাকার শিল্প। অ্যাসোসিয়েশন অফ মিট সাপ্লায়ার্স ফেডারেশন, অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল অফ লেদার এক্সপোর্ট কমিটি কিংবা ইন্ডিয়ান লেদার গুডস এক্সপোর্ট কাউন্সিলের মতো সংগঠন এখনই সিঁদুরে মেঘ দেখছে।

৯০ শতাংশ কেনাবেচাই পশুবাজার থেকে হয়। কেন্দ্রের নিয়ম মানতে

হলে চামড়া ও মাংস ব্যবসাটাই উঠে যাবে। তাই এই নিয়ম মানা সম্ভব

নয়। বিষয়টি পুর্নবিবেচনার আবেদন জানাবে কাউন্সিল।

আশঙ্কা, নতুন নিয়মে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি চাকরি হারাবেন ২৫ লক্ষ

মানুষ। রোজগার যাবে আরও ৫০ লক্ষ কর্মীর। এরাজ্যেও অবস্থাটা আরও

খারাপ। চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসার অর্ধেকই হয় পশ্চিমবঙ্গে। রফতানিতে

দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে রাজ্য। রাজ্যেই বেকার হতে হবে লক্ষাধিক

মানুষ। টান পড়বে খাদ্যেও। ক্ষতির বহর কোথায় দাঁড়াবে, তাই ভেবে

পাচ্ছেন না পোড়খাওয়া ব্যবসায়ীরা।

Exit mobile version