Site icon The Bangladesh Chronicle

কাল থেকে শুরু এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের লড়াই

কাল থেকে শুরু এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের লড়াই –

রাত পোহালেই মহারণ। এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের লড়াই। প্রতিটি দলের উদ্দেশ্য মিলে গেল একই বিন্দুতে, লক্ষ্য একটাই; চ্যাম্পিয়ন। চ্যাম্পিয়ন হতে প্রস্তুত হয়েই দুবাই পা রেখেছে প্রতিটি দল, নিজেদের সেরা শক্তি নিয়েই লক্ষ্য জয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে তারা। চলুন দেখে আসি ৬ দলের শক্তিমত্তা, যাদের দিকে তাকিয়ে থাকবে সমর্থকরা।

বাংলাদেশ : সাকিব আল হাসান
প্রায় এক যুগ যাবত আশা, ভরসা, বিশ্বাস আর অনুপ্রেরণার উৎস তিনি। রুগ্নতার চাদরে মোড়া বাংলার ক্রিকেটের ধূসর কালো মলিন পোস্টারটিকে এভাবেই ক্ষণে ক্ষণে ধীরে ধীরে সরিয়ে দিয়ে আশ্চর্য বলশালী ক্রিকেটের ছবি এঁকেছেন তিনি বিশ্ব মানচিত্রে লাল-সবুজের কালিতে। যেই ছবি আঁকতে গিয়ে বিশ্বসেরার তকমা পেয়েছেন গায়ে। ফলশ্রুতিতে ৩৫ বছর বয়সে এসেও বাংলাদেশ আজও তার দিকে তাকিয়ে থাকে।

৯৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ২ হাজার ১০ রান সংগ্রহ করেছেন সাকিব। ২৪ গড় আর ১২১ স্ট্রাইক রেট। সর্বোচ্চ রান ৮৪। ৬ দশমিক ৬৯ ইকোনমিতে ১২১ উইকেট নিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেট তার দখলে। ৫ উইকেট নিয়েছেন একবার। ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিজের করে নিয়েছেন ৯ বার। সুতরাং, ফের সাকিবেই ফেরা, সাকিবেই ভরসা আরো একবার।

আফগানিস্তান : রশিদ খান
আফগান ক্রিকেট রূপকথার রাজকুমার তিনি। বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছেন তিনি আফগান ক্রিকেটে। যুদ্ধগ্রস্ত দেশটির মানুষের মুখে একটুখানি হাসি ফুটাতে গোটা বিশ্ব দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন ক্রিকেটকে সম্বল করে। সাথে সমুন্নত করছেন দেশের নাম। লেগ স্পিন বিভ্রমে গোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দেয়া রশিদ খানের নতুন পরিচয় অলরাউন্ডার। এশিয়া কাপে বোলার রশিদের পাশাপাশি ব্যাটার রশিদের দিকেও তাকিয়ে থাকবে আফগানিস্তান।

বর্তমান র‍্যাংকিংয়ের পঞ্চম বোলার তিনি। ৬৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১১২ উইকেট তার। ইকোনমি ৫ দশমিক ৮৯। ব্যাট হাতে শুরুতে সাবলীল না হলেও এখন দলের প্রয়োজনে ঝড়ো ইনিংস খেলতে পারেন রশিদ খান। ফলে দল তার থেকে সেরা পারফর্মটাই আশা করে।

ভারত : হার্ডিক পান্ডিয়া
দলে একাধিক পারফর্মার, আছেন বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, ভুবেনেশ্বর কুমার। তারপরও তার দিকে তাকিয়ে থাকবে দল, তিনি দলের পরিপূর্ণ অলরাউন্ডার। ব্যাট হাতে কী পারেন, কতটা পারেন গত আইপিএলেই তা দেখিয়েছেন। সুতরাং তার কাঁধেই শতকোটি ভারতবাসীর প্রত্যাশার পাহাড়।

জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে ৪৮ ইনিংসে ৮৩৪ রান মাত্র, তবে ক্রিকেটারদের বেলায় পরিসংখ্যানই কি যথেষ্ট? দেখতে হবে কতো ম্যাচে সুযোগ পান ব্যাট হাতে, তবে স্ট্রাইকরেটে চোখ কপালে উঠবে; ১৪৫। গড় প্রায় ২৪। বোলিংয়েও হয়তো আহামরি নয়, ৫৮ ইনিংসে ৮.২৮ ইকোনমিতে ৫০ উইকেট নামের পাশে। তবুও সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় ভারতবাসী থাকবে তার জ্বলে উঠার অপেক্ষায়।

পাকিস্তান : বাবর আজম
ধ্রুপদী ব্যাটসম্যানের আরেক রূপ পাকিস্তানের বাবর আজম। নান্দনিক ব্যাটিং পসরার পাশাপাশি তিনি যেন ধারাবাহিকতার প্রতিচ্ছবি! কী নেই তার ব্যাটে? তার স্বভাবজাত শৈল্পিক কভার ড্রাইভ থেকে প্রতিপক্ষকে ছত্রখান করে দেয়া খুনে ব্যাপারটিও রয়েছে তার হাতে। বলা চলে বজ্রহীন এক ঝড় যেন তিনি। যিনি পৈশাচিক নয়, নিরব ঘাতক!

সময়ের সেরা এই টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৭৫ ম্যাচেই করে ফেলেছেন ২ হাজার ৭৩৬ রান। ১৩০ স্ট্রাইকরেটে গড় ৪৬! অধিনায়ক হিসেবেও বেশ সফল বাবর। নামের শুরুতে সম্রাট বসাতে শুধুই প্রয়োজন একটা শিরোপার। নিশ্চয়ই এবার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবেন না এই ব্যাটার।

শ্রীলঙ্কা : ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা
হালের ক্রিকেটে আলোড়ন ফেলে দেয়া চরিত্র তিনি। গত আইপিএল বাড়িয়ে দিয়েছে ঝলকানি। বলহাতে ক্রমশ যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছেন, বাঘা ব্যাটারদেরও ঘোলাজল খাইয়ে ছাড়ছেন। তিনি ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের সব চাইতে জ্বলজ্বলে নাম।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট র‍্যাংকিংয়ে ষষ্ঠ বোলার তিনি, অলরাউন্ডার র‍্যাংকিংয়েও আছেন সেরা ১০ তালিকায়। ৩৮ ম্যাচে ৬২ উইকেট তার দখলে, ইকোনমি ৬ দশমিক ৬১। ব্যাট হাতে ১৫ গড় আর ১২১ স্ট্রাইকরেটে আছে ৩৮২ রান। লঙ্কান সিংহ কতদূর দৌড়াবে তার অনেকটাই হাসারাঙ্গার উপর নির্ভর করবে।

হংকং : নিজাকাত খান
১৪ বছর পর ফের এশিয়া কাপে উত্থান। ২০০৮ সালের পর দেশকে নিয়ে এসেছেন এশিয়া কাপের মূল দলে। কতটা ত্যাগ, সাধনা আর শ্রমের বিনিময়ে এই অর্জন, তা হয়তো এই স্থানে বসে বুঝা অসম্ভবই বটে। বাছাইপর্বের সবক’টি ম্যাচ জিতে মূল পর্বে দলকে পৌঁছে দেয়ার অন্যতম কাণ্ডারী অধিনায়ক নিজাকাত খান।

৪৮ ম্যাচে ৮৮৯ রান করা নিজাকাত খানের গড় প্রায় ২০। স্ট্রাইকরেট ১২৫। তবে বর্তমানে দলের সেরা পারফর্মার তিনি। ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে আছেন হংকং অধিনায়ক। ভালো কিছু করতে তার দিকেই তাকিয়ে থাকবে হংকং এন্ড কোং।

Exit mobile version