Site icon The Bangladesh Chronicle

কারাদণ্ডের মেয়াদ থেকে হাজতবাস বাদ যাবে

Prothom Alo

নাটোরের জোড়া খুনের এক মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডিত এক আসামির লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) ও জামিন আবেদন খারিজ করে পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনাসহ আপিল বিভাগ ওই সিদ্ধান্ত দেন। ইউনুছ আলী নামের ওই আসামি ২৬ বছর ধরে কারাগারে আছেন, তাঁর ক্ষেত্রে বিচারিক আদালতের রায়ে ৩৫ (এ) ধারার সুবিধার কথা উল্লেখ ছিল না।

আদালত বলেছেন, কোনো মামলার রায়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ (এ) সুবিধার কথা আদালত সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না করলেও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে আবেদনকারী বা আপিলকারীকে ৩৫ (এ) সুবিধা পাবেন। এ নির্দেশনা যাবজ্জীবনসহ অন্য মেয়াদের কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে অনুসরণ করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে এ আদেশ কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে। আদেশের বিষয়টি দেশের সব কারাগারকে অবহিত করতে আইজি প্রিজনসকে নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। একই সঙ্গে আদেশের অনুলিপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া লিভ টু আপিলকারীও ৩৫ (এ) ধারার সুবিধা পাবেন বলে উল্লেখ করেন আদালত।

আদালতে ইউনুছের পক্ষে আইনজীবী গোলাম আব্বাস চৌধুরী এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ শুনানি করেন। আদেশের আগে বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন লিভ টু আপিলকারীর আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, কত বছর ধরে জেলখানায় আছে? তখন আইনজীবী গোলাম আব্বাস চৌধুরী বলেন, বর্ষপঞ্জি হিসাবে ২৬ বছর ধরে কারাগারে আছেন। পরে প্রধান বিচারপতি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।
এর আগে আদালত বলেন, লিভ টু আপিলকারীর (ইউনুছ) আইনজীবী উপস্থাপন করেছেন যে বর্ষপঞ্জি হিসাবে গত ২৬ বছর ধরে আবেদনকারী কারাগারে আছেন। কারা কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল আগেই তাঁকে মুক্তি দেওয়া। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ (এ)–এর সুবিধা এখনো আবেদনকারীকে দেওয়া হয়নি এবং কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে এখনো হেফাজত (কারাগার) থেকে মুক্তি দেয়নি।

পরে আইনজীবী গোলাম আব্বাস চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ (এ) ধারা অনুসারে তদন্তসহ মামলার বিচারকালে আসামি যত দিন কারা ভোগ করবেন—হাজতবাসের ওই সময়টুকু মূল সাজা থেকে বাদ যাবে। ইউনুছের ক্ষেত্রে বিচারিক আদালতের রায়ে ৩৫ (এ) ধারার সুবিধার কথা উল্লেখ ছিল না। হাইকোর্টে ইউনুছের সাজা কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল ও তাঁর জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। ৩৫ (এ) ধারা বিধান মানা বাধ্যতামূলক বলেছেন আপিল বিভাগ। অর্থাৎ হাজতবাসের মেয়াদ দণ্ডিতের কারাদণ্ড ভোগের মেয়াদ থেকে বাদ যাবে। ইউনুছ ৩৫(এ) ধারার সুবিধা পাবেন। ফলে ইউনুছ কারামুক্তি পাবেন।

Exit mobile version