Site icon The Bangladesh Chronicle

কাতারের সঙ্গে ২৭ বছরের গ্যাস চুক্তি করল চীন

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর পশ্চিমারা রাশিয়ার গ্যাস ও তেলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ফলে বিশ্বজুড়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ কমে যায়। স্বাভাবিকভাবেই স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায়। সে কারণে বাংলাদেশসহ অনেক উন্নয়নশীল দেশ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস কেনা কমিয়ে দেয়। এ পরিস্থিতিতে কাতার নিজেদের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধি করার নানা পরিকল্পনা করছে। তার অংশ হিসেবে কাতার নর্থফিল্ড গ্যাসক্ষেত্র সম্প্রসারণ করছে। বর্তমানে তাদের বার্ষিক এলএনজি উৎপাদনক্ষমতা ৭৭ মিলিয়ন টন, ২০২৭ সালের মধ্যে তারা সেটা ১২৬ মিলিয়ন টনে উন্নীত করতে চায়।

এদিকে রাশিয়ার জ্বালানিতে পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা দিলেও চীন তার থোড়াই কেয়ার করছে। রয়টার্সের আরেক খবরে জানা গেছে, চলতি বছর চীনে রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানি ৬৪ শতাংশ বেড়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার নোভাক। এতে মস্কোরও রপ্তানি বেড়েছে, আবার চীনেরও লাভ, কারণ তারা রাশিয়ার কাছ থেকে বাজারমূল্যের চেয়ে কম মূল্যে জ্বালানি পাচ্ছে।

ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর থেকেই বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে মস্কো। এতে রাশিয়ার প্রধান বাজার ইউরোপে জ্বালানি রপ্তানি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। মস্কো জ্বালানি রপ্তানিতে চীন ও ভারতের মতো এশীয় দেশের দিকে মনোযোগ বাড়িয়েছে। চীনের মুদ্রা ইউয়ান ও রুশ মুদ্রা রুবলে লেনদেন হওয়ায় এ দুটি মুদ্রা শক্তিশালী হয়েছে। জানা গেছে, সাইবেরিয়া গ্যাস পাইপলাইনে চীনে গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে লেনদেন হচ্ছে ইউয়ান ও রুবলে।

জ্বালানিবাজারে চীনের প্রভাব

বিশ্বের বৃহত্তম জ্বালানি তেল আমদানিকারক দেশ হচ্ছে চীন। তার পরেই আছে ভারত। ফলে জ্বালানিবাজারে এ দুটি দেশের বিপুল প্রভাব। চীনের জ্বালানি চাহিদা কমে গেলে বিশ্ববাজারে জ্বালানির চাহিদা কমে যায়। সম্প্রতি বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম হ্রাস পাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে চীনের লকডাউন। দেশটির বিভিন্ন স্থানে লকডাউন আরোপ করার কারণে দেশটির অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্তিমিত হয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা নিম্নমুখী। গতকাল এ প্রতিবেদন লেখার সময় তেলের বাজারের মানদণ্ড ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ছিল ৮৩ দশমিক ৬১ ডলার, যদিও সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ এখনো আছে।

এদিকে মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস বলেছে, চীনের শূন্য কোভিড নীতির কারণে বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদা হ্রাস পাবে। এ বাস্তবতায় তারা আগামী বছরের জন্য তেলের দামের পূর্বাভাস ব্যারেলপ্রতি ১০ ডলার হ্রাস করেছে।

এদিকে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি ফোরাম বলেছে, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞা আগামী মাসে কার্যকর হওয়ার কারণে রাশিয়ার তেল সরবরাহ দিনে এক থেকে তিন মিলিয়ন ব্যারেল হ্রাস পেতে পারে।

Exit mobile version