Site icon The Bangladesh Chronicle

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি বিদ্বেষমূলক কথা বার্তা ছড়াচ্ছে : তথ্যমন্ত্রী

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি বিদ্বেষমূলক কথা বার্তা বলছে : তথ্যমন্ত্রী – ছবি : সংগৃহীত

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি বিদ্বেষমূলক কথা বার্তা ছড়াচ্ছে। রোববার তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়াবলি নিয়ে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশের এই পরিস্থিতিতে কারো রাজনীতি করা উচিত নয়। কিন্তু বিএনপি করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নানা ধরনের বিদ্বেষমূলক-দায়িত্বহীন কথাবার্তা বলছে, রাজনীতি করছে। আসলে এখন সকল রাজনৈতিক দলের উচিত দল মত নির্বিশেষে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় এগিয়ে আসা।’

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আমরা সফল হবো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশ-জাতি সমগ্র পৃথিবী যখন এমন মহাদুর্যোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে তখন আমরা দেখলাম কিছু দায়িত্বহীন ও বিদ্বেষমূলক কথাবার্তা বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। দেশের এই অবস্থায় এ ধরনের দায়িত্বহীন কথা বলার সময় এটি নয়।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এখন রাজনীতি করার সময় নয়। এখন সময় হচ্ছে দলমত পথ নির্বিশেষে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ-জাতিকে রক্ষা করা। সবিনয়ে বিএনপির সবাইকে অনুরোধ জানাবো ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের পাশে দাঁড়ান। কোনো পরামর্শ থাকলে অবশ্যই সরকারকে দেবেন।’

করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় তথ্য মন্ত্রণালয় পৃথক গুজব প্রতিরোধ সেল খুলছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয়ে একটি গুজব প্রতিরোধ সেল আছে। তারপরও সচেতনতা বাড়ানোর জন্য আরও একটি সেল গঠন করতে যাচ্ছি। আজ সে বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। সেলে সকল সংস্থার পক্ষ থেকে প্রতিনিধি থাকবে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে তারা কাজ করবে। এই সেল করোনা প্রতিরোধে যে টাক্সফোর্স গঠন করা হয়েছে তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশে লকডাউন করে দেওয়ার মতো কোনো পরামর্শ দেয়নি জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আবাসিক প্রতিনিধির বরাত দিয়ে যে সংবাদটি শনিবার প্রকাশিত হয়েছে, সে ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা এ ধরনের পরামর্শ এ মুহূর্তে দেননি। ভবিষ্যতে কি হতে পারে, তারা তা নিয়ে আলোচনা করছেন। এ মুহূর্তে সব কিছু লকডাউন করে দেওয়ার মত পরামর্শ তাদের কাছ থেকে দেয়া হয়নি বলে তারা জানিয়েছেন।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমে যখন যেটা প্রয়োজন, সেটি করা হবে। পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। ইতোমধ্যে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অন্যান্য পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনসহ কয়েকটি উপ-নির্বাচন স্থগিত করায় নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এটি অত্যন্ত সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। শনিবার যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেটিও স্থগিত করা যায় কিনা, তা নিয়ে নির্বাচন কমিশন চিন্তা-ভাবনা করেছিল। কিন্তু নির্বাচনের একদিন আগে সমস্ত প্রস্তুতি যখন শেষ, সে মুহূর্তে সেটি (স্থগিত) করতে পারেনি।

তিনি বলেন, ঢাকায় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি খুবই কম ছিল। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে জনগণ অনেক সচেতন ও আতঙ্কিতও বটে। এ কারণে শনিবার ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। এছাড়া ইভিএম ব্যবস্থায় সুষ্ঠুভাবে ভোট হয় আর একজনের ভোট যে অন্যজনে দিতে পারে না, সেটির প্রমাণ হচ্ছে কালকে, অত্যন্ত কম সংখ্যক ভোট কাস্ট হয়েছে। যারা ভোট কেন্দ্রে গেছেন তারাই ভোট দিতে পেরেছেন। সেটি আবারও ভোটের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা দেখেছি নির্বাচন শেষ হওয়ার আগে এবং ফলাফল ঘোষণার আগেই বিএনপির প্রার্থী ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি শুরু থেকেই অভিযোগ করেছিলেন। চিরাচরিত নিয়ম অনুয়ায়ী ও প্রতি নির্বাচনের সময় যেটি তারা করেন। তারা সব সময় যেটি করে আসছে সেটির ধারাবাহিকতায় সেটা করেছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বলেন, প্লেগের পর পৃথিবীতে এতো বড় দুর্যোগ আগে দেখিনি বা আসেনি। প্লেগে কয়েক কোটি মানুষ মারা গিয়েছিল। করোনায় ইতোমধ্যে বিশ্বে তিন লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এবং কয়েক হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। এটি একটি বৈশ্বিক দুর্যোগ। সমস্ত বিশ্বে এই দুর্যোগ ছড়িয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, আমরা যে যার অবস্থান থেকে চেষ্টা করছি এই দুর্যোগ নিয়ে সমস্ত দেশ জাতি ও রাষ্ট্রকে রক্ষা করব। তার প্রেক্ষিতে তথ্য মন্ত্রণালয় কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তথ্য মন্ত্রণালয় দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে দেশের মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের দিয়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন তৈরি করে বিটিভির মাধ্যমে প্রচার করছে। অন্যান্য টিভিতেও পাঠানো হয়েছে। সেখানেও প্রচার করা হচ্ছে।

করোনাভাইরাস থেকে রক্ষায় সংবাদকর্মীদের জন্য কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে কি না জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করে কিছু নিরাপত্তামূলক দ্রব্য দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

করোনা আতঙ্কের মাঝে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে ৩২ জন সংবাদকর্মীকে ছাঁটাই করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এমন সময়ে চাকরিচ্যুত করার বিষয়টি দুঃখজনক, অনভিপ্রেত। আমি আজকেই জানলাম। আরো বিস্তারিত জেনে কী করা যায় সেটি করা হবে। আমার পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সূত্র : বাসস

Exit mobile version