ঢাকার ধানমণ্ডির বাসিন্দা লায়লা রুমিনা আক্তারের বাড়িতে প্রতিবছর ঈদের দুপুরে আত্মীয়স্বজনের বেড়াতে আসা নিয়মিত একটা ব্যাপার। সেখানেই ঈদের আগের দিন থেকে তিনি রান্নাবান্না শুরু করেন।
কিন্তু এই বছর তার বাড়িতে ঈদ এসেছে অন্যভাবে।
”মনে হচ্ছে না কোন ঈদ কাটাচ্ছি। আত্মীয়স্বজন কেউ আসেনি, আমাদেরও কারো বাসায় যাওয়া হবে না। গত বছর এই দিনে বাসা ভর্তি মেহমান ছিল। কিন্তু এবার মনে হচ্ছে যেন অন্যসব দিনের মতোই আজকের দিনটা। এতো কিছু রান্না করেছি, কিন্তু খাওয়ার লোক নেই।”
তিনি বলছেন, ঈদে যদি কেউ আসে, সেই ভেবে বরাবরের মতোই অনেক কিছু রান্না করেছেন। কিন্তু ঈদের দিনে দুপুরেও কেউ আসেনি, রাতেও আসার সম্ভাবনা নেই।
আরো অনেক পরিবারের ঈদ উদযাপনের গল্পটা একই রকম। বাংলাদেশে এই বছর আলাদা ধরনের এক ঈদুল ফিতর কাটাচ্ছেন দেশটির বাসিন্দারা।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশটিতে দুইমাস ধরে অঘোষিত লকডাউন চলছে। ঘরে বসে সবাইকে ঈদ উদযাপনের পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৩৫,৫৮৫ জন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে এই রোগে ৫০১ জন মারা গেলেন।
রবিবার সন্ধ্যায়, ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে ঘরে থেকে ঈদ উদযাপনের আহ্বান জানান। সাথে সব ধরণের স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “এ বছর আমরা সশরীরে পরস্পরের সাথে মিলিত হতে বা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে না পারলেও টেলিফোন বা ভার্চুয়াল মাধ্যমে আত্মীয়স্বজনের খোঁজখবর নেব”।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাবিহা পারভীন বলছেন, “সাধারণত বাচ্চারা তাদের বাবার সাথে নামাজে যায় ও ফিরে আসলে একসাথে খাই। রান্না করি। অতিথিরা আসে বা আমরা বেড়াতে যাই। কিন্তু এবার এর কোনটাই হয়নি। ওরা ঘরে নামাজ পড়েছে। আমরা নিজেরা নিজেরাই ঈদ করছি”।