- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২৩:৫৪, আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৮:৫৫
এশিয়া কাপের ১৫তম আসরের ফাইনাল লড়াইয়ে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। টসে হেরে শুরুতে ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কা। নির্ধারিত ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১৭০ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ধারাবাহিক উইকেট হারায় পাকিস্তান। রানের মন্থর গতিতে শেষ পর্যন্ত ১৪৭ রান করে বাবরের দল। ২৩ রানে জয় পায় শ্রীলঙ্কা। আর তাতে এশিয়ার ১৫তম আসরের শিরোপা শ্রীলঙ্কার ঘরে।
রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের এবারের আসরের ফাইনাল শুরু হয়। টসে জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাবর আজম।
শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে চ্যালেঞ্জিং স্কোর পায় দলটি। ১৭০ রানের স্কোরে ফিফটি পায় ভানুকা রাজাপাকসে।
১৭১ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতে উইকেট হারায় পাকিস্তান। এশিয়া কাপের ধারাবাহিক ব্যর্থতা থেকে বের হতে পারেননি বাবর আজম। আসরের শেষ ম্যাচে ব্যক্তিগত ৫ রানে ফেরেন পাকিস্তান ক্যাপ্টেন। তার পরের বলে আউট ফখর জামান।
চতুর্থ ওভারে পরপর ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে পাকিস্তান। চাপ সামলে ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় ইফতেখার ও রিজওয়ান। তাদের জুটি ভাঙে দলীয় ৯৩ রানে। ২২ রান ২ উইকেট থাকা দলের তখন ৩ উইকেটে ৯৩ রান।
১৪তম ওভারে প্রমোদ মাদুশানের বলে ফেরেন ইফতেখার। তখন জয়ের জন্য প্রয়োজন ৭৮ রান। পাকিস্তানের তখনও ৭ উইকেট রয়েছে। এমন সমীকরণে ২৭ রান স্কোর বোর্ডে যোগ করতেই হারায় ৬ উইকেট।
দলীয় ১০২, ১১০, ১১১, ১১২, ১২০, ১২৫ রানে যথাক্রমে মোহাম্মদ নওয়াজ (৬), মোহাম্মদ রিজওয়ান (৫৫), আসিফ আলী (০), খুশদিল শাহ (২), শাদাব খান (৮), নাসিম শাহকে (৪) হারায় পাকিস্তান। আর তাতে ম্যাচ ২৩ রানের জয় পায় শ্রীলঙ্কা।
শেষ উইকেটে ২২ রান যোগ করে হারিস রউফ ও মোহাম্মদ হাসনাইন। তাতে শুধু হারের ব্যবধান কমলো।
এ দিন টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে উইকেট হারায় লঙ্কানবাহিনী। নাসিম শাহের করা বলে শূন্য রানে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন উইকেট রক্ষক ব্যাটার কুশল মেন্ডিস। ওই ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৪ রান।
দ্বিতীয় ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১২ রান সংগ্রহ করে লঙ্কান ব্যাটাররা। তৃতীয় ওভার শেষে চতুর্থ ওভারে ফের আঘাত শ্রীলঙ্কান শিবিরে। হারিস রউফের করা বলে অধিনায়ক বাবরের তালু বন্দি হন পাথুম নিশাঙ্কা।
দলীয় ২৩ রানে ২ উইকেট হারায় দলটি। এক ওভার শেষে ফের আঘাত হারিস রউফের। ষষ্ঠ ওভারে বল করতে গিয়ে প্রথম বলে দানুশকা গুনাথিলাকাকে বোল্ড করেন এই বোলার। আর তাতে পাওয়ার প্লের ৬ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৪২ রান।
অষ্টম ওভারে ফাইনাল ম্যাচে প্রথমবার বল হাতে তুলে নেন ইফতিখার আহমেদ। ওভারের চতুর্থ বলে ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে ফেরান তিনি। ব্যক্তিগত ২৮ রান করে ইফতিখারের তালু বন্দি হন সিলভা।
নবম ওভারে দ্বিতীয়বারের মতো শাদাব খানের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক বাবর। অধিনায়কের আস্থা রাখলেন শাদাব। পঞ্চম বলে শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকাকে সাজঘরে ফেরান তিনি। দলীয় ৫৮ রানে ফেরেন শ্রীলঙ্কান ক্যাপ্টেন।
ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গা ও ভানুকা রাজাপাকসে জুটিতে ম্যাচে ফেরে শ্রীলঙ্কা। ৫৮ রানে ৫ উইকেট হারানো দলটি ষষ্ঠ উইকেট হারায় ১১৬ রানে। ২১ বলে শ্রীলঙ্কার হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ১৭২ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেন তিনি। হারিস রউফের করা ১৫তম ওভারে তালু বন্দি হন হাসারাঙ্গা।
এদিন ফিফটির দেখা পান ভানুকা রাজাপাকসে। দলকে খাদের কিনারা থেকে একাই তুলে নিলেন নিরাপদ স্থানে। ৫ নাম্বারে ব্যাট করতে নেমে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকেন মাঠে। ১৫৭ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট চালিয়ে সংগ্রহ করেন ৭১ রান।
চামিকা করুণারত্নেকে সাথে নিয়ে শেষ ৪ ওভারে সংগ্রহ করেন ৫০ রান। আর তাতেই মূলত জয়ের প্রান্তে পৌঁছায় দলটি।
পাকিস্তানের হয়ে হারিস রউফ নির্ধারিত ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে তুলে নেন ৩ উইকেট। নাসিম শাহ, শাদাব খান, ইফতিখার আহমেদ নেন ১টি করে উইকেট।
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার হয়ে প্রমোদ মাদুশান তুলে নেন ৪ উইকেট। ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গা নেন ৩টি। চামিকা করুণারত্নে ২টি আর মহেশ থেকশান নেন ১টি উইকেট।
শ্রীলঙ্কা : পাথুম নিশাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস (উইকেট রক্ষক), দানুশকা গুনাথিলাকা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, ভানুকা রাজাপাকসে, দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গা, চামিকা করুণারত্নে, প্রমোদ মাদুশান, মহেশ থেকশান, দিলশান মদুশান।
পাকিস্তান : মোহাম্মদ রিজওয়ান, বাবর আজম (অধিনায়ক), ফখর জামান, ইফতিখার আহমেদ, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ নওয়াজ, শাদাব খান, আসিফ আলী, হারিস রউফ, নাসিম শাহ, মোহাম্মদ হাসনাইন।