Site icon The Bangladesh Chronicle

এবার তবে বিশ্বকাপে ভারতকে হারানোর গল্প!

এবার তবে বিশ্বকাপে ভারতকে হারানোর গল্প! – ছবি : ইএসপিএনক্রিকইনফো

সুপার এইটে প্রত্যাবর্তনটা সুখকর হয়নি বাংলাদেশের। ১৭ বছর ফিরে প্রথম ম্যাচেই সঙ্গী বড় পরাজয়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কোনো লড়াই করতে পারেনি টাইগাররা। তবে সেই ম্যাচের ভালো মন্দ নিয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই, এক দিনের ব্যবধানে আবারো মাঠে নামতে হচ্ছে সাকিব-শান্তদের।

অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের ক্ষত এখনো দগদগে। কিন্তু সেই ক্ষত শুকানোর আগেই মাঠে ফিরতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এবার প্রতিপক্ষ ক্রিকেটের আরেক পরাশক্তি ভারত৷ এন্টিগাতেই মুখোমুখি হবে এই দুই দল। আজ শনিবার খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়।

সুপার এইটে প্রথম ম্যাচে হেরে খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। ফলে ভারতের বিপক্ষে এই ম্যাচটা ডু অর ডাই, সাকিব-শান্তদের বাঁচা মরার লড়াই। পা ফসকালেই শেষ সেমিফাইনাল স্বপ্ন, এক ম্যাচ হাতে রেখেই নিশ্চিত হবে বিদায়। জিতে গেলে থাকবে সম্ভাবনা, সুযোগ থাকবে ইতিহাস গড়ার।

বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ হেরে গেলেও প্রতিপক্ষ ভারত সুপার এইট শুরু করেছে দুর্দান্ত জয় দিয়ে। আফগানিস্তানকে ৪৭ রানে হারিয়ে এই পর্ব শুরু করেন রোহিত-কোহলিরা। এবার বাংলাদেশকে হারিয়ে এক পা দিয়ে রাখতে চান সেমিফাইনালে। সেভাবেই প্রস্তুত তারা।

শক্তির পার্থক্য, র‌্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান বা ইতিহাস-ঐতিহ্যকে বিবেচনায় নিলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবধান পাহাড়সম। তবে, গত কয়েক বছরের মুখোমুখি লড়াইয়ে দৃষ্টি ফেরালে অন্যরকম এক চিত্রই ফুটে ওঠে। অসম দুই দলের লড়াই হলেও কমতি ছিল না রোমাঞ্চে

শক্তির পার্থক্য থাকলেও দুই দেশের লড়াই একপেশে বলার তো সুযোগ নেই, সাধারণ একটা ম্যাচেও উত্তেজনার পারদ বাড়ে। আর এবার তো লড়াই বিশ্বকাপে, তাও আবার সেমিফাইনালে উঠার মিশনে। ফলে একটু বেশিই যে উত্তাপ ছড়াবে, তা বলাই যায় নিশ্চিতভাবে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আর ভারত; দুটো শব্দ একসাথে করলে অজান্তেই চোখে ভেসে উঠে ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। মনের মাঝে ভর করে এক সমুদ্দুর দহন। সে এক তিক্ত স্মৃতি, হতাশার গল্প। হাত ছোঁয়া দুরত্বে থেকেও সেবার লেখা হয়নি ভারত বধ মহাকাব্য।

নিজেদের বোকামির কারণে জেতা ম্যাচটা হেরে বসে বাংলাদেশ। জয় যখন সময়ের ব্যাপার, ৩ বলে মোটে ২ রান দরকার; তখন তালগোল পাকিয়ে বসেন মুশফিক- মাহমুদউল্লাহ। পরপর দুই বলে ফেরেন দু’জনে। শেষ বলে মোস্তাফিজ আটকে যান রান আউটের ফাঁদে! ফলে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচটা জিতে নেয় ভারত।

২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও সুযোগ এসেছিলো। তবে
অ্যাডিলেটের সেই ম্যাচটাও শেষ পর্যন্ত ৫ রানে জিতে যায় ভারত। ভেজা মাঠে খেলা, বৃষ্টি আইন জলঘোলা, বিরাট কোহলির ফেক ফিল্ডিং, আম্পায়ারদের দ্বিধান্বিত সিদ্ধান্তসহ একাধিক ঘটনা বিতর্কের সৃষ্টি করে।

এবারও যে সুযোগ নেই তা নয়, তবে সেই জন্যে অবিশ্বাস্যই কিছু করতে হবে বাংলাদেশকে৷ সুযোগের সবটা কাজে লাগানোর পাশাপাশি পাশে পেতে হবে ভাগ্যকেও। আর ক্রিকেট যেখানে অনিশ্চয়তার খেলা, সেখানে হতে পারে অনেক কিছুই।

যেমনটা হয়েছিল ২০০৭ বিশ্বকাপে, এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে। যেখানে বাংলাদেশ চমকে দেয় বিশ্বকে, পোর্ট অব স্পেনে ভারতের দর্প চুর্ন করে দেয় টাইগাররা। শেহবাগ, শচীন, দ্রাবিড়ের মতো তারকায় ঠাঁসা দলটাকে রীতিমতো উড়িয়ে দেয় মাশরাফীরা।

সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে মাশরাফীর বোলিং তোপে মাত্র ১৯১ রানে গুটিয়ে যায় ভারতে। এরপর সাকিব-তামিম আর মুশফিকের দূর্দান্ত তিন অর্ধশতকে ভর করে পাঁচ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। যে হার সুপার এইট থেকে ছিটকে দেয় ভারতকে।

ভারত ইতিহাসের সেরা দলকে যদি হারানো যায়, তবে এখন কেন নয়! কঠিণ বটে, অসম্ভব তো নয়৷ তাছাড়া বাংলাদেশের তো হারানোর কিছু নেই, আছে কেবল পাওয়ার৷ ভারতকে ‘অঘটন’ উপহার দিতে পারলে চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে!

Exit mobile version