Site icon The Bangladesh Chronicle

এবার জাপার ইফতারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কেউ যাননি

বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ে একটি হোটেলে রাজনীতিক ও কূটনীতিকদের সম্মানে জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের এক ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন
বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ে একটি হোটেলে রাজনীতিক ও কূটনীতিকদের সম্মানে জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের এক ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেনছবি: সংগৃহীত

জাতীয় পার্টির (জাপা) ইফতার অনুষ্ঠানে এবার আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও ইসলামি দলগুলোর কেউ যাননি। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউর হোটেল শেরাটনে রাজনীতিক ও কূটনীতিকদের সম্মানে জাপার চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের এই ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

অবশ্য জাপার এবারের ইফতারে সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দৌজা চৌধুরীর দল বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার ও নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ অংশ নেন।

এ ছাড়া ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার প্রায় ২০ জন কূটনীতিক অংশ নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকা দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফাভ, কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোসটার, ডেপুটি হেড অব ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মিশন বার্নড স্প্যানিয়ার, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক, নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি ডানা এল ওল্ডস, ডেপুটি চিফ অব পার্টি লেসলি রিচার্ডস, অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নারদিয়া সিম্পসন, সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স শীলা পিলাই, সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের রাজনৈতিক কাউন্সেলর ইরোজ রাব্বানী, যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক কর্মকর্তা আর্তুরো হাইন্স ছাড়াও নেদারল্যান্ডস, থাইল্যান্ড, রাশিয়া, আলজেরিয়ার দূতাবাসের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইফতারের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জি এম কাদের বিশ্ব আজ এক ভয়াবহ সংকট অতিক্রম করছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, হিংসা, বিদ্বেষ, অসহযোগিতা, অসহনশীলতা এবং অমানবিকতায় পূর্ণ এই বিশ্বব্যবস্থায় মানুষ হত্যার মতো জঘন্য অপরাধ দিন দিন বেড়েই চলেছে। জেনেভা ঘোষণা অনুযায়ী, সশস্ত্র সংঘাত এবং সহিংসতার কারণে প্রতিবছর ৫ লাখ ২৬ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। এ দ্বন্দ্ব–সংঘাতে শুধু মানুষই মারা যাচ্ছে না, লাখ লাখ মানুষ বছরের পর বছর নিজ ঘরবাড়ি ছেড়ে দেশান্তরিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

জি এম কাদের বলেন, গাজা ভূখণ্ডে একটি মর্মস্পর্শী দুঃখজনক ঘটনা ঘটে চলেছে। দীর্ঘ বিরোধের জের ধরে রক্তক্ষয়ী সহিংসতায় অসংখ্য নিরপরাধ মানুষ হতাহতের শিকার হচ্ছে। তাদের অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশা এবং অনিশ্চিত জীবনযাপনের হৃদয়বিদারক ঘটনার ছবি ও বর্ণনা প্রতিদিন প্রকাশিত হচ্ছে। মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে ব্যাপক জাতিগত সহিংসতার ফলে আগস্ট ২০১৭ সালে বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশে আনুমানিক ৭ লাখ ৪২ হাজারের বেশি লোক আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। তাদের জীবন অসম্মানজনক ও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। জরুরি ভিত্তিতে তিনি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সব সংকটের সমাধান প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন।

ইফতারে জাপার জ্যেষ্ঠ কো–চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক (চুন্নু), কো–চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, সালমা ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, গোলাম কিবরিয়া, ফখরুল ইমাম, হাজি সাইফুদ্দিন আহমেদ, এ টি ইউ তাজ রহমান, সৈয়দ আবদুল মান্নান, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, শামীম হায়দার পাটোয়ারি, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মিজানুর রহমান, নাজমা আক্তার, সৈয়দ দিদার বখত, লিয়াকত হোসেনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত বছর জাপার ইফাতারে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ও দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আবদুল মঈন খান, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণফোরামের একাংশের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টুসহ বিভিন্ন ইসলামি দলের নেতারা অংশ নিয়েছিলেন।

Prothom alo

Exit mobile version